Header Ads

লাল নীল স্বপ্ন

[→→গল্পটা বড় কিন্তু পুরো পড়লে ভালো লাগবে মজাও পাবেন←←]
.
প্রতিদিনের মতো সেদিনও ফেইসবুক ব্রাউজিং করতেছিলাম, স্বভাবতই আমি ফেইসবুকে আমার পিক ব্যবহার করি না। এর মানে এই নয় যে আমি দেখতে খুবই খারাপ, আবার বেশি ভালোও বলছি না। আছি একরকম, আমার প্রোপাইল পিক ছিল Justin Bieber এর, তো ফেইসবুক ব্রাউজিং চলছে তখনি একটা মেসেজ রিকোয়েস্ট চোখে পড়লো। আইডিটা মেয়েরই ছিলো আইডির নাম ''Faria Jahan Oboni'' মেসেজটা সিন করলাম, মেসেজটা ছিলো ‘‘babaa Profile Pic Justin Bieberer ar Profile name Ariyan Arif, ha ha ha ha Moja Pailam.’’ মেসেজটা দেখে মাথা পুরা গরম, সাথে সাথে রিপ্লে করলাম।
.
:- কে আপনি? (আমি)
:- কেন? (অবনী)
:- কেন মানে?
:- কে মানে আবার কি?
:- জিজ্ঞেস করছি আপনি কে?
:- প্রোপাইল ঘুরে দেখতে পারছেন না, কানা নাকি?
:- আরে আজিব তো আপনি এভাবে বলছেন কেন?
:- কিভাবে বলতেছি আমি কে জানতে না চেয়ে আমার প্রোপাইলটা ঘুরে দেখলেই পারেন।
:- মেসেজটা কেন করলেন?
:- কোন মেসেজটা?
:- এইটা (স্কিনশর্ট দিলাম)
:- ওহ আচ্ছা আসলে নামটা আর পিকটা দেখে হাসি পেলো তাই আনন্দটা আপনাকেও শেয়ার করলাম।
:- নামটা আর পিক মানে..
:- আরে ধ্যাত এতো মানে মানে কেন করেন, আপনার প্রোপাইল পিক আর আপনার নামটা দেখে হাসি পেয়েছে, এটাই ওকে?
:- হাসি পাওয়ার কি আছে?
:- কারণ নামের সাথে তো পিকটার মিল নেই তাই...
:- নামের সাথে পিকের মিল থাকতে হবে কেন?
:- মিল থাকতে হবে তা তো বলছি না, আমার চোখে এমন লাগলো তাই বললাম, আপনি একবারে সেলিব্রেটিদের মতো ভাব নিচ্ছেন কেন?
:- আমি মোটেও সেলিব্রেটিদের মতো ভাব নিচ্ছি না। আমি জানতে চাচ্ছি আমার প্রোপাইল দেখে হাসার কি আছে?
:- হাসার কিছু না থাকলেও আমার হাসি পেয়েছে।
:- আজিব ব্যাপার... আমি তো হাসার কিছই দেখছি না।
:- আপনি হাসার কিছু না দেখলে আমার কি তাতে? আমার হাসি পেয়েছে হাসি দিলাম, এতে এতো কথার কি আছে?
:- আমার প্রোপাইল নিয়ে হাসবেন আর আমি কিছু বলবো না।
:- না বলবেন না,
:- কেন?
:- এমনি.
:- মাথার তারতুর ঠিক আছে তো?
:- আমার মাথার তারতুর ঠিক আছে আপনার মাথার ঠিক নেই, চেক করে দেখেন লুস হয়ে আছে, যার জন্য নাম একজনের প্রোপাইল পিক আরেক জনের।
:- আমি Justin Birber এর ফ্যান এজন্য পিকটা দিয়েছি, এজন্য আমার মাথার তারতুর লুস হবে কেন?
:- আপনি Justin Bieber এর ফ্যান।
.
মেসেজটা দেখে একটু অবাকই হলাম। এতক্ষণ কিভাবে প্যাচিয়ে কথা বলতেছিলো হঠাৎ কেমন যেন হয়ে গেল।
.
:- হুম...
:- আমিও... বাই দা ওয়ে, আমি অবনী।
:- আমি আরিফ।
.
মেসেজটা সিন করলো কিন্তু কোনো রিপ্লে করলো না আমিও আর মেসেজ করিনি।
আমি এবার ফাইনাল দিয়েই অনার্স শেষ করবো। কয়েকমাসই এক্সাম তাই ফেইসবুকে একটু সময় কম দিতে হচ্ছে। সারাদিনে একবার ফেইসবুকে যাওয়া আবার কোনো কোনোদিন একবারেও না যাওয়া। তিনদিন ধরে পড়ার চাপের কারণে ফেইসবুকে যাওয়া হয়নি তাই আজকে গেলাম। নোটিফিকেশন চেক করে মেসেজগুলো চেক করতেছি সবার রিপ্লে দিয়ে চোখে পড়লো সেই আইডিটা ‘‘Nusrat Jahan Oboni’’ সেদিন করা মেসেজগুলো দেখতেছিলাম আর নিজে নিজেই হাসতেছি। আমিও তাহলে ঝগড়া করতে পারি মনে হচ্ছে। কিছু না ভেবেই একটা মেসেজ দিলাম, ‘‘হাই’’ ভেবেছি কোনো রিপ্লে আসবে না, কিন্তু না আমার ধারণা একবারেই ভুল। একমিনিট হতে না হতেই রিপ্লে আসলো।
.
