ফিরে আসো তুমি
.
লেখক: Faisal Ahmed (স্বপ্নপুরির রাজকুমার)
.
সত্য ঘটনা আবলম্বনে।
.
'''আমি নীলা (ছদ্মনাম)। আমি এবার এইচ. এস. সি দিলাম। আজ আমি আপনাদের আমার জীবনের গল্প বলবো। আর বলবো ভালবাসার মানুষটির গল্প। আমি আমার ভুলের জন্য মানুষটাকে হারাতে বসেছি। মানুষটার নাম নীল। আমরা একই সংঙ্গে লেখা পড়া করছি। যাই হোক আসল ঘটনায় আসা যাক।
.
আমার ছোট বেলা থেকে প্রেমটাকে খুব বিরক্ত লাগতো। হেট করতাম বলাই চলে। আমি যখন ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে পড়তাম তখন একছেলে আমাকে প্রথম প্রোপজ করে। আমি খুব ভয় পেয়ে ছিলাম। আমি খুব ভালো ছাত্রি ছিলাম। বরাবরি সেকেন্ড হতাম। ৭ থেকে উঠার সময় আমি ১র্স্ট হই। খুব খুশি হয়েছিলাম সেবার। কারণ আমি কখনো এর আগে ফার্স্ট হইনি। আমি উপশহরে থাকতাম। আমার মামার কথায় আমি শহরের গালর্স স্কুলে ভর্তি পরিক্ষা দেই। চান্সও পেয়ে যাই। ৮০ জনের মদ্ধে ৭ম হই। পরে স্কুলে ভর্তি হয়ে যাই। স্কুলের কারনে আমাদের শহরে বাসা ভাড়া নিতে হয়। আমাদের বাসাটা ছিলো স্কুলের পিছনে। ভালোই দিন যাচ্ছিলো। তবে মাঝে মাঝে পুরোনো ফ্রেন্ডদের জন্য মন খারাপ হতো।
.
সময়টা ২০১২ সাল। আমি তখন ৮ম শ্রেনীতে পড়ি।
আমাদের বাসার পাশে ছিলো আরেটা বাড়ি। আমরা যাদের বাসায় ভাড়া থাকতাম তাদের রিলেটিভদের বাসা। সেই বাসার জানালা আর আমার ঘরের জানালা পাশাপাশি ছিলো। আর আমার খালাতো ভাইও আমাদের সাথে থাকতো। তো পাশের বাসায় ওই রুমে একটা ছেলে দেখলাম। এর আগে ওই ছেলেকে দেখিনি। আমিও গুরত্ব দেইনি। কারণ তখন ছেলেদের প্রতি আমার তেমন ইন্টারেস্ট ছিলো না। প্রায় দেখতাম ছেলেটা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি কেয়ার করতাম না। আবার মাঝে মাঝে অস্বস্থি লাগতো। মাঝে মাঝে চোখচোখি হয়ে যেতো।
.
একদিন জানতে পারলাম আমার খালাতো ভাইয়ের সাথে ওর ফ্রেন্ডশিপ হয়েছে। তার কাছ থেকে জানতে পারলাম ওইটা ওই ছেলেটার নানার বাড়ি আর ও এবার এস. এস. সি দিয়েছে। কিছু দিনের জন্য নানার বাড়িতে বেড়াতে এসেছে। আরও জানতে পারি ছেলেটি নাকি আমাকে ভালোবেসে ফেলেছে। এর কিছুদিন পর ছেলেটি বাড়ি চলে যায়। আবার মে মাসে বেড়াতে আসে। পরের দিন আমাকে প্রোপজ করে। আমার মাথায় তখন কি চেপেছিলো বুঝি নি। কিছু না ভেবেই রাজি হয়ে যাই। সেদিন ও আমার হাত ধরে। যেগুলো আমার পছন্দ ছিলো না। এভাবে আমাদের রিলেশন ২ মাস পার হয়। তখন রমজানে ওর আর আমার পরিবার সব জানতে পেরে যায়। সেদিন আমার মা অনেক মেরেছিলো আর কেঁদেছিলো। ওদের পরিবার আমাদের অনেক কথা শোনায়। সেই রাগে ওর সাথে সব রকম কন্ট্রাক্ট বন্ধ করে দেই। ও আমার সাথে কন্ট্রাক্ট করার চেষ্টা করেছিলো। বাট আমি করি নি। এই ভাবে কোনো রকম জে. এস. সি দিলাম। অংকে এ+ মিস করলাম। দেখতে দেখতে এস. এস. সিও এগিয়ে আসলো।
.
