Header Ads

মানবিকতা

লেখক >? রানা (গল্পজোট)

*****আমি শহরের একটা বড় হাসপাতালের কিডনি বিষয়ক ডাক্তার। আজ আমি নিজের ব্যাক্তিগত খরচে একটা কিডনি হাসপাতালের উদ্বোধন করেছি। যেখানে কিডনি সমস্যার জন্য যেকোন গরিব মানুষও একেবারে নগন্য খরচে চিকিৎসা নিতে পারবে। আমার এই হাসপাতালটা আজ একজন কেই উৎসর্গ করে করা। তার স্বপ্ন কাঁধে নিয়েই আমার পথচলা। আজ এতো বড় ডাক্তার হওয়ার পরেও, এতো বড় হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেও আমাকে নিজের কাছে অপূর্ন লাগছে। পাশে শুধু একবার নেহা আপুর হাতটা চেয়েছিলাম।
.
আজ যদি আমি একটা ভালো ডাক্তার হয়ে থাকি তাহলে সেটা নেহা আপুর জন্যই। একটা সাধারণ ছেলেকে আজকের ডাক্তার করে তোলার লেখক তো আমার নেহা আপুই।
.
আজ থেকে ১৫ বছর আগের কথা আমি একজন গরিব কৃষক পরিবারের ছেলে ছিলাম। তবে মনে প্রচন্ড জেদ ছিলো যে এই দারিদ্রতা কাটিয়ে একদিন বিত্তশালীদের খাতায় নাম লেখাবো। শত বাধা আর কষ্টের পরেও আমি আমার লেখাপড়া চালিয়ে যাই। অনেক পরিশ্রম করতাম লেখাপড়া নিয়ে। তাই শহরের একটা নাম করা মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়ে যাই।
.
তবে পুরো শহরে আমার পরিচিত বলতে কেউই ছিলো না। আর গ্রাম থেকে আসার আগে মাত্র কয়েক হাজার টাকা নিয়ে এসেছিলাম। যা ভর্তি হতে হতেই শেষ হয়ে গিয়েছিলো। তখন দিনে ক্লাস করতাম মেডিকেলে আর রাত্রে রাস্তার পাশে পথশিশুদের সাথে ঘুমাতাম। এমনও অনেক সময় গেছে যে টানা ৩ দিন শুধু পানি খেয়েই কাটিয়েছি।
.
তবে সেই খারাপ দিনগুলোতেই আমার পাশে আসে নেহা আপু। একদিন রাত্রে বেলা ঘুম না আসায় রাস্তার পাশেই হাটতেছিলাম। হঠাৎ দেখি একটা মেয়েকে ছুড়ি ধরে একটা ছিনতাইকারি তার ব্যাগ নেওয়ার চেষ্টা করছিলো। আমি দৌড়ে তার কাছে জাওয়ায় ছিনতাইকারিটা ভয়ে পালিয়ে যায়।মেয়েটা আমাকে অনেক কৃতজ্ঞতা জানায়। তবে এতো রাত্রে আমিই বা রাস্তায় কি করছি তা জানতে চায় আমার কাছ থেকে। আমার কেনো যেনো এই মেয়েটাকে এতোটা আপন মনে হয়েছিলো। আমি তার কাছে সব কথা খুলে বলি। আমার গ্রাম থেকে শহরে আসার গল্প। মেয়েটা আমার আপুর বয়সীই তাই আপু বলেই ডাকলাম। তারপর আপুটার সাথে পরিচিত হই। আপুটার নাম নাকি নেহা সিকদার। এইখানেই একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। পাশাপাশী একটা প্রাইভেট স্কুলের শিক্ষিকা। আমার সমস্যার কথা শুনে আপুটা অনেক্ষন চিন্তা করে আমাকে নিয়ে রওনা দেয়। আমি নিজেও জানতাম না কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। নেহা আপু আমাকে একটা গ্যারেজে নিয়ে যায়। গ্যারটজটা নাকি তার পরিচিত। এর ভেতর একটা ঘর আছে এখানে আপাতত কেউ থাকে না। আমাকে কয়েক দিনের জন্য সেখানেই থাকতে বলে। আপুটার নাকি ঘরে ফিরতে হবে তাই আমাকে কিছু টাকা দিয়ে আর কিছু শুকনা খাবার দিয়ে চলে যায় সে। মাত্র একদিনের পরিচয় ছিলো তার সাথে। তাই আমার এতো উপকার করেছিলো সে। তাকে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার সেদিন ছিলো না।
.
