***মায়া***
অনেক্ষন হলো একটি বাড়ির চারদিকে ঘুর ঘুর করছি।বাড়ির ভিতরে যাওয়ার সাহস পাচ্ছি না।
বাড়ি টার পূর্বের অবস্থা আর বর্তমান অবস্থা আকাশ-পাতাল ব্যাবধান।৪ বছর পর এসে চিনতে খুব কষ্ট হচ্ছিলো বাড়ি টা কোনটা। বাড়ির বাইরে ঘাট বাধানো পুকুর।চারপাশের অনেক গাছপালা যেনো একটি বাগান বাড়ি।
৪ বছর আগে শুধু পুকুর টাই ছিলো।পুকুরের পাড়ে বসে অনেক সময় কাটেয়েছি।অবশ্য আমি একা ছিলাম না তখন আমার সাথে কেউ একজন ছিলো।রোজ বিকেলে এই পুকুর পাড়ে বসে কত শত স্বপ্নের ফুলঝুরি ফুটতো।আজ সেগুলো শুধুই অতীত।সময়ের ব্যাবধানে সেই স্মৃতি গুলো হারিয়ে গেছে অনেক আগেই।
আরো কিছুক্ষন বাড়ির চারপাশ ঘুরে পাশের মাঠে এসে বসে রইলাম।
.
আজ প্রায় ৪ বছর পর সিলেট আসছি।।একটা সময় সিলেট থেকেই পড়াশুনা করতাম।
সিলেটে মামা বাড়ি।সেই সুবাদে সিলেটে থাকা।আজ ৪ বছর পর এসে প্রথমেই ছুটে গেছি অহনাদের বাড়িতে।
অহনা!নামটার সাথে অনেক কিছু মিশে আছে। অনেক স্মৃতি অনেক স্বপ্ন মিশে আছে। কিছু প্রশ্নের উত্তর ও চাওয়ার আছে। ৪ বছর পরে অহনাদের বাড়ি ই চিনতে অনেক কষ্ট হয়েছে।তবুও চিনেছি।।।শুধু বাড়িটার চারপাশেই ঘুরে এসে পরেছি ভিতরে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা সাহস কিছুই ছিলো না।
.
অনেকদিন পর সিলেট আসছি তাই বিকেলে বন্ধুদের সাথে ঘুরতে বের হয়েছি।ফয়সাল,আদিব,আবির আর আমি।আমরা ৫ জন অনেক আগে থেকেই একসাথে আছি।শুধু ফাহিমের ই খোজ নেই।।।
কোথায় আছে জানি না।।ফোন নাম্বার ও আগে থেকেই বন্ধ।৫ বন্ধু কতো সময় কাটিয়েছি আড্ডা দিয়েছি আর আজ তাদের মধ্যে একজন কে পাচ্ছি না। হয়তো কালের বিবর্তনে আমি ও হারিয়ে যাবো কেউ খোজ পাবে না আমাকে।।ঘুরা ঘুরি শেষে এবার বাড়ি ফেরার পালা।।।হাতে একটা সিগারেট নিয়ে ফুকতে ফুকতে বাড়ির দিকে ফিরছি।।।
হঠাৎ কাউকে দেখে পা আটকে গেলো।আমার সামনে অহনা!৪ বছর পরেও অহনা একি আছে একটুও পরিবর্তিত হয় নি।অহনার সাথে একটি ছেলে।মনে হয় ওর স্বামী হবে।পাশ কাটিয়ে চলে গেলো।।মনে হয় খেয়াল করে নি।আর খেয়াল না করাই শ্রেয়।কেউ চায় না পুরনো স্মৃতি টেনে এনে কষ্ট বাড়াতে।
.