:- হ্যালো (অবনী)
:- কেমন আছেন? (আমি)
:- হুমম.. ভালোই, আপনি?
:- ভালো!
:- কি করছেন?
:- কিছু না,
:- ওওও...
:- হুম।
:- আচ্ছা!
:- বলেন...
:- আমি কি আপনাকে তুমি করে বলতে পারি।
:- জানি তো এটাই বলবেন, আপনারা ছেলেরা তো এমনি, দু’দিন কথা বললে তুমিতে যেতে চায়, এরপর বলবে তোমায় দেখতে পারি, একটা পিক দেয়া যাবে, এরপর তোমাকে খুব ভালো লাগে, ছেলেদের খুব ভালো করে চিনা আছে...
:- আমি একদমই সেই রকম না।
:- জানা আছে, এতো ভাব নিতে হবে না।
:- ধুর...
.
দিলাম মেসেজ ব্লক করে... ‘‘মাথাই খারাপ করে দিয়েছে নিজেকে বিশ্ব সুন্দরী মনে করে মনে করে, যে দুনিয়াতে আর কোনো মেয়ে নাই সে-ই একজন, নিশ্চয় মাথায় কোনো গোন্ডগোল আছে, নাহলে এক লাইন বেশি বুঝতো না’’
.
:- কিরে কার সাথে কথা বলতেছিস? (মণি)
:- কার সাথে কথা বলবো দেখতেছিস না রুমে শুধু আমি একা।
:- তা তো দেখছি, কিন্তু নিজে নিজে যে বকতেছিস কার সাথে?
:- কোথায় বকতেছি, রুমে এসেই দেখছি তুই কার মাথায় গোন্ডগোল আছে বলছিস।
:- তুই জেনে কি করবি?
:- তারে ধরে এনে তোর সামনে নাচবো।
:- ফাইজলামি করতেছিস, যা ভাগ এখান থেকে।
:- যাচ্ছি যা, কারো উপকার করতে নেই.. করবো না তোর উপকার।
:- তোরে বলেছি আমি আমার উপকার করতে?
:- বললেও করবো না।
:- এখন যা এখান থেকে..
:- যাচ্ছি... তুই মুড়ি খা বসে বসে।
:- তুই গিয়া খা।
:-...!!
:- ঐ দাড়া(আমাকে বালিশ মেরে দৌড় দিছে)
.
আমার বোন মণি, বদের হাড্ডি সব সময় আমার পিছে লেগেই থাকে। প্রতিদিন ওর সাথে দু’য়েক পার্ট ঝগড়া হবেই। আমার সাথে ঝগড়া না করলে ওর পেটের ভাত হজম হয় না। একটা ছোট বোন না থাকলে ভাই বোনের ভালোবাসাটা বুঝা একবারেই অসম্ভব।
.
সব মাথা থেকে ঝেরে পেলে দিলাম, শান্তি মতো এক্সামও দিলাম, কিন্তু এখন তো পুরা অবসর সময়। দিনের বেলায় বন্ধুদের সাথে কিছু সময় আড্ডা দিয়ে চলে যায় কিন্তু রাতের বেলায় সারাক্ষণ বসে থাকা শুধু বোরিং নয় পুরাই বোরিং...
.
ফেইসবুকে থাকতেও ভালো লাগে না চ্যাটিং করার মতোও কেউ নেই, কথাটা ভাবতেই মেয়েটার কথা মনে হলো, মেসেজ লিষ্টে খুঁজতেছি, ভেবেছি আমি মেসেজ ব্লক করে দিয়েছি আমাকে নিশ্চয় ব্লক মারবে। আমার এবারও ভাগ্য ভালো ব্লক করেনি। মেসেজ আনব্লক করেই প্রোপাইলে গেলাম, ‘‘ওমা রিকোয়েস্ট দিয়েছে’’ চিন্তায় আছি এক্সেপ্ট করবো কি করবো না। কিন্তু না করেই ফেললাম, একটু ভাব নিলাম কোনো মেসেজ দেইনি। একটু পরই প্রোপাইল পিকে কমেন্ট দেখি, ‘‘ঐ আমাকে মেসেজ ব্লক করছেন কেন?’’ ভাবতেছি মেয়েটা সারাক্ষণ ফেইসবুকে কি করে? এক্সেপ্ট করতে না করতেই কমেন্ট করলো, হবে হয়ত বিএফের সাথে টাংকি মারে।
কমেন্টটা সাথে সাথে রিমুভ করে দিলাম। কারণ আমার একটা জল্লাদ মার্কা বোন আছে না। সে যদি কমেন্টটা দেখে তাহলে দুনিয়া উদ্ধার করে পেলবে। ‘‘ভাইয়া তোর পিকে একটা মেয়ে কমেন্ট করেছে দেখেছি, মেয়েটা কেরে? কোথায় থাকে? নিশ্চয় আমার ভাবি, একটা পিক দেখা না, আমার ভাবিটা কেমন একটু দেখি’’ এসব বলে বলে আমার মাথার পোকা বের না করা পর্যন্ত ছাড়বে না। কথাটা ভাবতে না ভাবতে হাজির দরজা টোকা দিচ্ছে।
.
:- কে? (আমি)
:- আমি.. (মণি)
:- আমি কে?
:- দরজা খোল তারপর দেখ..
:- না নাম বলতে হবে না হয় দরজা খুলবো না।
:- তোর বোন...
:- আমার তো কোনো বোন নেই..
:- ঐ কুত্তা.. দরজা খুল না হয় দরজা ভেঙ্গে পেলবো।
:- ভাঙ্গ...
.