নির্বাচনী পরিক্ষার পর আমার ফেসবুক আইডি খোলার খুব শখ হলো। খুলতে পারতাম না। তবুও ট্রাই করলাম। অবশেষে কোনো রকম একটা আইডি খুলতে পারলাম। নাম দিলাম 'নীল নয়না'। কিছু বুঝতাম না। তাই যে রিকুয়েস্ট দিতো তার তাই এক্সেপ্ট করতাম। অনেক ছেলের সাথে চ্যাট করতাম। একসময় নিজের অজান্তে ভালো থেকে খারাপ মেয়েতে পরিনত হতে থাকি। না না তেমন খারাপ না। অনেক ছেলের সাথে চ্যাট করতাম না। সারাদিন এফবি নিয়ে পড়ে থাকতাম। একসময় ফেসবুক রিলেশন স্টার্ট করি। কিন্তু বেশি দিন টিকতো না। তখন হটাৎ মনে হলো আমি এগুলো কি করছি। আমি তো অনেক ভালো ছিলাম। তাই ফেসবুক ব্যবহার কমিয়ে দিয়ে পড়াশোনায় মন দিতাম। ফেসবুকে অনেক ছেলে আমার জন্য পাগল ছিলো। কারণ ফেসবুকে আমি একবার আমার ছবি আপলোড করেছিলাম।
.
আস্তে আস্তে পরিক্ষা এগিয়ে এলো। তখনো ছেলেদের প্রতি ইন্টারেস্ট ছিলাম না। ইংলিশ প্রাইভেট থেকে বিদায়ের সময় একছেলেকে দেখে আমার চোখ আটকে যায়। কেনো জানি ভালো লেগে যায়। কখনো আমার আগে এমন হয়নি। অনেকক্ষন ওর দিকে তাকিয়ে ছিলাম। সে আমার খালাতো ভাইয়ের বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলো। বাড়িতে এসে খুব খারাপ লাগলো। একবার যদি ছেলেটার সঙ্গে কথা বলতে পারতাম তাহলে মনে হয় খুব ভালো লাগতো। বিকালে বসে এফবি ইউজ করছিলাম। হটাৎ দেখি সেই ছেলের রিকুয়েস্ট। ছেলেটার নাম ছিলো নীল। মনে মনে খুশি হয়েছিলাম। তাকে এক্সেপ্ট কর নিই। এর পর থেকে তার সাথে কথা হতো। এর মধ্যে আমার বেস কয়েকটা ভালো ফ্রেন্ড হয়। তাদের নিয়ে এফবিতে চ্যাট গ্রুপ খুলি। তাদের সাথে খুব মজা হতো। তাছাড়া ওই ছেলের সাথে কথা বলতাম। আস্তে আস্তে আমারা ভালো ফ্রেন্ড থেকে বেস্ট ফ্রেন্ড হয়ে যাই। সারাদিন কথা বলতাম। ওর সাথে কথা বলতে আমার খুব ভালো লাগতো। ও আমার অনেক কেয়ার নিতো। একদিন হটাৎ ও আমাকে প্রোপজ করে বসে। আমি পরের দিন তাকে এক্সেপ্ট করে নিই। ভালোই চলছিলো আমাদের প্রেম। ও আমায় খুব ভালোবাসতো। আমিও বাসতাম কিন্তু কম। কারণ ভালোবাসা আমার দ্বারা হয়না। তখন আমার আবেগ কাজ করতো। এস. এস. সি পরিক্ষার পর ফিজিক্স প্র্যাক্টিক্যাল পরিক্ষার দিন আমরা ১ম মিট করি। আমাদের স্কুল পাশাপাশি ছিলো। তাই আমাদের সীট ওদের স্কুলে আর ওর সীট আমার স্কুলে পড়েছিলো। আমরা ওর স্কুলেই দেখা করেছিলাম। ৫ মিনিট কথা বলেছিলাম। তারপর পরিক্ষা শেষ হয়ে গেলে ও ৪০ দিনের জন্য চিল্লাতে যায়। ওর সাথে তেমন কথা হতো না।
.