আগে থেকেই যখন মামা বাড়ি থাকতাম তখন থেকেই বাড়ির ছাদের এক কোনে রাতে বসে থাকতাম।
৪ বছর পর এসেও নিয়মের পরিবর্তন হলো না।রাতের আধারে ছাদে বসে আছি।।সাথে গীটার আর সিগারেটের প্যাকেট।।সিগারেটের প্যাকেট থেকে সিগারেট বের করে দেয়াশালাই দিয়ে আগুন ধরাতেই কিছু কথা মনে পরলো।কেউ একজন একদিন দেয়াশালাই এর বক্স টা ফেলে দিয়ে আর সিগারেট খেতে নিষেধ করেছিলো।ছেরেও দিয়েছিলাম সিগারেট খাওয়া।এখন সেই মানুষটাও নেই নিষেধ করার ও কেউ নেই।।।তাই সিগারেট খেতে কোনো বাধাও নেই!!সিগারেট টানার সাথে সাথে পুরনো স্মৃতি গুলো আবার মনে পরছে।স্মৃতির গহব্বর তাহলে ঠিকাছে!
"আমি কে,এইচ,তুষার তখন অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র।মামার বাড়িতে থেকেই পড়তাম।অহনা নামের মেয়েটি আমাদের সাথেই একই ব্যাচে ছিলো।প্রথমে বন্ধুত্ব।এর পরে বেস্ট ফ্রেন্ড। তারপরে প্রেম!খুব সহজ সমীকরণ ছিলো।দিন গুলো খুব সুখেই কাটছিলো।
তবে "সুখ"!জিনিস টা সবার জীবনে টিকে না। আমার ক্ষেত্রেও ব্যাতিক্রম হয় নি।রোজ বিকেলে অহনাদের পুকুর পাড়ে বসে গল্প করা,ক্লাস ফাকি দিয়ে ঘুরে বেড়ানো নিমিষেই সব শেষ হয়ে গেলো।
দুই বছর যেতে না যেতেই অহনার ভিতরে পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম।অহনা কেমন যেনো আগের মতো নেই।জিজ্ঞেস করলেও কিছু বলতো না।অবহেলা করতো সবসময়।ভেবেছিলাম হয়তো ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু না।কিছু দিন পরে অহনা জানিয়ে দিলো আমার সাথে রিলেশন রাখা সম্ভব না!!আমার নিজেকেই নিজের বিশ্বাস হচ্ছিলো না ওর কথা শুনে। কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না সব কিছু কেমন যেনো উলট-পালট হয়ে গিয়েছে।সবচেয়ে বেশি শক পেলাম যখন শুনলাম অহনার আমাকে ছেরে চলে যাওয়ার কারন ফাহিম!!
ফাহিম আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু।আর ও কিনা!এর পরে খুব ভেংগে পরেছিলাম।ঠিকভাবে ক্লাস করতাম না।বাড়ির বাইরে বের হতাম না।একাকীত্ব গ্রাস করে নিয়েছিলো আমাকে।।।কোনোভাবে অনার্স শেষ করে সিলেট থেকে চলে আসি।।।।ফোন নাম্বার ও পরিবর্তন করে ফেলি।আর আসি নি সিলেট।।।৪ বছর পরে আজ আসলাম।"
.
পরের দিন আবার বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছি আর সিগারেট ফুকছি।ফয়সাল কে জিজ্ঞেস করলাম,
:অহনার সাথে ফাহিমের রিলেশন টিকে নি কেনো?
>ফাহিম অর সাথে টাইম পাস করেছিলো।
:ফাহিম কোথায় আছে?
>শুনেছি খুলনা আছে।
:অহনার বিয়ে হয়েছে কবে?
>৩-৪ মাস হলো।।।তুই কি এভাবেই থাকবি?কারো জন্য জীবন থেমে থাকে?
:না।।তবে মন থেমে থাকে।
সবার সাথে আড্ডা দিয়ে আবার চললাম অহনাদের বাড়ির চারপাশে।অহনাদের পুকুর পাড়ে বসে ভাবছি ভেতরে যাবো কি না?তবে যাওয়ার ইচ্ছা হলো না।।
.