সত্যি সত্যি দরজা শব্দ করতেছে যেটা আমার একদমই পছন্দ না।
.
:- ঐ থাম..
:- থামবো না তুই দরজা খুল..
:- তুই আগে দরজা পিটানো বন্ধ কর.
:- তুই আগে দরজা খুল..
.
দরজার কাছে গিয়া দরজা খুলে..
.
:- ঐ কিছে এমন করতেছিস কেন?
:- তোর পিকে একটা কমেন্ট আসছিল মেয়ের কমেন্টটা দেখতে গিয়ে দেখি সেটা নেই।
:- বলিস কি?
:- সত্যি.. ভাইয়া মেয়েটা কে রে...!
:- তোর ভাবি (যা বলছি তা মিলছে তো।
:- সত্যি!
:- হ সত্যি যা এবার.
:- একটা পিক দেখা না।
:- পিক পামু কোথায়?
:- কেন তোর কাছে আছে না?
:- তুই দিয়ে গেছিস নাকি আমার কাছে থাকবে.
:- মিথ্যা কেন বলতেছিস.
:- মিথ্যা কেন বলবো?
:- দেখা না ভাইয়া...
:- সত্যি আমার কাছে নেই"
:- তাহলে বল মেয়েটা কে?
:- আমি কিভাবে বলবো মেয়েটা কে? আমি তো কোনো কমেন্টই দেখি না নাই।
:- যা মিথ্যুক তোর সাথে আমার কথা নাই.
.
মণি রাগ করেই চলে গেল... আবার ফেইসবুকে ঢুকে পড়লাম। এবার তো দেখছি মেসেজই দিয়ে বসছে। ‘‘আমাকে মেসেজ ব্লক করছেন কেন?’’ রিপ্লে দেইনি মেসেজ সিন করে পেলে রেখেছি। আর সেই সাথে আমার বোনটার রাগ ভাঙ্গাতে ওরে ট্যাগ দিয়ে একটা পোষ্ট দিলাম। ‘‘আমার একটা ছোট্ট কিউট পেত্নী বোন আছে, কিন্তু আমার বোনটা আমার উপর খুব রেগে আছে, এখন আমি কি করে ওর রাগ ভাঙ্গাই’’ অনেকেই কমেন্ট করেছে, কেউ বলে চকলেট কিনে দেন, কেউ বলে আইসক্রিম কিনে খাওয়ান, কেউ বলে ফুচকা খাওয়াতে নেন, রাগ ভাঙ্গানোর মতো অনেক কমেন্ট করলো। কিন্তু আমার বোনটা যে কি কমেন্ট করলো দেখে পুরাই অবাক হলাম। বলে কি? ‘‘বোনের পা ধরে মাফ চান, তাহলে রাগ চলে যাবে’’ এমন কমেন্ট দেখে বললাম ‘‘ভাবির পিক দেখালে হবে না’’ ও রিপ্লে করলো ‘‘না হবে না, তবে চেষ্টা করে দেখতে পারেন’’ নেট থেকে একটা পিক নিয়ে ওর সামনে গেলাম।
.
:- আপুটা, রেগে আছিস? (আমি)
:- লাথি খাওয়ার আগে যা..
:- আমি তোর ভাই না আমাকে লাথি মারবি।
:- আমি কারও বোন না।
:- কে বলেছে? তুই কারও বোন না। তুই তো আমার কলিজার টুকরা একটা বোন আমার।
:- তুই বলেছিস তখন মনে নাই।
:- কখন?
:- দরজা খুলতে বলার পর বলেছিস তোর কোনো বোন নাই..
:- বলেছিলাম?
:- হ্যা বলেছিস..
:- আচ্ছা সেটা মেমোরি থেকে ডিলেট করে দিলাম, এখন নতুন করে বলছি এইটা আমার লক্ষী বোন।
:- মজা করবি না, মেজাজ গরম আছে।
:- তাই... দাড়া আমি কড়াই আর একটা ডিম আনি তোর মাথায় কড়াই বসিয়ে ডিম ভাজা করে তুই আর আমি খাবো।
:- কি বললি তুই... (শুরু করলো বালিশ দিয়ে পেটানো)
.
আমিও মজা করতেছি, ‘‘ওমারে মেরে পেললো রে, মরে গেলাম রে, কেউ আমাকে বাঁচাও, একটা পেত্নী আমাকে মারতেছে, বাঁচাও বাঁচাও’’
.
:- তোরা কি শুরু করেছিস? রুমটাকে কি বানিয়েছিস? (আম্মু)
:- দেখো না, তোমার মেয়ে আমাকে একাত্তরের পাকবাহিনীদের মতো মারতেছে, তুমি না আসলে মেরেই পেলতো।
:- ও বলে কি আমার মাথায় নাকি কড়াই বসিয়ে ডিম ভাজি করে খাবে। (মণি)
:- তোরা দু’জন ভাইবোন না, দু’জন যেভাবে শুরু করেছিস মনে হচ্ছে দু’জন দু’জনের শত্রু। তাড়াতাড়ি রুমটা গুছা (আম্মু)
:- গুছা তাড়াতাড়ি, (আমি)
:- পারবো না তুই গুছা (মণি)
:- চুপ থাক... সারাক্ষণ শুধু ঝগড়া করিস, (আম্মু)
:- আমি করি নাকি, ও এসেই তো আমার সাথে ঝগড়া করতেছে দেখো না। (মণি)
:- ওকে, আমি সরি বলছি, সরি.. দেখেছো আম্মু আমি তোমার ভালো ছেলে। (আমি)
:- ভালো না ছাই.. (মণি)
:- এবার আমি দু’জনকেই পিটাবো। (আম্মু)
:- আমাকে পিটানো লাগবে না, ওরে পিটাও (মণি)
:- তুমি দাড়াও আমি লাঠি এনে দিচ্ছি, (আমি)
:- আমি বাঁশ এনে দিচ্ছি ওরে ইচ্ছা মতো পিটাইও তুমি না পারলে আমাকে দিও আমি পিটাবো। (মণি)
:- তোর ঝগড়া করো আমি গেলাম,
:- হা হা হা (ভাইবোন দু’জনই হাসতে লাগলাম)
.