মাঝে মাঝে ফেসবুকের একটা ছেলের সাথে কথা বলতাম। ছেলেটা আমাকে পছন্দ করতো। আমি রাজি হইনা। কেনো হইনা ওকে বলিনি। কারণ আমাদের রিলেশন কাওকে জানাতে চাইনি। ওই ফ্রেন্ড আমাকে প্রায় প্রোপজ করতো। আমি না করতাম। তবে তার সাথে চ্যাট করা বন্ধ করিনি। অনেক রাত পর্যন্ত আমরা কথা বলতাম। ৪০ দিন পর নীল চিল্লা থেকে ফিরে আসে। এসে তখন শুনে যে আমি রাত জেগে ছেলেটার সাথে চ্যাট করতাম। তখন থেকে ও আমাকে হারানোর ভয় করতো। তাই ও সেই ছেলেটাকে রিলেশনের কথা বলে দেয়।
.
সব শুনে ছেলেট আমাকে ব্লক করে দেয়। তখন আমার খুব খারাপ লাগতো। কারন তখন আমার মধ্যে আবেগ কাজ করতো। তখনো ভালোবাসা কি বুঝে উঠতে পারিনি। তাই কোনো কারণ ছাড়াই তার সাথে ব্রেক আপ করে ওই ছেলেটার সাথে রিলেশন স্টার্ট করি। ওইযে বললাম আবেগ কাজ করছিলো। ও আমাকে ওর সাথে রিলেশন করতে মানা করতো। বলতো ও তোমাকে ভালোবাসে না। কিন্তু আমি শুনি নি। ১ মাস পরে আমি আমার ভুলটা বুঝতে পারি। তখন তাকে খুব মিস করতে শুরু করি। বাট ফিরতে পারতাম না খুব ভয় হতো। আর যার সাথে আমি রিলেশন করি সে অনেক মেয়ের সাথে কথা বলতো। আমি সুখি ছিলাম না। নীল অনেক কেঁদে ছিলো আমার জন্য। কাঁদতে কাঁদতে পাথর হয়ে গেছিলো। আমি আর না পেরে ওই ছেলের সাথে রিলেশিন ব্রেক আপ করে দেই। কয়েকদিন পর আমি ফয়সালের সাথে আবার আগের রিলেশন স্টার্ট করতে চাই। তাকে বলি সে আমাকে মেনে নিবে কিনা। সে এক কথায় রাজি হয়ে যায়। খুব ভালোবাসতো আমায়। আমিও ভালোবাসা স্টার্ট করেছি। এখন ভালোবাসা কি বুঝেছি। আমি আমার এলাকায় পড়তাম। আর ও রাজশাহী নিউ ডিগ্রিতে।
.