এরপর থেকে সেই গ্যারেজেই ছিলাম বেশ কিছুদিন। নেহা আপুই গ্যারেজে কথা বলে আমার খাবারের ব্যবস্হা করে দিয়েছিলো। আমার কষ্টের জীবনের ধীরে ধীরে পরিসমাপ্তি ঘটতে থাকে।
.
নেহা আপু প্রায়ই আমার খোজ খবর নিতে আসতো। নেহা আপুর সাথে আমার সম্পর্ক আরো বেশি ভালো হতে থাকে। নেহা আপুর একটা ব্যাক্তিগত স্ক্রুটি ছিলো, যেটি দ্বারা নেহা আপু স্কুল যেতো পড়াতে, আমার সাথে দেখা করতে আসতো। এছাড়াও যেখানেই জাওয়ার হতো স্ক্রুটিটা নিয়ে যেতো। নেহা আপু প্রায়ই আমাকে কিছু কিছু টাকা দিতো লেখাপড়ার খরচ চালাতে। তবে নেহা আপুর জীবনী শুনে আমি বেশ অবাক হই।
.
নেহা আপুর এই পৃথিবীতে আপন কেউ ছিলো না। যখন তার বোঝার বয়স হয়েছিলো তখন থেকেই নাকি তিনি একটা এতিম খানায় ছিলো। তবে তাকে কে বা কারা এই এতিম খানায় রেখে যায় সেটা নেহা আপু নিজেও জানে না। তারপর থেকে এতিম খানা থেকেই লেখাপড়া চালিয়ে যায় নেহা আপু। তারপর একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগও পেয়ে যায়। সেই নেহা আপুই আজকে একজন শিক্ষিকা। তবে তিনি আজো গরিব, এতিম আর অসহায় মানুষদের নিয়ে কাজ করেন। নেহা আপু বেশ সুন্দর ছিলো। চাইলেই তিনি বিয়ে করে একটা সুখী পরিবারে চলে যেতে পারতেন। তবে তার নাকি এই গরিব, অসহায় মানুষের সাথে থাকতে অনেক ভালো লাগে। তাদের সাথে কাজ করে নাকি অদ্ভুত এক শান্তি পায় নেহা আপু।
.
মানুষটা সম্পর্কে আরো যত বেশি জানতে থাকি ততো আরে বেশি ভক্ত হয়ে যাই তার। একটা মেয়ে যার এই পৃথিবীতে কেউ নেই সে এতো কিছুর মধ্যেও এতোটা ভালো হতে পারে। আমাকে সে ভাই বলতো আর আমি নেহা আপু বলে ডাকতাম। আমাদের রক্তের কোন সম্পর্ক না থাকলেও আমাদের ভাই-বোনের ভালোবাসা রক্তের ভালোবাসার চেয়ে কমও ছিলো না। আমাকে নেহা আপু ভাইয়ের মতোই স্নেহ করতো আর আমি বোনের মতোই ভালোবাসতাম আর শ্রদ্ধা করতাম তাকে।
.
আমি সেই দিনের কথা কিভাবে ভুলবো যেদিন হঠাত করে আমার কলেজে অনেক টাকার প্রয়োজন পরে যায়। তবে আমার কাছে একটা টাকাও ছিলো না। আমি বসে বসে কাঁদছিলাম। নেহা আপুকেও লজ্জায় কিছু বলতে পারছিলাম না। তবে নেহা আপু অবশেষে জেনেই নেয় কারনটা। পরের দিন কলেজে গিয়ে শুনি নেহা নামের একজন আমার টাকাটা পরিশোধ করে দিয়েছে। বুঝলাম নেহা আপুই টাকাটা দিয়েছে। তবে হঠাৎ এতোগুলো টাকা কোথায় পেলেন তিনি। পরের দিন স্ক্রুটি ছাড়া পায়ে হেটে আসতে দেখেই বুঝেছিলাম টাকাটা কিভাবে জোগাড় হয়েছে। আমার নিজের বড় বোন থাকলেও হয়তো এতোটা করতো না আমার জন্য। নেহা আপু আমাকে বলেছিলো যে। যাই হোক না কেনো আমাকে একটা বড় ডাক্তার হতেই হবে। তারপর যেনো আমি গরিবদের জন্য কিছু করি।
.