সিলেট আসছি ৫ দিন হলো।।
এবার তো ফিরতে হবে।তবে ফেরার আগে অহনার সাথে দেখা করে যাওয়ার প্রবল ইচ্ছা জাগলো।কিছু প্রশ্নের উত্তর ও যে চাওয়ার বাকি।বিকেলে চললাম অহনাদের বাড়ি।
তবে আজ এসেই দেখলাম অহনা পুকুর পাড়ে বসে আছে।আমার দিকে তাকিয়েই ভূত দেখার মতো চমকে উঠলো। হয়তো কখনো আশা করে নি আমি ওর সামনে আসবো।কিছু না বলে পুকুর পাড়ে বসলাম।তবে অনেক দূরত্ব বজায় রেখে।সময়ের সাথে অধিকার ও বদলে যায়।অহনাই আগে কথা বলা শুরু করলো,
:কেমন আছো?
>বেঁচে আছি মারা যাই নি এখনো।তুমি?
:সেই আগের উত্তর এখনো দেও!আমি আছি ভালোই।হঠাৎ এতোদিন পর?
>সিলেট এসেছি ৫ দিন হলো।
:ওহ!
>আমাকে ঠকানোর খুব দরকার ছিলো?
::................
>ফাহিমের জন্য আমাকে ছারলে তো ফাহিমের সাথে থাকলে না কেনো?
:ফাহিম আমার সাথে প্রতারনা করেছে।মিথ্যা প্রেমের অভিনয় করেছে।
>তোমার স্বামী দেখতে খুব সুন্দর।
:তুমি জানলে কিভাবে?
>২ দিন আগে তোমাদের দেখেছি।
:ওহ!বিয়ে করেছো?
>না।
:সিলেট আছো কয়দিন?
>কাল চলে যাবে?
:এতোদিন পর সিলেট আসলে কেনো?
>জানি না।হয়তো মায়া পরেছিলো তবে আর আসবো না।
:(কিছুক্ষন নীরবতা) আমাকে মাফ করে দেও।
>অনেক আগেই মাফ করে দিয়েছি।
:কোথায় আছো এখন?
>রাজশাহী।
:তোমার সাথে অনেক অন্যায় করেছি জানি না তার জন্য কি শাস্তি অপেক্ষা করছে।
>কিছুই না।স্বামী সংসার নিয়ে সুখী হও।
:তোমার ফোন নাম্বার টা দেয়া যাবে?
>অযথা মায়া বাড়িয়ে লাভ নেই।আর কখনো আমাদের দেখা হবে না।
:ভালো দেখে কাউকে বিয়ে করো,সুখী হও।
>ভালো থেকো।
এই বলে চলে আসলাম।কেনো যেনো চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পরছে।হয়তো অহনার সাথে দেখা না হলেই ভালো হতো।
.
আমি কখনো মানুষ হিসেবে দাঁড়াতে পারি নি।।অমানুষ হিসেবেই আছি।
ভালো তো দুরে থাক খারাপের খাতায় সবার শেষে আমার নাম।।
হয়তো একদিন আমি ও মানুষের কাতারে দাঁড়াবো।।তবে তার কোনো সম্ভাবনা দেখছি না।
.