ও মাঝে মাঝে আমার সাথে মিট করতে আসতো। আমরা পার্ক এ অনেক সময় কাটাতাম। হটাৎ ও কেনো জানি চেঞ্জ হয়ে যেতে শুরু করে। একবার ও আমার সাথে ৭ দিন কথা বলেনি। এই সময় আমার যে কতো কষ্ট হচ্ছিলো বলে বুঝাতে পারবো না। তখন আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে আমি তাকে কতটা কষ্ট দিয়েছিলাম। আমি কখনো কারো জন্য কাঁদি নি। কিন্তু ওর জন্য খুব কেঁদে ছিলাম। ৭ দিন পর ও আমার সাথে কথা বলে। মাঝে মাঝে ও কেমন জেনো চেঞ্জ হয়ে যায়। আমার সাথে খারাপ বিহেভ করে তবুও আমি তাকে ছেড়ে যাইনা। কারণ ও বলেছিলো আমি তোমাকে যতো বকি, যতো ছেড়ে যেতে বলি তবুও আমি তোমাকে ভালোবাসি। ওকে আমি এখন খুব ভালোবাসি। সে আমাকে বলেছে তাকে নাকি আমি চেঞ্জ করেছি। আমিও কেঁদে কেঁদে তার কাছে ক্ষমা চাই। মাঝে মাঝে আমার কান্না ও সহ্য করতে পারে না। আবার মাঝে মাঝে ও বলে এসব নেকামি কান্না কাঁদবা না।
.
আমি খুব অসহায়। পরিবারে আমার তেমন গুরত্ব নেই। আমার ভাই আমাকে সহ্য করতে পারে নানা। বাড়ি থেকে বের করে দিতে চায়। আমার মাও কেমন জেনো করে। বাবা আমাকে খুব ভালোবাসে। কিন্তু তিনি জব করার কারণ বাহিরে থাকেন। আমি তাকে কাছে পাইনা। একমাত্র ওকে আকরে ধরে আমার বেঁচে থাকা। আর ও আমার সাথে এমন খারাপ বিহেভ করে। আমাকে নাকি ওর পেইন লাগে। আবার মাঝে মাঝে এমন ভালোবাসে যে বলে বোঝানো যাবে না। আবার মাঝে মাঝে অনেক কষ্ট দেয়। যদি বলি এতো কষ্ট দেও কেনো। ও বলে কষ্ট সহ্য না করতে পারলে চলে যা। আমিও ট্রাই করি ওকে ভুলে যাওয়ার। কিন্তু পারি না। আমি আর কোনো ছেলের সাথে চ্যাট করিনা। ওকে ছাড়া আর কাউকে ভালোও লাগে না। আসলে আমারই দোস আমার কারণেই ও এমন হয়েছে।
.
আমাকে আর ভালো লাগে না ওর। আমায় ছেড়ে যেতে চায় ও। আমি এইচ. এস. সি দিলাম। অনেক কষ্টে ওকে এডমিশন পর্যন্ত থাকতে রাজি করিয়েছি। ও আমার সাথে থাকলে আমি ভালো থাকি। সামনে আমার এডমিশন পরিক্ষা। এখন ও আমায় ছেড়ে গেলে আমি ভেঙ্গে পরবো। পড়াশোনা হবে না, ওকে ছাড়া আমি মরেই যাবো। আমি এখন খুব ব্যাথার মধ্যে থাকি। না পারছি ওকে ভুলতে না পারছি সাথে থাকতে। যখন মনে হয় কয়েক মাস পর ও আর আমার সাথে থাকবে না তখন মনে হয় আমার কলিজাটা ছিঁলে যায়। আমি রাতে ঘুমাতে পারি না। প্রতি রাত আমি ঘুমাতে পারিনা। প্রতি রাতে আমি কাঁদি।'''
.
এটা ছিলো আমার লিস্টের এক আপুর কাহিনী। আমি দোয়া করি আপু জেনো আবার তার ভালোবাসাকে আগের মতো ফিরে পায়। আর ভাইয়া আপনি যদি আমার পোস্ট পড়ে থাকেন তাহলে আপনাকে একটা অনুরোধ করবো আপনি আপবার আপুর জীবনে ফিরে আসুন। কারণ আপুর সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পর বুঝেছি আপু আপনাকে কতটা ভালোবাসেন। এটা আপনার কাছে আমার একটা অনুরোধ। আপনি আপুকে ক্ষমা করে দিবেন।
.
এটা সম্পুর্ন সত্যি ঘটনা। এখানে কোনো কাল্পনিকতার ছোয়া নেই। ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন
লেখক: Faisal Ahmed (স্বপ্নপুরির রাজকুমার)
.