আম্মু আমাদের সাথে না পেরে চলে গেছে। তখন আমি মণিকে বললাম।
.
:- তোর ভাবিকে দেখবি? (আমি)
:- দেখবো তাড়াতাড়ি দেখা। (মণি)
:- এই দেখ... তোর ভাবি অনেক সুন্দর না।
:- এটা আমার ভাবি?
:- হ্যা,
:- ওকে মেনে নিলাম, আর দোয়া করি তোরে যেন আল্লাহ এমন একটা বউ দেয়।
:- আমিন... এই না তওবা তওবা, (একটা বিদেশি কালো মেয়ে ছিল)
:- হা হা হা।
:- তোর দোয়া জীবনেও কবুল হবে না।
:- হবে হবে... তুই আমিন বলেছিস না, তাহলে হয়ে গেছে।
:- হবে না।
.
বলে ওর রুম থেকে চলে আসলাম, রাতের খাওয়া শেষ করেই ঘুমিয়ে গেলাম আর ফেইসবুকে যাইনি।
সকালে গিয়ে দেখি অবনীর তিনটা মেসেজ, ‘‘পোলার ভাব দেখে বাঁচি না’’ ‘‘লাইনে থেকেও রিপ্লে করো না কেন?’’ ‘‘ আজাইরা’’ রিপ্লে করলাম। ‘‘বাঁচতে না চাইল মরে যান কেউ ধরবে না এমনিতে দেশের জণসংখ্যা প্রচুর বেড়ে গেছে’’ ‘‘লাইনে ছিলাম না তাই রিপ্লে করিনি’’ ‘‘আপনি আজাইরা আমি ব্যস্ত মানুষ’’ রিপ্লে দিয়েও কোনো রেসপন্স পাচ্ছি না মনে হচ্ছে লাইনে নেই তারপরও একটু অপেক্ষা করলাম কিন্তু কোনো লাভ হলো না। শিওর হলাম লাইনে নেই, ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে আবার ফেইসবুকে আসলাম রিপ্লেও দিয়েছে। ‘‘আমি তো কথার কথা বলেছি, আমি মরতে যাবো কোন দুঃখে’’ লাইনে ছিলো রিপ্লেও করলাম.
.
:- আমিও তো কথার কথা বলেছি..
:- ভালো করেছেন.. এখন বলেন আমাকে মেসেজ ব্লক কেন দিয়েছিলেন।
:- আপনার ভাবটা এক কেজি বেশি হয়ে যাচ্ছিল তাই ব্লক দিয়েছি।
:- আমি কিসের ভাব নিয়েছি?
:- নিজেই মনে করে দেখেন।
:- যেটা বলেছি সেটা কি মিথ্যে বলেছি?
:- আমিও তো মিথ্যে বলিনি,,, আপনি তো সোজা সবার সাথে আমাকে তুলনা কর বসলেন।
:- ঠিকই তো করেছি, ছেলেরা তো এমনি।
:- আপনি আচ্ছা ঝগড়াটে মেয়ে তো।
:- জ্বি না, আমি মোটেও ঝগড়াটে না।
:- সেদিন থেকেই তো ঝগড়া চালিয়ে যাচ্ছেন।
:- আপনার কথার প্রসঙ্গে বলছি, এটা ঝগড়া না।
:- তাহলে এটা কি?
:- এটা হচ্ছে মেসেজিং...
:- একি কথা মেসেজে ঝগড়া..
:- এবার কিন্তু আপনি ঝগড়া করতেছেন... ওকে আমি অনুমতি দিলাম আপনি আমাকে তুমি করে বলতে পারেন। তারপরও আপনার জিএফের দোহাই ঝগড়া কইরেন না।
:- হা হা হা, আমার জিএফের দোহাই দিচ্ছেন?
:- তো আর কি করবো?
:- কেন আপনার বিএফের দিতে পারতেন তাহলে হতো, আমি মেনে নিতাম, কিন্তু আমার জিএফ নেই আপনি দোহাই দিলেও কিছু হবে না।
:- ওকে, কিছুর দোহাই দিতে হবে না আপনি আপাতত ঝগড়া না করলেই হবে।
:- আমি তো ঝগড়া করছি না।
:- আচ্ছা ঠিক আছে আপনি ঝগড়া করছেন না, আপনি আমাকে গীতাপাঠ করে শুনিয়েছেন।
:- না তো তাও তো করিনি।
:- আপনি কিছুই করেন নাই, আপনি আমার সাথে শুধু কথা বলেছেন এবার ঠিক আছে তো?
:- মোটামুটি.
:- তাও মোটামুটি, আচ্ছা আপনিই বলেন কি করেছেন।
:- হুম.. কি করেছি!
:- হুম, কি করেছেন?
:- কিছুই না শুধু মেসেজ করেছি।
:- ঐ হলো তো একি কথা।
:- একটু একটু আর কি.
:- আপনি ভালোই কথা প্যাচাতে পারেন,
:- কোথায় কথা প্যাচালাম...
