Header Ads

রোমান্টিক রোমান্টিক ভাব

কোনো মতে গেঞ্জি টা গলিয়ে বেরিয়ে পড়লাম।মা দেখলো,জিগ্যাস করলো না যে কোথায় যাচ্ছিস।অন্য সময় হলে জিজ্ঞাস করতো।কিন্তু এখন জানে যে কেনো যাচ্ছি।ইম্পর্টেন্ট কাজটা তোমাদের পরে জানাবো।বাসে উঠে পড়লাম।
-বাবু,মি. রুদ্র কে বলো যেন আমার পাশের সিট ছেড়ে সরে যায়।
তাই শুনে আমি একটু কাছেই সরে এলাম।
-আমার পাশের যাত্রীটি মুখ ঘুরিয়ে জানলার বাইরে তাকলো।
আমিও পরম স্নেহে আমার মাথাটা তার কাঁধে রাখলাম।ওর মুখে একটা হালকা হাসির রেখা দেখা দিল।কন্ট্রাকটর এসে জিজ্ঞাস করলো-কোথাকার টিকিট কাটবো।
আমি কুড়িটাকার নোট ধরিয়ে বললাম-দুটো শ্যামপুর।
পুরো ব্যাপার টা কেঁচিয়ে গেছে না?বলছি..বলছি,খোলসা করে বলছি।আমার পাশে যিনি বসে আছেন--সম্পর্কে উনি আমার বউ হন।আমার আদরের স্ত্রী রাজশ্রী।প্রায় চার বছরের প্রেম,তারপর বিয়ে।একটা নতুন পরিচয় আবার এখন যোগ হয়েছে।ও আমার সন্তানের মা।যদিও আমার সন্তান এখনো তার মায়ের গর্ভে।সপ্তাদুই আগে,সম্ভবত সোমবার রাজশ্রী র ফোন-
-হু বলো(আমি)
-ভালো খবর আছে।(রাজশ্রী)
-বলে ফেলো
-তোমার মা ঠামমি হতে চলেছে।
ব্যাপারটা বুজতে একটু সময় লাগলো।তারপরে প্রায় চেঁচিয়ে উঠলাম
-সত্যি, যু মিন তুমি মা হোতে চলেছো, আর আমি বাবা।
-হু
-ইহাও ইয়াহু
-হু আর চেঁচামিচি করতে হবে না,ফোন রাখো মাকে এখনো বলা হয়নি।
-ok ডার্লিং বায়।
-বায়।
পাঠক গণ এতক্ষন বুঝে গেছেন যে আমার মাথা যার কাঁধে আছে সে কে।
-কালকের ওই মেয়েটা তোমার বসের বউ?
-হু,এতই যদি বোঝো তো কাল ভুল বুঝে চলে এলে কেন?
- ঠিক করেছি রাগ করেছি,না হলে আজ তোমায় এতক্ষন পেতাম?
শালা বউটাও চালাক হয়ে গেছে।এবার বলি কাল কি হয়েছিল-
স্নান সেরে ভিজে চুলের ফোঁটা ফোঁটা জলের ঝাপটা দিয়ে আমার কাঁচা ঘুম ভাঙিয়েছিলো রাজশ্রী।তারপর গলা জড়িয়ে-'জানো আজ বাবু পেট থেকে কি বলছিল জানো?
-কী?(হাই তুলে আমার পাল্টা প্রশ্ন)
-বলছিল আজ সন্ধ্যে বেলায় কোনো একটা রেস্টুরেন্টে গিয়ে চাউমিন খাবে।
-দ্যাখো রোজ(রাজশ্রী কে আমি রোজ বলে ডাকি),আজ আমার অফিসে একটা বড় মিটিং আছে,আমার প্রেজেন্টেশন যদি ভালো হয় তাহলে আজ আমার প্রমোশন হবে।
এই কথা শুনে রাজশ্রী মুখফুলিয়ে বসে থাকলো।
ডাকলাম-মা মা-মা এলো, বললো-কী রে
-বলছি বাবু রোজের পেট থেকে নাকি বলছে রেস্টুরেন্টে চাউমিন খাবে,প্লিজ মা সন্ধ্যে বেলা তুমি ওকে নিয়ে যেও, আজ অফিসে জরুরি মিটিং আছে আমার।
মা রাজশ্রীর মাথায় হাত বুলিয়ে আচ্ছা বলে একটু হেসে চলে গেল।আমি ওকে বললাম কী খুশী তো?
ও বললো -অর্ধেকটা
অফিসে আমার প্রেজেন্টেশনের জয় জয়কার হলো।প্রমোশন হলো।অফিস শেষে বস বললো রুদ্র আমার সাথে এস।বসের গাড়িতে উঠলাম,উঠে দেখি অনুশ্রী মেডাম মনে বসের স্ত্রীও গাড়িতে।