তবে দিন দিন যেনো আমার মেডিকেলে লেখাপড়ার খরচ আরো বাড়তে লাগলো। নেহা আপু অনেক চিন্তা করতো আমার পড়াশুনা নিয়ে। তিনিও অনেক চেষ্টা করতো আমার পড়া যাতে টাকার কারনে কখনো না আটকায়। আমি এক সেকেন্ডের জন্যও আমার জীবন নেহা আপুকে ছাড়া কল্পনা করতে পারতাম না।
.
তবে একদিন আমাকে অবাক করে দিয়েই সকাল সকাল গ্যারেজে চলে আসেন নেহা আপু। এসে আমাকে যা বললেন আমি তাকে আর কিছু বলতে পারলাম না। নেহা আপু বলেছিলো সে নাকি এক সপ্তাহ পর বিদেশ চলে যাবে। আমি অবাক হয়ে কারনটা জানতে চাইলে বলে তার নাকি একটা ছেলের সাথে অনেক ভালো সম্পর্ক হয়ে গেছে। তাকে বিয়ে করেই বিদেশ চলে যাবে সে।
আমি অবাক হয়ে তাকে আবার প্রশ্ন করি তাহলে তার শিক্ষকতার কি হবে। আর এই গরিব অসহায় মানুষদের সাথে কাজ করারা কি হবে। আর তার এতিম খানা। তবে লজ্জায় লুকিয়ে রাখি তাহলে আমার কি হবে এই প্রশ্নটা। নেহা আপু স্বার্থপর এর মতো উত্তর দেয়, "অনেক ভেবেছি এদের কথা। আমারোতো একটা জীবন আছে। এখন না হয় আমার কথাটাই একটু ভাবলাম। ভালো থাকিস।'"
.
এই বলেই চলে যায় সে। আর নাকি তার সাথে আমার দেখা হবে না। চিৎকার করে সেদিন কাঁদতে মন চাচ্ছিলো। একটা মানুষ এতোটা বদলে যায় কিভাবে। বুঝলাম নেহা আপু ছাড়া আর কেউতো আমায় টাকা দিবে না। আমার পাশে এসে অনুপ্রেরণা দিবেন। আমাকে ভালোবাসবে না। আমার আর ডাক্তার হওয়া হবে না। আর মাত্র কয়েক বছর লেখাপড়ার খরচ চালাতে পারলে হয়তো ডাক্তার হয়ে উঠা হতো আমার। তারপর না হয় নেহা আপুর সব ঋণ শোধ করে দিতাম। ব্যাগ গুছিয়ে ভেবেছিলাম আবার গ্রামে চলে যাবো। তবে হঠাৎ করে আমার ঘরে সেইদিন চলে আসে নেহা আপু যে এতিম খানায় বড় হয়েছে সেই এতিম খানার তত্ত্ববদায়ককারী ম্যানেজার। সে এসে বলেন যে আমি যাতে আমার ডাক্তারী পড়া কিছুতেই না বন্ধ করি। পড়ার খরচ তিনি নিজেই বহন করবেন। বুঝলাম সৃষ্টিকর্তা নিশ্চই চায় যে আমি ডাক্তার হই তাই এতোভাবে এতোলোক পাঠিয়ে আমার পড়াশুনা চালিয়ে যেতে সহায়তা করছে। ধীরে ধীরে ব্যাস্ততায় ভুলে যাই নেহা আপুর কথা। লেখাপড়ার খরচ সেই এতিমখানার লোকটাই বহন করতে থাকে।
.