:- কোথাও না.. আমি গেলাম বাইরে যেতে হবে।
:- ওকে...
.
তারপর থেকে প্রায়ই মেসেজিং হয় অবনীর সাথে, এখন আমরা অনেক ক্লোজ বলতে গেলে একবারে বন্ধুর মতো। সকাল গুড মর্নিং থেকে শুরু করে রাতে গুড নাইট দিয়েই কথা শেষ হয়।
অবনীর কাছে অনেকবার পিক চেয়েছি কিন্তু দেয়নি আমার কাছেও চেয়েছে আমিও দেয়নি শর্ত ছিলো ও দিলে আমিও দিবো কিন্তু ও তো দিচ্ছে না তাই আমিও দেইনি।
.
:- হাই. (আমি)
:- কেমন অাছো? (অবনী)
:- ভালো, তুমি?
:- ভালো, কি করছো?
:- ভাবি!
:- কি ভাবো?
:- একটা অপ্সরীর কথা!
:- বলো কি? কে সে? পিক আছে তোমার কাছে?
:- আরে না, মেয়েটার নামটাও জানি না। পিক কোথা থেকে পাবো? সেদিন বাসায় ঢুকছিলাম, মেয়েটাকে দেখলাম, হেব্বি মেয়েটা। মনে হয় আমাদের বাসাতে ভাড়া থাকে?
:- ওহ, সব জেনে আমাকে জানাও,
:- ঠিক আছে...
.
তারপর থেকে মেয়েটাকে ফলো করতাম, কিন্তু বুঝতে পারেনি আমি যে তাকে ফলো করি। না বুঝারও কারণ আছে, মেয়েটা যখন বের হতো ঠিক একি সময় আমার বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়ার সময়। তাই মেয়েটা বুঝতো না আমি যে তাকে ফলো করি, কিন্তু মেয়েটা যে বুঝতেছে না এ ব্যাপারেও আমি শিওর হতে পারছি না।
.
:- আছো? (আমি)
:- বলো... (অবনী)
:- মেয়েটার সাথে কথা বলবো বুঝতেছি না।
:- আরে পাগল, যেকোনো একটা কথা দিয়ে শুরু করে দিবে।
:- যদি কথা না বলে ভাব নেয়।
:- আরে বলবে,
:- তুমি শিওর তো...
:-১২০% শিওর...
:- ওকে তাহলে আজকেই জিজ্ঞেস করবো.. এখন তাহলে যাই পরে কথা হবে।
:- ঠিক আছে... ভালো থাকো।
:- হুম।
.
অপেক্ষায় আছি কখন মেয়েটা বের হয়। এই তো বের হলো, দরজার সামনে দিয়ে যাবে আমিও লোফারের ফিতা ঠিক করবো কিন্তু লোফারে তো ফিতা নেই, মেয়েটা মুচকি হেসে নেমে গেল। আমিও পিছন পিছন দিলাম দৌড়, মেয়েটা গেটের সামনে গেল তখনি পিছন থেকে ডাক দিলাম...
.
:- এই যে শুনুন. (আমি)
:- আমাকে বলছেন? (মেয়েটা)
:- হুম আপনাকেই, আর তো কেউ নেই।
:- জ্বি বলুন।
:- আপনারা কি এই বাড়িতেই থাকেন?
:- জ্বি, কিন্তু কেন?
:- এমনিতে নতুন দেখছি তো তাই..
:- ওও...
.
‘‘আবার হাটা দিলো, আমিও আবার ডাক দিলাম’’
.
:- শুনুন, (কিছুটা বিরক্ত বুঝতে পেরেছি, তাই আগেই বলে দিলাম) বিরক্ত হচ্ছেন?
:- না বলুন...
:- কবে আসছেন?
:- সরি..
:- বলতেছিলাম এ বাসায় কবে আসছেন।
:- ওওওও, মাসেক তিন হবে?
:- আমি কোথায় ছিলাম?
:- মানে...?
:- না কোনোদিন দেখিনি তো তাই..
:- জানি না।
:- তো কোথায় যাচ্ছেন?
:- এইতো একটু বের হবো.
:- ওওও,
:- আর কিছু কি বলবেন? না হলে আমি যেতাম!
:- না আর কিছু বলবো না.
:- তাহলে আমি যাই.
:- হুম।
.
মেয়েটা চলে গেলো, যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই মনে হলো মেয়েটার তো নামটাই জানতে পারলাম না, এক বালতি আফসোস করতে লাগলাম। আর এরি মধ্যে আমার রেজাল্টের সময়ও ঘনিয়ে আসছে. জানি না কি আছে কপালে এক্সাম তো ভালোই দিলাম। দেখা যাক কি পাই। আজকে অবনীর সাথে একটু রেগে পিক চাইবো দেখি দেয় কিনা।
.
:- ঐ... (আমি)
:- কি? (অবনী
:- পিক দাও.
:- দেয়া যাবে না, যদি না তুমি দাও.
:- আগে তুমি দাও তারপর আমি দিবো।
:- না আগে তুমি দিবে তারপর আমি।
.
‘‘একশবার কথাটা বললো, আমিও বলেছি’’
.
:- চার্জ কিন্তু ২% আছে পরে আমারটাও পাবে না। তাড়াতাড়ি দাও.
:- না তুমি আগে দাও.
:- আরিয়ান মাথা কিন্তু খারাপ হয়ে যাচ্ছে মেয়েদের মতো ভাব নিচ্ছো কেন? দাও তো।
:- ওকে দিচ্ছি..
:- তাড়াতাড়ি..