রাতের আধারে ছাদের কোনে বসে সিগারেট ফুকছি।।।সিলেটের মাটিতে এটাই হয়তো শেষ আসা।।।।কাল সকালেই চলে যাবো সিলেট ছেড়ে।
ফাহিমের কথা খুব মনে পরছে।
বন্ধু হয়ে বন্ধুর সাথে এমন না করলেও পারতো।অহনা সুখী হোক এই কামনাই করি।মায়া নামক বস্তু টা গ্রাস না করলেই হয়।কেমন জানি সব কিছু শুন্যতা লাগছে।না সিলেট না আসাটাই বোধ হয় ভালো ছিলো।তবে এসেছি যখন আর আসবো না।।।ভালো থাকুক অহনা।ভালো থাকুক প্রিয় বন্ধুগুলো।আর কোনো মায়ায় জড়াতে চাই না।
বাড়ি টার পূর্বের অবস্থা আর বর্তমান অবস্থা আকাশ-পাতাল ব্যাবধান।৪ বছর পর এসে চিনতে খুব কষ্ট হচ্ছিলো বাড়ি টা কোনটা। বাড়ির বাইরে ঘাট বাধানো পুকুর।চারপাশের অনেক গাছপালা যেনো একটি বাগান বাড়ি।
৪ বছর আগে শুধু পুকুর টাই ছিলো।পুকুরের পাড়ে বসে অনেক সময় কাটেয়েছি।অবশ্য আমি একা ছিলাম না তখন আমার সাথে কেউ একজন ছিলো।রোজ বিকেলে এই পুকুর পাড়ে বসে কত শত স্বপ্নের ফুলঝুরি ফুটতো।আজ সেগুলো শুধুই অতীত।সময়ের ব্যাবধানে সেই স্মৃতি গুলো হারিয়ে গেছে অনেক আগেই।
আরো কিছুক্ষন বাড়ির চারপাশ ঘুরে পাশের মাঠে এসে বসে রইলাম।
.
আজ প্রায় ৪ বছর পর সিলেট আসছি।।একটা সময় সিলেট থেকেই পড়াশুনা করতাম।
সিলেটে মামা বাড়ি।সেই সুবাদে সিলেটে থাকা।আজ ৪ বছর পর এসে প্রথমেই ছুটে গেছি অহনাদের বাড়িতে।
অহনা!নামটার সাথে অনেক কিছু মিশে আছে। অনেক স্মৃতি অনেক স্বপ্ন মিশে আছে। কিছু প্রশ্নের উত্তর ও চাওয়ার আছে। ৪ বছর পরে অহনাদের বাড়ি ই চিনতে অনেক কষ্ট হয়েছে।তবুও চিনেছি।।।শুধু বাড়িটার চারপাশেই ঘুরে এসে পরেছি ভিতরে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা সাহস কিছুই ছিলো না।
.
অনেকদিন পর সিলেট আসছি তাই বিকেলে বন্ধুদের সাথে ঘুরতে বের হয়েছি।ফয়সাল,আদিব,আবির আর আমি।আমরা ৫ জন অনেক আগে থেকেই একসাথে আছি।শুধু ফাহিমের ই খোজ নেই।।।
কোথায় আছে জানি না।।ফোন নাম্বার ও আগে থেকেই বন্ধ।৫ বন্ধু কতো সময় কাটিয়েছি আড্ডা দিয়েছি আর আজ তাদের মধ্যে একজন কে পাচ্ছি না। হয়তো কালের বিবর্তনে আমি ও হারিয়ে যাবো কেউ খোজ পাবে না আমাকে।।ঘুরা ঘুরি শেষে এবার বাড়ি ফেরার পালা।।।হাতে একটা সিগারেট নিয়ে ফুকতে ফুকতে বাড়ির দিকে ফিরছি।।।
হঠাৎ কাউকে দেখে পা আটকে গেলো।আমার সামনে অহনা!৪ বছর পরেও অহনা একি আছে একটুও পরিবর্তিত হয় নি।অহনার সাথে একটি ছেলে।মনে হয় ওর স্বামী হবে।পাশ কাটিয়ে চলে গেলো।।মনে হয় খেয়াল করে নি।আর খেয়াল না করাই শ্রেয়।কেউ চায় না পুরনো স্মৃতি টেনে এনে কষ্ট বাড়াতে।
.