সেই দিনটা আমার জন্য আবেগ দিয়ে ভরা ছিলো। কারণ অনেক সাধনা, কষ্ট আর কিছু মানুষের সহযোগিতার ফলাফল সেদিন আমার হাতে চলে আসে। আমি একজন ডাক্তারের সার্টিফিকেট পাই। কিডনি বিষয়ক ডাক্তার। ভালো একটা মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করার পর ভালো একটা মেডিকেলে চাকরিও পেয়ে যাই। তাই সবার প্রথমে সালাম জানাতে চলে যাই সেই এতিম খানার লোকটার কাছে। এতিম খানার লোকটা অনেক খুশী হয়। কাঁদতে কাঁদতে আমাকে জড়িয়ে ধরে। তারপর আমাকে এতিম খানার এক কোণায় নিয়ে বসতে বলেন।
.
আমাকে তিনি প্রশ্ন করেন:-
-আচ্ছা, তুমার কি তোমার নেহা আপুর কথা মনে আছে?
-হুম। সেই স্বার্থপর মানুষটাকে কিভাবে ভুলবো। যে আমাকে মধ্য নদীতে একা ফেলে নিজে সাতার কেটে চলে যায়। আজকের এই দিনে এই স্বার্থপর মানুষটার কথা ভাবতে চাই না আমি।
-ঠিকই বলেছো। মানুষটা অনেক স্বার্থপর।এই স্বার্থপর মানুষটার জন্যই আজ তুমি এতো বড় ডাক্তার । এই স্বার্থপর মানুষটার জন্যই আজ এই এতিম খানার বাচ্চা ছেলেমেয়ে গুলো বেঁচে আছে আর পড়াশুনা করতে পারছে।
-মানে??
-তোমার নেহা আপু বিয়ে করে বিদেশ চলে যায়নি। তিনি ঘুমিয়ে আছেন গভীর ঘুমে। না পাওয়ার দেশের বাসিন্দা তিনি।
না ফেরার দেশের অথিতি।
.
আমি আতকে বসা থেকে দাড়িয়ে গেলাম। চোখটা যেনো ঘোলা হয়ে যাচ্ছে । কপাল বেয়ে ঘাম পরছে। আর হৃদকম্পন বেড়ে চলেছে।
কাঁদো কাঁদো ভাবে বললাম:
-আপনি পাগল? এই সব কি বলছেন !!
-তোমার নেহা আপু ইতি টেনেছে পৃথিবীর জীবনের। তোমার মনে আছে সেদিনের কথা যেদিন নেহা শেষ বিদায় নিয়েছিলো তোমার কাছ থেকে।
-হ্যা! কিন্তু সেটা শেষ বিদায় হবে কেনো?
-তুমি কি জানো না নেহা কেমন মানুষ? সে এক সেকেন্ডো নিজের জন্য বাঁচতে চায়নি। তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষটাই ছিলে তুমি। সে তোমায় ভাই বলতো। সে দায়িত্ব নিয়েছিলো যে তোমাকে ডাক্তার বানাবেই। আর তার আরেকটা লক্ষ ছিলো যে এতিম খানার প্রত্যেকটা ছেলে মেয়েকে লেখাপড়া শেখাবে সে। তবে হঠাৎ করে এই এতিম খানার আর তোমার, দুজনেরই অনেক টাকার প্রয়োজন হয়ে পরে। টাকার জন্য নেহা অনেক কষ্ট করে। তবে আমরা কোনভাবেই টাকা জোগাড় করতে পারিনি। অবশেষে নেহা পত্রিকায় একটা বিজ্ঞাপন দেখে। সেখানে লেখাছিলো একজন বড়লোক পরিবারের মেয়ের জন্য দু'টি কিডনি লাগবে। এর বিনিময়ে টাকা দিবে তারা । নেহার রক্তের গ্রুপের সাথে মিলেছিলো তার রক্তের গ্রুপ। আমি নেহাকে অনেক বুঝিয়েছিলাম। তবে সে শুধু বলেছিলো 'আমিতো একটা মাত্র মানুষ। আমার একটু ত্যাগের কারনে যদি আমার ভাই একটা ডাক্তার হয় তাহলে সে হাজারটা মানুষকে বাঁচাতে পারবে। আর এতিম খানার এতোগুলো বাচ্চাও তো লেখাপড়া করতে পারবে।' নেহা আমাকে তার কসম দেয় যে এইসব কথা যেনো তার মৃত্যুর আগে বা তোমার ডাক্তার হওয়ার আগে কেউ না জানতে পারে। তবে হয়তো দুর থেকেই তোমার নেহা আপু আজ খুশি তোমায় দেখে।
-আপনি পাগল। আপনি মিথ্যা বলছেন। আমার নেহা আপু বেঁচে আছে, হ্যা বেঁচে আছে। ( কাঁদতে কাঁদতে।)
.