:- আরে দিচ্ছি তো, এক মিনিট..
:- ফোন অফ হয়ে যাবে।
:- সেন্ড করেছি।
:- কই....?
:- যেতে তো দাও..
:- আসছে না কেন?
:- কি মেয়ে একটুও ধৈর্য্য নেই...
:- কি?
:- হয়েছে?
:- এখনো দেখি না তো..
:- দাড়াও না, তোমার দাও ততক্ষণে চলে আসবে।
:- না, তা হবে না আগে দেখবো তারপর.
:- ধুর.
:- দেখেছি..
:- এবার তো দাও..
.
‘‘কোনো রিপ্লে পাচ্ছি না’’
.
:- ঐ,
কি হয়েছে রিপ্লে করো না কেন?
কোথায় তুমি?
ধুর ভালো লাগে না।
.
বুঝেছি মোবাইল অফ হয়ে গেছে. কিন্তু টানা চারদিন অবনীর কোনো পাত্তাই নাই, মোবাইল নাম্বারও নেই যে কল দিবো। অসুস্থ হয়ে গেল নাকি সেটাও বুঝতেছি না। এদিক দিয়ে মেয়েটার সাথেও হাই হ্যালো চলে নামটাও জানা হয়ে গেছে, নামটাও সুন্দর মাইশা। আর এদিক দিয়ে অবনীকে মেসেজ দিয়েই যাচ্ছি কোনো রিপ্লে মিলছে না।
.
:- কোথায় তুমি? মেয়েটার নাম জেনেছি তো, নাম মাইশা। সুন্দর না নামটা।
.
কোনো রিপ্লে নাই,
.
:- ধুর ভালো লাগে না, কোথায় যে হারালে। কে জানে?
জানো আমি না মেয়েটার প্রেমে পড়ে গেছি। কিন্তু মেয়েটাকে কিভাবে বলবো ভালোবাসি, ভয় লাগছে।
ধুর কার সাথে বকতেছি? কোনো রিপ্লেই পাই না।
.
কালকে আমার রেজাল্ট দিবে, টেনশনে আছি, বাইরে যাবো একটু হাটতে মনটা হালকা করতে, কিন্তু রুম থেকে বের হতেই দেখি মেয়েটা আমাদের বাসায় মণির সাথে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে, হাসিটাও বেশ সুন্দর। আমাকে দেখে হাসিটা বন্ধু হয়ে যায়, আর বাইরে গেলাম না। সোফায় বসে পড়লাম, টিভিটাও ছেড়ে দিলাম। ওরা কি কথা বলছে তা চুপ করে শুনছি আর টিভি দেখতেছি। হঠাৎ মণি বলে উঠলো...
.
:- জানো আপু আমার ভাইকে না কোনো মেয়ে পছন্দ করে না। কোনো মেয়ে কি বলবো আমারর নিজেরও ওরে ভালো লাগে না অন্য মেয়ে তো বাদই দিলাম।
:- কেন?
:- চেহারা দেখেই মেয়েরা বমি।করে আবার পছন্দ করবে।
.
মাইশা হাসতে শুরু করলো, মেজাজটা গরম হয়ে গেলো, আমার বোন হয়ে আরেকটা মেয়ের সামনে আমাকে পচাচ্ছে আর মেয়েটা ধুমছে মজা নিচ্ছে।
.
:- ঐ তুই কি বললি? আমাকে কোনো মেয়ে পছন্দ করে না নাহ্, এই দেখ কয়টা মেয়ের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট ঝুলিয়ে রেখেছি, আর কতগুলা মেসেজ রিকোয়েস্টও এক্সেপ্ট করেনি।
:- আরে সবগুলো ফেইক একাউন্ট, খবর নিয়ে দেখ সবগুলো তোর বন্ধুদের আইডি।
:- তুই প্রোপাইল ঘুরে দেখ,
:- দেখা লাগবে না, আমি জানি মেয়ে হলেও ছেঁচড়া মেয়ে হবে।
:- তোরে তো কোনো ছেলেই পাত্তা দেয় না, নিজে থেকে ছেলেদের হাই হ্যালো মারিস,
:- কখনো না, আমি কোনো ছেলেকে মেসেজ করি না। তোর মতো নাকি আমি...
:- জানি, আর পাড নিস না।
:- আপু চলো তো আমরা পাগলের সাথে বসে থেকে নিজেরাও পাগল হয়ে যাবো।
.
মণি রেগে গিয়ে মাইশাকে নিয়ে চলে গেল ওর রুমে। আমিও আমার পথে চলে আসলাম, রাতে আবার বাসায় ফিরে অবনীকে মেসেজ দিলাম।
.
:- জানো আমার বোন মণি আজকে আমাকে মেয়েটার কাছে পচিয়েছে. আমাকে নাকি কোনো মেয়ে পছন্দ করে না, আমাকে দেখলেই বমি করে।
.
‘‘একমিনিট না হতেই অবনী লাইনে আসলো, কিন্তু রিপ্লে করছে না, মেসেজও সিন করেছে, প্রায় দশ মিনিট পর রিপ্লে করলো’’
.
:- ঐ কথা বলো না কেন?
:- হা হা হা, তাই নাকি, কই আমি তো বমি করলাম না।
:- এতদিন কোথায় ছিলে? ফেবুতে আসোনি কেন?
:- বাসায় একটু ঝামেলায় ছিলাম, তাই আসতে পারিনি।
:- কিসের ঝামেলা?
:- সে অনেক, এখন বলো মেয়েটাকে কি বলেছো ভালোবাসো যে?