আগে থেকেই যখন মামা বাড়ি থাকতাম তখন থেকেই বাড়ির ছাদের এক কোনে রাতে বসে থাকতাম।
৪ বছর পর এসেও নিয়মের পরিবর্তন হলো না।রাতের আধারে ছাদে বসে আছি।।সাথে গীটার আর সিগারেটের প্যাকেট।।সিগারেটের প্যাকেট থেকে সিগারেট বের করে দেয়াশালাই দিয়ে আগুন ধরাতেই কিছু কথা মনে পরলো।কেউ একজন একদিন দেয়াশালাই এর বক্স টা ফেলে দিয়ে আর সিগারেট খেতে নিষেধ করেছিলো।ছেরেও দিয়েছিলাম সিগারেট খাওয়া।এখন সেই মানুষটাও নেই নিষেধ করার ও কেউ নেই।।।তাই সিগারেট খেতে কোনো বাধাও নেই!!সিগারেট টানার সাথে সাথে পুরনো স্মৃতি গুলো আবার মনে পরছে।স্মৃতির গহব্বর তাহলে ঠিকাছে!
"আমি কে,এইচ,তুষার তখন অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র।মামার বাড়িতে থেকেই পড়তাম।অহনা নামের মেয়েটি আমাদের সাথেই একই ব্যাচে ছিলো।প্রথমে বন্ধুত্ব।এর পরে বেস্ট ফ্রেন্ড। তারপরে প্রেম!খুব সহজ সমীকরণ ছিলো।দিন গুলো খুব সুখেই কাটছিলো।
তবে "সুখ"!জিনিস টা সবার জীবনে টিকে না। আমার ক্ষেত্রেও ব্যাতিক্রম হয় নি।রোজ বিকেলে অহনাদের পুকুর পাড়ে বসে গল্প করা,ক্লাস ফাকি দিয়ে ঘুরে বেড়ানো নিমিষেই সব শেষ হয়ে গেলো।
দুই বছর যেতে না যেতেই অহনার ভিতরে পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম।অহনা কেমন যেনো আগের মতো নেই।জিজ্ঞেস করলেও কিছু বলতো না।অবহেলা করতো সবসময়।ভেবেছিলাম হয়তো ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু না।কিছু দিন পরে অহনা জানিয়ে দিলো আমার সাথে রিলেশন রাখা সম্ভব না!!আমার নিজেকেই নিজের বিশ্বাস হচ্ছিলো না ওর কথা শুনে। কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না সব কিছু কেমন যেনো উলট-পালট হয়ে গিয়েছে।সবচেয়ে বেশি শক পেলাম যখন শুনলাম অহনার আমাকে ছেরে চলে যাওয়ার কারন ফাহিম!!
ফাহিম আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু।আর ও কিনা!এর পরে খুব ভেংগে পরেছিলাম।ঠিকভাবে ক্লাস করতাম না।বাড়ির বাইরে বের হতাম না।একাকীত্ব গ্রাস করে নিয়েছিলো আমাকে।।।কোনোভাবে অনার্স শেষ করে সিলেট থেকে চলে আসি।।।।ফোন নাম্বার ও পরিবর্তন করে ফেলি।আর আসি নি সিলেট।।।৪ বছর পরে আজ আসলাম।"
.
পরের দিন আবার বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছি আর সিগারেট ফুকছি।ফয়সাল কে জিজ্ঞেস করলাম,
:অহনার সাথে ফাহিমের রিলেশন টিকে নি কেনো?
>ফাহিম অর সাথে টাইম পাস করেছিলো।
:ফাহিম কোথায় আছে?
>শুনেছি খুলনা আছে।
:অহনার বিয়ে হয়েছে কবে?
>৩-৪ মাস হলো।।।তুই কি এভাবেই থাকবি?কারো জন্য জীবন থেমে থাকে?
:না।।তবে মন থেমে থাকে।
সবার সাথে আড্ডা দিয়ে আবার চললাম অহনাদের বাড়ির চারপাশে।অহনাদের পুকুর পাড়ে বসে ভাবছি ভেতরে যাবো কি না?তবে যাওয়ার ইচ্ছা হলো না।।
.