সত্য ঘটনা আবলম্বনে।
.
'''আমি নীলা (ছদ্মনাম)। আমি এবার এইচ. এস. সি দিলাম। আজ আমি আপনাদের আমার জীবনের গল্প বলবো। আর বলবো ভালবাসার মানুষটির গল্প। আমি আমার ভুলের জন্য মানুষটাকে হারাতে বসেছি। মানুষটার নাম নীল। আমরা একই সংঙ্গে লেখা পড়া করছি। যাই হোক আসল ঘটনায় আসা যাক।
.
আমার ছোট বেলা থেকে প্রেমটাকে খুব বিরক্ত লাগতো। হেট করতাম বলাই চলে। আমি যখন ৬ষ্ঠ শ্রেনীতে পড়তাম তখন একছেলে আমাকে প্রথম প্রোপজ করে। আমি খুব ভয় পেয়ে ছিলাম। আমি খুব ভালো ছাত্রি ছিলাম। বরাবরি সেকেন্ড হতাম। ৭ থেকে উঠার সময় আমি ১র্স্ট হই। খুব খুশি হয়েছিলাম সেবার। কারণ আমি কখনো এর আগে ফার্স্ট হইনি। আমি উপশহরে থাকতাম। আমার মামার কথায় আমি শহরের গালর্স স্কুলে ভর্তি পরিক্ষা দেই। চান্সও পেয়ে যাই। ৮০ জনের মদ্ধে ৭ম হই। পরে স্কুলে ভর্তি হয়ে যাই। স্কুলের কারনে আমাদের শহরে বাসা ভাড়া নিতে হয়। আমাদের বাসাটা ছিলো স্কুলের পিছনে। ভালোই দিন যাচ্ছিলো। তবে মাঝে মাঝে পুরোনো ফ্রেন্ডদের জন্য মন খারাপ হতো।
.
সময়টা ২০১২ সাল। আমি তখন ৮ম শ্রেনীতে পড়ি।
আমাদের বাসার পাশে ছিলো আরেটা বাড়ি। আমরা যাদের বাসায় ভাড়া থাকতাম তাদের রিলেটিভদের বাসা। সেই বাসার জানালা আর আমার ঘরের জানালা পাশাপাশি ছিলো। আর আমার খালাতো ভাইও আমাদের সাথে থাকতো। তো পাশের বাসায় ওই রুমে একটা ছেলে দেখলাম। এর আগে ওই ছেলেকে দেখিনি। আমিও গুরত্ব দেইনি। কারণ তখন ছেলেদের প্রতি আমার তেমন ইন্টারেস্ট ছিলো না। প্রায় দেখতাম ছেলেটা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি কেয়ার করতাম না। আবার মাঝে মাঝে অস্বস্থি লাগতো। মাঝে মাঝে চোখচোখি হয়ে যেতো।
.
একদিন জানতে পারলাম আমার খালাতো ভাইয়ের সাথে ওর ফ্রেন্ডশিপ হয়েছে। তার কাছ থেকে জানতে পারলাম ওইটা ওই ছেলেটার নানার বাড়ি আর ও এবার এস. এস. সি দিয়েছে। কিছু দিনের জন্য নানার বাড়িতে বেড়াতে এসেছে। আরও জানতে পারি ছেলেটি নাকি আমাকে ভালোবেসে ফেলেছে। এর কিছুদিন পর ছেলেটি বাড়ি চলে যায়। আবার মে মাসে বেড়াতে আসে। পরের দিন আমাকে প্রোপজ করে। আমার মাথায় তখন কি চেপেছিলো বুঝি নি। কিছু না ভেবেই রাজি হয়ে যাই। সেদিন ও আমার হাত ধরে। যেগুলো আমার পছন্দ ছিলো না। এভাবে আমাদের রিলেশন ২ মাস পার হয়। তখন রমজানে ওর আর আমার পরিবার সব জানতে পেরে যায়। সেদিন আমার মা অনেক মেরেছিলো আর কেঁদেছিলো। ওদের পরিবার আমাদের অনেক কথা শোনায়। সেই রাগে ওর সাথে সব রকম কন্ট্রাক্ট বন্ধ করে দেই। ও আমার সাথে কন্ট্রাক্ট করার চেষ্টা করেছিলো। বাট আমি করি নি। এই ভাবে কোনো রকম জে. এস. সি দিলাম। অংকে এ+ মিস করলাম। দেখতে দেখতে এস. এস. সিও এগিয়ে আসলো।
.