:- আরে না, মেয়েটার সাথে তেমন কথাই হয় না, দেখা হলে কেমন আছেন জিজ্ঞেস করি এতটুকু, তার উপর এখন বাড়তি টেনশন?
:- কিসের টেনশন?
:- কালকে রেজাল্ট দিবে, খুব টেনশন হচ্ছে।
:- কেন ফেল করবে নাকি?
:- আরে না, তারপরও টেনশন হচ্ছে।
:- তো ফেল করলে কি করবে?
:- কি আর করবো মেয়েটাকে সোজা বিয়ে করে তার সাথে হানিমুনে যাবো।
:- হা হা হা.... আর পাশ করলে।
:- পাশ করলে ওরে নিয়া রোমান্স করবো।
:- ঐ আমারে ট্রিট দিবে না।
:- আগে তো পাশ করি..
:- কি ট্রিট দিবে।
:- দেখা করলে বলবো।
:- কে দেখা করবে?
:- কেন তুমি!
:- না বাবা আমি পারবো না।
:- কেন, আমি তোমায় ঘুম করবো নাকি?
:- করতেও পারো।
:- ধুর কি যে বলে, দেখা করলে কি হবে।
:- না না দেখা করা যাবে না।
:- তুমি দেখা না করলে তোমার সাথে আর কোনোদিন কথা বলবো না।
:- ফাইজলামি করো না।
:- সত্যি বলতেছি।
:- ওকে করবো তবে পুরশু, কালকে না।
:- ঠিক আছে ফেল করলে তো, আমি নিজেই করবো না।
:- কেন?
:- আমার কি লজ্জা নাই নাকি?
:- কি বলে পাগল, ফেল কেন করবে, তোমার তো এক্সাম ভালোই হয়েছে?
:- তবুও.. আচ্ছা যাই নিশ্চিন্তে একটা ঘুম দেই, সারাদিন আর উঠবো না, রেজাল্ট না দেয়া পর্যন্ত।
:- পাগল..
:- বাই বাই...
:- ওকে ওকে...
.
টেনশন মুক্ত একটা ঘুম দিলাম... এক ঘুমে একবারে রেজাল্টের সময় পার হয়ে গেছে.. ঘুম থেকে উঠেই ফ্রেশ হয়ে ভার্সিটিতে গেলাম, বোর্ডে রেজাল্ট দেখেই অবনীকে মেসেজ দিতে গেলাম, তার আগেই অবনী মেসেজ দিয়ে রেখেছে।
‘‘ কি সাহেব এখনো কি ঘুমান, রেজাল্টের কি খবর’’ রিপ্লে করলাম,
:- ? (আমি)
:- আরে কি হয়েছে কাঁদো কেন?
:- আমি তো শেষ?
:- কি পেয়েছো?
:-
:- আরে বলো না...
:- আমি পাস্ট ক্লাস পেয়েছি
:- শয়তান, এতক্ষণ এমন করতেছিলে কেন? আমাকে কি ট্রিট দিবে বলো।
:- কালকে সকালে দিবো... সকাল দশটায় দেখা হচ্ছে তাহলে।
:- ধুর...
:- বাসায় জানাতে হবে তো, যাই হ্যা...
:- যাও যাও..
:- রেগে যাচ্ছো কেন?
:- কোথায় রেগে যাচ্ছি,
:- আচ্ছা রাগো কালকে রাগ ভাঙ্গাবো
:- যাও তো...
:- যাচ্ছি..
.
বাসায় গিয়ে রেজাল্টের কথা বলার সবাই আমার রেজাল্টে খুব খুশি, বাসার সব ভাড়াটিয়াদের মিষ্টি কিনে খাওয়ালাম। মাইশাও জানতে পারে আমার রেজাল্টের কথা।
.
:- Congratulation. (মুচকি হেসে বললো)
:- থ্যাংকইউ..
:- কেমন আছেন?
:- এইতো ভালো, আপনি?
:- ভালো, এতো ভালো রেজাল্ট করলেন বলছেন এইতো ভালো।
:- না এমনিতে বলেছিলাম, আচ্ছা এখন যাই পরে কথা হবে।
:- আচ্ছা।
.
মাইশার সামনে দাড়াতে পারছিলাম না, ইচ্ছে করছিলো চিৎকার করে বলি, মাইশা তোমায় খুব ভালোবাসি। কিন্তু বলার আগেই তো বিদায় নিয়ে নিলাম।
.
পরেরদিন অবনীর সাথে দেখার করার জন্য রেস্টুরেন্টে বসে অপেক্ষা করছি, কিন্তু অবনী আসতে লেট হচ্ছে। কি আর করবো বসে থাকতে আর ভালো লাগছে না। তাই ফেবুতে গিয়ে ওরে মেসেজ দিলাম।
.
:- কোথায় তুমি আসবে না নাকি?
:- আসতেছি তো গাড়িতে আছি, ১০মিনিট বসো।
:- তাড়াতাড়ি আসো না।
:- আসতেছি বাবা...
.
মুহূর্তের মধ্যে আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো, কারণ মাইশার রেস্টুরেন্টে প্রবেশ। কিন্তু কেন আসল? বিএফ ক্যাচ নয় তো। বিএফ হলে তো, ভালোবাসার কথা বলার আগেই ছ্যাকা খেয়ে বসে থাকবো। আমার ভয় হচ্ছে অবনীর সাথে যদি আমাকে তাহলে তো বাঁশ খেঢে যাবো, অবনীকে যদি আমার জিএফ ভেবে নেয় তাহলে কি হবে।
আমার এক টেবিল দূরে বসছে আমাকে এখনো মনে হয় দেখেনি। অবনীকে মেসেজ দিয়ে দেখি সে কোথায়? এখান থেকে কেটে পড়তে হবে।
.