সিলেট আসছি ৫ দিন হলো।।
এবার তো ফিরতে হবে।তবে ফেরার আগে অহনার সাথে দেখা করে যাওয়ার প্রবল ইচ্ছা জাগলো।কিছু প্রশ্নের উত্তর ও যে চাওয়ার বাকি।বিকেলে চললাম অহনাদের বাড়ি।
তবে আজ এসেই দেখলাম অহনা পুকুর পাড়ে বসে আছে।আমার দিকে তাকিয়েই ভূত দেখার মতো চমকে উঠলো। হয়তো কখনো আশা করে নি আমি ওর সামনে আসবো।কিছু না বলে পুকুর পাড়ে বসলাম।তবে অনেক দূরত্ব বজায় রেখে।সময়ের সাথে অধিকার ও বদলে যায়।অহনাই আগে কথা বলা শুরু করলো,
:কেমন আছো?
>বেঁচে আছি মারা যাই নি এখনো।তুমি?
:সেই আগের উত্তর এখনো দেও!আমি আছি ভালোই।হঠাৎ এতোদিন পর?
>সিলেট এসেছি ৫ দিন হলো।
:ওহ!
>আমাকে ঠকানোর খুব দরকার ছিলো?
::................
>ফাহিমের জন্য আমাকে ছারলে তো ফাহিমের সাথে থাকলে না কেনো?
:ফাহিম আমার সাথে প্রতারনা করেছে।মিথ্যা প্রেমের অভিনয় করেছে।
>তোমার স্বামী দেখতে খুব সুন্দর।
:তুমি জানলে কিভাবে?
>২ দিন আগে তোমাদের দেখেছি।
:ওহ!বিয়ে করেছো?
>না।
:সিলেট আছো কয়দিন?
>কাল চলে যাবে?
:এতোদিন পর সিলেট আসলে কেনো?
>জানি না।হয়তো মায়া পরেছিলো তবে আর আসবো না।
:(কিছুক্ষন নীরবতা) আমাকে মাফ করে দেও।
>অনেক আগেই মাফ করে দিয়েছি।
:কোথায় আছো এখন?
>রাজশাহী।
:তোমার সাথে অনেক অন্যায় করেছি জানি না তার জন্য কি শাস্তি অপেক্ষা করছে।
>কিছুই না।স্বামী সংসার নিয়ে সুখী হও।
:তোমার ফোন নাম্বার টা দেয়া যাবে?
>অযথা মায়া বাড়িয়ে লাভ নেই।আর কখনো আমাদের দেখা হবে না।
:ভালো দেখে কাউকে বিয়ে করো,সুখী হও।
>ভালো থেকো।
এই বলে চলে আসলাম।কেনো যেনো চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পরছে।হয়তো অহনার সাথে দেখা না হলেই ভালো হতো।
.
আমি কখনো মানুষ হিসেবে দাঁড়াতে পারি নি।।অমানুষ হিসেবেই আছি।
ভালো তো দুরে থাক খারাপের খাতায় সবার শেষে আমার নাম।।
হয়তো একদিন আমি ও মানুষের কাতারে দাঁড়াবো।।তবে তার কোনো সম্ভাবনা দেখছি না।
.
রাতের আধারে ছাদের কোনে বসে সিগারেট ফুকছি।।।সিলেটের মাটিতে এটাই হয়তো শেষ আসা।।।।কাল সকালেই চলে যাবো সিলেট ছেড়ে।
ফাহিমের কথা খুব মনে পরছে।
বন্ধু হয়ে বন্ধুর সাথে এমন না করলেও পারতো।অহনা সুখী হোক এই কামনাই করি।মায়া নামক বস্তু টা গ্রাস না করলেই হয়।কেমন জানি সব কিছু শুন্যতা লাগছে।না সিলেট না আসাটাই বোধ হয় ভালো ছিলো।তবে এসেছি যখন আর আসবো না।।।ভালো থাকুক অহনা।ভালো থাকুক প্রিয় বন্ধুগুলো।আর কোনো মায়ায় জড়াতে চাই না।
No comments