বস বললো-রুদ্র তুমি আজ আমার অফিস কে এক নতুন উচ্চতায় তুলেছ,তাই চলো রাতের খাবারটা আমাদের সাথে খেয়ে নেবে।
হঠাৎ রাজশ্রীর কথা মনে পড়লো,মেয়েটা হয়তো মায়ের সাথে খেয়ে এতক্ষন বাড়ি চলে গেছে।
গাড়ি থামলো এক হোটেলের কাছে।তিনজন নামলাম ও হোটেলের দিকে এগুতে লাগলাম।এমন সময় বসের একটা ফোন এলো,তোমরা যাও আমি একটু আসছি বলে বস ফোনে কথা বলতে চলে গেল।
অনুশ্রী ম্যাডাম বললেন-তোমার নাম রুদ্র?
-হ্যা, রুদ্র রায়।
হঠাৎই সামনে দেখি রাজশ্রী ও মা হোটেলের গেট থেকে বেরোচ্ছে।রাজশ্রী কিছু বললো না,শুধু কটমট করে তাকিয়ে চলে গেল।মা কাছে এসে জিগ্যাস করলো-তুই এখানে?
আমি কিছু বলার আগেই বসের কণ্ঠশর শুনলাম-হ্যা, ওকে আমিই এখানে এনেছি,ও আজ আমাদের অফিস কে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে।আপনার ছেলে সত্যিই জিনিয়াস।
মা হালকা হেসে বললো-ধন্যবাদ,সবই আপনাদের দয়ায়।
মা চলে গেল।
খেতে খেতে অনুশ্রী ম্যাডাম জিজ্ঞাস করলেন-মেয়ে টা কে?তোমার স্ত্রী?
-হ্যা, আসলে....
-আসলে আজ বাইরে বেড়াতে নিয়ে যাবার কথা ছিল আর তুমি অফিসে ফেঁসে গেছো।
-ইয়ে হ্যা(লাজুক ভাবে)
-হা হা হা,সব বুজেছি।
আবার বস বললো-দ্যাখো রুদ্র তুমি আমাদের অফিস কে যে উচ্চতায় নিয়ে গেছো তাতে আমি খুব খুশি।তোমায় তিনদিন ছুটি দিলাম।স্ত্রী কে একটু সময় দাও।সোমবার অফিসে আবার দেখা হবে।
অনুশ্রী ম্যাডাম বললেন-তোমার স্ত্রীর সাথে তো আলাপ হলো না।অন্যদিন আলাপ করিয়ে দিও কেমন,তা স্ত্রীর নাম কী?
-রাজশ্রী(লাজুক ভাবে)
কলিং বেল টিপতেই মা দরজা খুলে দিলো।বললো-রাজশ্রী ঘুমাচ্ছে,ওকে আর ডাকিসনা।
ওকে আর না ডেকে মাথায় হাত বুলিয়ে,কপালে একটা চুমু খেয়ে আমিও ঘুমিয়ে পড়লাম।
এই হলো কালকের ঘটনা।আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি রাজশ্রী নেই,মা বললো- সে এই বেরোলো,আমায় প্রনাম করে বলল মা,বাবার কাছে যাচ্ছি।
তক্ষুনি কোনোরকমে রেডি হয়ে বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখি,রাজশ্রী বসে আছে।তখনই বাস এলো রাজশ্রী উঠে পড়লো,সাথে আমি।আর দখল করলাম এক্কেবারে ওর পাশের সিট টা।
বুজলে তো ব্যাপার টা কী?
আমি আবার বললাম-জানো কাল বস তিনদিনের ছুটি দিয়েছে আর রবিবার নিয়ে চারদিনের ছুটি।
-সত্যি(চোখ বড় বড় করে আমার দিকে তাকালো)
তারপর বাসভর্তি লোকের সামনে আমায় জড়িয়ে ধরল।বললাম-আরে কি করছো,সব্বাই দেখছে ছাড়ো।
ও বললো-আমারই তো বড়
(এটা সোসাল মিডিয়ায় পোস্ট করা আমার প্রথম গল্প।গল্পের সব চরিত্রই কাল্পনিক।অনিচ্ছাকৃত কোনো ভুল করে থাকলে ক্ষমা করে দেবেন।)

No comments

Powered by Blogger.