নির্বাচনী পরিক্ষার পর আমার ফেসবুক আইডি খোলার খুব শখ হলো। খুলতে পারতাম না। তবুও ট্রাই করলাম। অবশেষে কোনো রকম একটা আইডি খুলতে পারলাম। নাম দিলাম 'নীল নয়না'। কিছু বুঝতাম না। তাই যে রিকুয়েস্ট দিতো তার তাই এক্সেপ্ট করতাম। অনেক ছেলের সাথে চ্যাট করতাম। একসময় নিজের অজান্তে ভালো থেকে খারাপ মেয়েতে পরিনত হতে থাকি। না না তেমন খারাপ না। অনেক ছেলের সাথে চ্যাট করতাম না। সারাদিন এফবি নিয়ে পড়ে থাকতাম। একসময় ফেসবুক রিলেশন স্টার্ট করি। কিন্তু বেশি দিন টিকতো না। তখন হটাৎ মনে হলো আমি এগুলো কি করছি। আমি তো অনেক ভালো ছিলাম। তাই ফেসবুক ব্যবহার কমিয়ে দিয়ে পড়াশোনায় মন দিতাম। ফেসবুকে অনেক ছেলে আমার জন্য পাগল ছিলো। কারণ ফেসবুকে আমি একবার আমার ছবি আপলোড করেছিলাম।
.
আস্তে আস্তে পরিক্ষা এগিয়ে এলো। তখনো ছেলেদের প্রতি ইন্টারেস্ট ছিলাম না। ইংলিশ প্রাইভেট থেকে বিদায়ের সময় একছেলেকে দেখে আমার চোখ আটকে যায়। কেনো জানি ভালো লেগে যায়। কখনো আমার আগে এমন হয়নি। অনেকক্ষন ওর দিকে তাকিয়ে ছিলাম। সে আমার খালাতো ভাইয়ের বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলো। বাড়িতে এসে খুব খারাপ লাগলো। একবার যদি ছেলেটার সঙ্গে কথা বলতে পারতাম তাহলে মনে হয় খুব ভালো লাগতো। বিকালে বসে এফবি ইউজ করছিলাম। হটাৎ দেখি সেই ছেলের রিকুয়েস্ট। ছেলেটার নাম ছিলো নীল। মনে মনে খুশি হয়েছিলাম। তাকে এক্সেপ্ট কর নিই। এর পর থেকে তার সাথে কথা হতো। এর মধ্যে আমার বেস কয়েকটা ভালো ফ্রেন্ড হয়। তাদের নিয়ে এফবিতে চ্যাট গ্রুপ খুলি। তাদের সাথে খুব মজা হতো। তাছাড়া ওই ছেলের সাথে কথা বলতাম। আস্তে আস্তে আমারা ভালো ফ্রেন্ড থেকে বেস্ট ফ্রেন্ড হয়ে যাই। সারাদিন কথা বলতাম। ওর সাথে কথা বলতে আমার খুব ভালো লাগতো। ও আমার অনেক কেয়ার নিতো। একদিন হটাৎ ও আমাকে প্রোপজ করে বসে। আমি পরের দিন তাকে এক্সেপ্ট করে নিই। ভালোই চলছিলো আমাদের প্রেম। ও আমায় খুব ভালোবাসতো। আমিও বাসতাম কিন্তু কম। কারণ ভালোবাসা আমার দ্বারা হয়না। তখন আমার আবেগ কাজ করতো। এস. এস. সি পরিক্ষার পর ফিজিক্স প্র্যাক্টিক্যাল পরিক্ষার দিন আমরা ১ম মিট করি। আমাদের স্কুল পাশাপাশি ছিলো। তাই আমাদের সীট ওদের স্কুলে আর ওর সীট আমার স্কুলে পড়েছিলো। আমরা ওর স্কুলেই দেখা করেছিলাম। ৫ মিনিট কথা বলেছিলাম। তারপর পরিক্ষা শেষ হয়ে গেলে ও ৪০ দিনের জন্য চিল্লাতে যায়। ওর সাথে তেমন কথা হতো না।
.