আমি সেদিন কি শুনেছিলাম নিজেও বুঝতে পারিনি। নেহা আপু এমনটা করতে পারে না। আমার মনে হচ্ছিলো আমার নেহা আপুকে আমার চাইই।
.
লোকটা আরো বলেছিল এতদিন ধরে আমার লেখাপড়ার যা খরচ হয়েছে তা নেহার কথামতো নেহার টাকা থেকেই হয়েছিল। আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে গিয়ে একটা কবরের সামনে দাড় করিয়ে হাতে একটা চিঠি ধরিয়ে দিয়ে চলে যায় লোকটা।
.
কবরটা দেখেই বুঝলাম লোকটা মিথ্যা বলেনি। কবরটা নেহা আপুরই। অদ্ভুত এক কান্না চলে আসছিলো ভেতর থেকে। কাঁদতে কাঁদতে হাটু গেরে বসে চিঠিটা খুললাম। চিঠিটার লেখা দেখেই বুঝলাম লেখাটা নেহা আপুর। যা লেখাছিলো:
.
.
প্রিয় ভাই,
আহুম , আহুম। প্রথমেই তোর গলাটা পরিষ্কার করে নিলাম। চিঠিটা যখন হাতে পেয়েছিস তার মানে নিশ্চই তুই আজ আমার ডাক্তার ভাই হয়েছিস। হয়তো আজ আমার কবরের সামনে দাড়িয়ে আছিস।
তবে আমি মারা যাইনি রে পাগল। চোখের পানি মোছ।
নিজের মাঝেই আলতো করে আমায় তুই খোজ। আমি বেঁচে থাকবো তোর মধ্যেই। বেঁচে থাকবো এতিম খানার প্রত্যেকটা ছেলেমেয়ের লেখাপড়া করতে পারার মাঝেই। তবে মনে রাখবি তোকে আমি ডাক্তার এর জন্য বানাইনি যে যাতে তুই বিত্তশালীদের কাতারে দাড়াতে পারিস। তোকেতো আমি এর জন্য ডাক্তার বানিয়েছি যাতে তুই গরিব মানুষদের পাশে দাড়াতে পারিস। এতিম খানার দায়িত্বটা তোর জন্যই তুলে রাখা আমার। আর পারলে গরিব অসহায় মানুষের জন্য একটা হাসপাতাল বানিয়ে দিস। ভালো থাকিস।তোর বাবা আর মায়ের খোজ রাখিস। আর আমার জন্য কাঁদবি না। তোর হাসিমুখ আর অসহায় মানুষের প্রতি ভালোবাসায়ই আমি বেঁচে থাকবো।
.
ইতি
তোর নেহা আপু।
.
.
তারপর থেকে আজ পর্যন্ত আমার বেঁচে থাকার একটাই কারন। নেহা আপুর স্বপ্নগুলো নিজের স্বপ্ন করে পুরণ করা। এই কিডনি হাসপাতালটাও তার নামেই উৎসর্গ করা আর তার আদর্শে পরিচালিত হবে। এতিম খানার প্রত্যেক ছেলে-মেয়েকে নেহা আপুর আদর্শে বড় করাটাও আমার স্বপ্ন।
.
আজকের দিনটাতে তাই নেহা আপুর কথাটাই সবচেয়ে বেশি মনে পড়ছে।আজো ভালোবাসি তোমায় নেহা আপু।

No comments

Powered by Blogger.