:- ঐ তুমি কোথায়? বাঁশ তো খেঢে গেছি।
:- কেন কি হয়েছে?
:- মেয়েটা!
:- কি মেয়েটা?
:- আরে ঐ মেয়েটা..
:- কোন মেয়েটা?
:- মাইশা রেস্টুরেন্টে,
:- তো কি হয়েছে? ভালোই হলো তোমার ভালোবাসাকেও দেখা হয়ে যাবে তোমাকেও.
:- আরে ধুর, মেয়েটা তোমাকে আমার সাথে দেখলে যদি উল্টা ভাবে তাহলে তো সব শেষ, তোমাকে যদি আমার জিএফ ভেবে নেয়।
:- ধুর বোকা আমরা বলে দিবো তো।
:- বলতে হবে না তুমি কোথায় আছো বলো, আমি আসতেছি।
:- রেস্টুরেন্টের সামনে ঢুকতেছি।
:- এই না না ঢুকো না আমি আসতেছি তুমি দাড়াও...
.
মাইশার থেকে বাঁচতে সাইড কাটতেছিলাম কিন্তু মাইশার কাছে ধরা পড়ে গেলাম।
.
:- আরে আপনি? (মাইশা)
:- জ্বি আমি... (আমি)
:- বসুন..
:- না, আমাকে যেতে হবে।
:- কপি খেয়ে তারপর যান।
:- আরেকদিন খাবো আজকে যাই.
:- কেউ আমাকে ফিরিয়ে দিলে আমার কষ্ট হয়। নিজেকে অনেক মনে হয়।
:- কি আর করব? বসতে হলো।
:- তো এখানে কি করছিলেন?
:- কিছু না, কিছু না, এমনিতে একটা ফ্রেন্ড আসার কথা ছিলো।
:- আসেনি.
:- না আসবে..
:- তো আপনি তো চলে যাচ্ছেন।
:- ও জ্যামে আছে তাই বাইরে দিকে যাচ্ছিলাম আর কি?
:- ওহ...
.
অবনী কোনো রিপ্লে করছে না, এখানে বসেও থাকতে পারছি না, অবনী যদি ভেরতে চলে আসে তাহলে তো সব মাটি হয়ে যাবে।
আমি বার বার মোবাইলে দিকে তাকাচ্ছিলাম। মাইশা ব্যাপারটা টের পায়।
.
:- কোনো সমস্যা হচ্ছে? (মাইশা)
:- না, ঠিক আছে।
:- ওকে...
:- একমিনিট আমি আসছি?
:- আচ্ছা..
.
সাথে সাথে অবনীকে মেসেজ করলাম,
.
:- কোথায় তুমি?
:- ভেতরে..
:- কি তুমি ভেতরে?
:- হ্যা...
:- তোমাকে না নিষেধ করেছিলাম, তুমি কেন ভেরতে ঢুকলে।
:- মাইশার কাছে বসো যাও...
:- তুমি, তুমি কোথায় সেটা বলো?
:- তোমায় মাইশার কাছে বসতে বলেছি?
.
চুপচাপ করে মাইশার সামনে বসলাম, মাইশা মুচকি মুচকি হাসতেছে?
.
:- হাসছেন কেন? (আমি)
:- এমনিতে,, মোবাইলটা বের করুন তো।
:- কেন?
:- বের করুন না,
:- করলাম.. (অবাক লাগছে কি হবে কে জানে)
:- অবনীর মেসেজ চেক করুন।
:- অবনীকে আপনি চি.. (বলার চান্স দিলো না)
:- করুন তো।
.
অবনীর মেসেজে ক্লিক করতেই আমি পুরাই নির্বাক হয়ে গেলাম। আমার সামনে মাইশা কিন্তু মেসেজে অবনীর পিক।
.
:- তুম....আপনি? (আমি)
:- হুম, আমি মাইশা, মানে অবনী।
:- এতো কিছু কেন?
:- তোমায় সারপ্রাইজ দিলাম।
:- বেশি হয়ে গেলো না।
:- একদমই না।
:- তাই না...
:- হুম,
:- তোমায় কি ডাকবো মাইশা না অবনী।
:- অবনী...
:- তাহলে মাইশা কোথায় যাবে?
:- মাইশা কে?
:- যাকে আমি..
:- আমি কি?
:- কিছু না,
:- তো তোমার মাইশার সাথে পরিচয় করাবে না।
:- নাহ্...
:- কেন?
:- এমনিতে.
:- তো এখন কাকে ভালোবাসো?
:- দু’জনকেই?
:- কি?
:- হুম.
:- একজনকে বেঁচে নাও.
:- তাহলে অবনীকে.
:- আচ্ছা অবনীর কাছে যাও, আমি যাই.
.
অবনী মানে মাইশা আমার পাশ দিয়ে চলে যাবে, তখন হাতটা ধরে ফেললাম।
.
:- কি হয়েছে? (অবনী)
:- বসো...
:- কেন?
:- কেন মানে তাহলে আমি এখানে কি করব।
.
অবনীকে বসিয়ে টিস্যু দিয়ে প্রপোজ করলাম, ‘‘আই লাভ ইউ’’ কিন্তু কোনো শব্দ হলো না, শুধু ঠোট লড়লো। অবনীও নিঃশব্দে উত্তর দিলো, ‘‘অাই লাভ ইউ টু’’
.
HappY EndinG

No comments

Powered by Blogger.