মাঝে মাঝে ফেসবুকের একটা ছেলের সাথে কথা বলতাম। ছেলেটা আমাকে পছন্দ করতো। আমি রাজি হইনা। কেনো হইনা ওকে বলিনি। কারণ আমাদের রিলেশন কাওকে জানাতে চাইনি। ওই ফ্রেন্ড আমাকে প্রায় প্রোপজ করতো। আমি না করতাম। তবে তার সাথে চ্যাট করা বন্ধ করিনি। অনেক রাত পর্যন্ত আমরা কথা বলতাম। ৪০ দিন পর নীল চিল্লা থেকে ফিরে আসে। এসে তখন শুনে যে আমি রাত জেগে ছেলেটার সাথে চ্যাট করতাম। তখন থেকে ও আমাকে হারানোর ভয় করতো। তাই ও সেই ছেলেটাকে রিলেশনের কথা বলে দেয়।
.
সব শুনে ছেলেট আমাকে ব্লক করে দেয়। তখন আমার খুব খারাপ লাগতো। কারন তখন আমার মধ্যে আবেগ কাজ করতো। তখনো ভালোবাসা কি বুঝে উঠতে পারিনি। তাই কোনো কারণ ছাড়াই তার সাথে ব্রেক আপ করে ওই ছেলেটার সাথে রিলেশন স্টার্ট করি। ওইযে বললাম আবেগ কাজ করছিলো। ও আমাকে ওর সাথে রিলেশন করতে মানা করতো। বলতো ও তোমাকে ভালোবাসে না। কিন্তু আমি শুনি নি। ১ মাস পরে আমি আমার ভুলটা বুঝতে পারি। তখন তাকে খুব মিস করতে শুরু করি। বাট ফিরতে পারতাম না খুব ভয় হতো। আর যার সাথে আমি রিলেশন করি সে অনেক মেয়ের সাথে কথা বলতো। আমি সুখি ছিলাম না। নীল অনেক কেঁদে ছিলো আমার জন্য। কাঁদতে কাঁদতে পাথর হয়ে গেছিলো। আমি আর না পেরে ওই ছেলের সাথে রিলেশিন ব্রেক আপ করে দেই। কয়েকদিন পর আমি ফয়সালের সাথে আবার আগের রিলেশন স্টার্ট করতে চাই। তাকে বলি সে আমাকে মেনে নিবে কিনা। সে এক কথায় রাজি হয়ে যায়। খুব ভালোবাসতো আমায়। আমিও ভালোবাসা স্টার্ট করেছি। এখন ভালোবাসা কি বুঝেছি। আমি আমার এলাকায় পড়তাম। আর ও রাজশাহী নিউ ডিগ্রিতে।
.
ও মাঝে মাঝে আমার সাথে মিট করতে আসতো। আমরা পার্ক এ অনেক সময় কাটাতাম। হটাৎ ও কেনো জানি চেঞ্জ হয়ে যেতে শুরু করে। একবার ও আমার সাথে ৭ দিন কথা বলেনি। এই সময় আমার যে কতো কষ্ট হচ্ছিলো বলে বুঝাতে পারবো না। তখন আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে আমি তাকে কতটা কষ্ট দিয়েছিলাম। আমি কখনো কারো জন্য কাঁদি নি। কিন্তু ওর জন্য খুব কেঁদে ছিলাম। ৭ দিন পর ও আমার সাথে কথা বলে। মাঝে মাঝে ও কেমন জেনো চেঞ্জ হয়ে যায়। আমার সাথে খারাপ বিহেভ করে তবুও আমি তাকে ছেড়ে যাইনা। কারণ ও বলেছিলো আমি তোমাকে যতো বকি, যতো ছেড়ে যেতে বলি তবুও আমি তোমাকে ভালোবাসি। ওকে আমি এখন খুব ভালোবাসি। সে আমাকে বলেছে তাকে নাকি আমি চেঞ্জ করেছি। আমিও কেঁদে কেঁদে তার কাছে ক্ষমা চাই। মাঝে মাঝে আমার কান্না ও সহ্য করতে পারে না। আবার মাঝে মাঝে ও বলে এসব নেকামি কান্না কাঁদবা না।
.
আমি খুব অসহায়। পরিবারে আমার তেমন গুরত্ব নেই। আমার ভাই আমাকে সহ্য করতে পারে নানা। বাড়ি থেকে বের করে দিতে চায়। আমার মাও কেমন জেনো করে। বাবা আমাকে খুব ভালোবাসে। কিন্তু তিনি জব করার কারণ বাহিরে থাকেন। আমি তাকে কাছে পাইনা। একমাত্র ওকে আকরে ধরে আমার বেঁচে থাকা। আর ও আমার সাথে এমন খারাপ বিহেভ করে। আমাকে নাকি ওর পেইন লাগে। আবার মাঝে মাঝে এমন ভালোবাসে যে বলে বোঝানো যাবে না। আবার মাঝে মাঝে অনেক কষ্ট দেয়। যদি বলি এতো কষ্ট দেও কেনো। ও বলে কষ্ট সহ্য না করতে পারলে চলে যা। আমিও ট্রাই করি ওকে ভুলে যাওয়ার। কিন্তু পারি না। আমি আর কোনো ছেলের সাথে চ্যাট করিনা। ওকে ছাড়া আর কাউকে ভালোও লাগে না। আসলে আমারই দোস আমার কারণেই ও এমন হয়েছে।
.
আমাকে আর ভালো লাগে না ওর। আমায় ছেড়ে যেতে চায় ও। আমি এইচ. এস. সি দিলাম। অনেক কষ্টে ওকে এডমিশন পর্যন্ত থাকতে রাজি করিয়েছি। ও আমার সাথে থাকলে আমি ভালো থাকি। সামনে আমার এডমিশন পরিক্ষা। এখন ও আমায় ছেড়ে গেলে আমি ভেঙ্গে পরবো। পড়াশোনা হবে না, ওকে ছাড়া আমি মরেই যাবো। আমি এখন খুব ব্যাথার মধ্যে থাকি। না পারছি ওকে ভুলতে না পারছি সাথে থাকতে। যখন মনে হয় কয়েক মাস পর ও আর আমার সাথে থাকবে না তখন মনে হয় আমার কলিজাটা ছিঁলে যায়। আমি রাতে ঘুমাতে পারি না। প্রতি রাত আমি ঘুমাতে পারিনা। প্রতি রাতে আমি কাঁদি।'''
.
এটা ছিলো আমার লিস্টের এক আপুর কাহিনী। আমি দোয়া করি আপু জেনো আবার তার ভালোবাসাকে আগের মতো ফিরে পায়। আর ভাইয়া আপনি যদি আমার পোস্ট পড়ে থাকেন তাহলে আপনাকে একটা অনুরোধ করবো আপনি আপবার আপুর জীবনে ফিরে আসুন। কারণ আপুর সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পর বুঝেছি আপু আপনাকে কতটা ভালোবাসেন। এটা আপনার কাছে আমার একটা অনুরোধ। আপনি আপুকে ক্ষমা করে দিবেন।
.
এটা সম্পুর্ন সত্যি ঘটনা। এখানে কোনো কাল্পনিকতার ছোয়া নেই। ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন
No comments