Header Ads

একটি বাল্যবিবাহ ও তার ভয়ংকর ফলাফল।

rj pavel

-- লাল শাড়ি মুড়ে বাসর ঘরে বসে থাকা মেয়েটি এখনো শাড়িতে কিভাবে ঘোমটা দিতে হয় সেটাই জানে না,আর সে তা জানবেই বা কিভাবে কারণ মাত্র ১৪ বছর বয়সে যে তার বিয়ের পিরিতে বসতে হবে এটাই অদ্ভুত একটা ব্যাপার, যে মেয়েটির কিনা এখন স্কুলের ব্যাগ কাধে নিয়ে দুষ্টুমিতে মেতে থেকে স্কুলে যাবার কথা,যে মেয়েটির কিনা তার বয়সি আর ৫ টা মেয়ের মতো পুতুল বা রান্না বাটি খেলায় মেতে থাকার কথা, জগতের নিষ্ঠুর এক নিয়মের কাছে হার মেনে সে এখন বাসর ঘরে বউ সেজে বসে আছে, যদি ও বিয়ে নামক শব্দটি বুঝলে ও এর মানে এখনো বুঝে উঠতে পারেনি মেয়েটি।
,
,
-- ঘটনার মেয়েটির নাম আলো,নামে আলো হলে ও জন্মের পর থেকে মেয়েটির জীবন ঘিরে ছিলো অন্ধকারে,কারণ আলোর পৃথীবির সব থেকে বড় আলোটা নিভে গিয়েছিলো,আলোর জন্মের কিছুক্ষণ পর মারা যায় তার মা,বাবা বেঁচে থেকে ও থেকেছে না থাকার মতো,আলোর দেখা শোনা আর নিজের কথা ভেবে আলোর মা মারা যাওয়ার ২ বছর পরে আলোর বাবা আবার বিয়ে করে,সৎ মা কোন দিন নিজের মা হতে পারে না, সেটা আলো জেনেছে বুঝেছে আর তার ভয়াবহতা আলো টের পেয়েছে খুব ভালোভাবেই,ছোট থেকে অত্যাচার আর অবহেলায় সব কষ্ট চাপা রেখে নিজের বাবার ঘরে তাকে বড় হতে হয়েছে নির্মম ভাবে।
,
,
-- আলোর বাবা কৃষি কাজ করে,নিজের একটুকরো জমি ছিলো কিন্তু তার বউয়ের কথায় সেই জমি বিক্রি করে কিছু টাকা তার মেয়ের নামে ব্যাংকে রেখেছে,ভাববেন না যে আলোর বাবার জমি বিক্রি করে ব্যাংকে রাখা টাকা আলোর নামে,এটা আলোর বাবার দ্বিতীয় স্ত্রীর একমাত্র মেয়ের জন্য,আলোর সৎ মা আগে থেকে নিজের মেয়ের ভবিস্যৎ এর কথা ভেবে এই পাকা কাজ করেছে "যাতে করে আলোর বাবা আলোকে কিছু দিতে না পারে,,,, জমি না থাকাতে আলোর বাবা অন্যের জমি বরগা নিয়ে ক্ষেত করতো আর মহাজনের কাছ থেকে ৬ মাস চুক্তিতে টাকা শুধ নিতো জমির ফসল বিক্রি করে তার সব টাকা শোধ করতো,কিন্তু আলোর ভাগ্যে খারাপ ছিলো তাই তো এবার ব্যাপক বন্যায় আলোর বাবার ক্ষেতের সব ফসল নষ্ট হয় আর তার বাবার কাছে মহাজনের ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে মহাজনের ৩ নাম্বার বউ হয়ে নিজেকে বলির পাঠা হতে হয় আলোকে,আলোর বাবা তার স্ত্রীর নামে রাখা ওই টাকা গুলি চেয়েছিলো তার কাছে,টাকা গুলি পেলে মহাজনের টাকা শোধ হয়ে যেতো কিন্তু তাতে সে রাজী হয়নি,,টাকা না দিলে ও সে মহাজনের সাথে আলোর বিয়ের আয়োজন করেছে নিজেই,আর বেশ অদ্ভুত একটা ব্যাপার হচ্ছে ৫২/৫৪ বছর বয়সী আলতাফ মহাজনের প্রথম স্ত্রীর ঘরে যে মেয়ে রয়েছে তার বয়স ১৫ বছর মানে মেয়েটা আলোর থেকে প্রায় বছর খানিক বড়,আর নিজের মেয়ের থেকে ও বয়সে ছোট একটা মেয়েকে খুব আগ্রহ নিয়ে বিয়ে করেছে আলতাফ।
,
,
-- বয়স মাত্র ১৪, আলো বাসর বা বাসর ঘরের ব্যাপার গুলি না বুঝলে ও আলতাফ এ ব্যাপারে বেশ অভিজ্ঞ,এর আগে ও সে বর বেসে সেজেছে ৮ বার,তার মধ্যে এখন দুজন থাকলে ও বাকিরা পালিয়েছে,সে যায় হোক,,,,বিয়ে করেছে আর বাসর রাত করবে না তা কি হয় নাকি,? ভাবতেই সামনে শুয়ে থাকা আলোর দিকে লালসার দৃষ্টিতে তাকিয়েছে আলতাফ,বোঝার ক্ষমতা বা সে বয়স হয়নি মেয়েটার, কতোটুকুই বা বয়স বুঝবে কিভাবে,না হলে কি কেউ পাশে মানুষ রূপি জানোয়ার রেখে ঘুমিয়ে পরে,মেয়ের বয়সি একটা মেয়েকে বিয়ে করতে যার বিবেকে বাধে না তার সাথে বাসর রাতের ফায়দা নিতে বাধবে কেনো? বিয়ে করা বউরের প্রতি এটা তো তার অধিকার, এরকম ভাবতেই জাপটে ধরে আলোর উপর হায়নার মতো ঝাপিয়ে পরে আলতাফ,,সেদিন রাতে একবার না বার বার ওরকম চাপ নিতে পারেনি আলো,পারবে কি করে মানুষিক চাপ না হয় বুক ভরা যন্ত্রনায় কাতর হয়ে চোঁখ বেয়ে নামিয়ে দেয়া যায় কিন্তু শারীরিক যন্ত্রণা বা চাপ কি করে নিবে এটুকু একটা মেয়ে,,,,,,,পরের দিন সকালে আর ঘুম থেকে জাগা হলো না আলোর,অন্ধকার রাতেই একটা নামধারী আলোর জীবনের সমাপ্তি ঘটলো,রাতেই যে আলোর জীবনের সব আলো নিভে গেছে ব্যাপারটা বুঝতে পারেনি আলতাফ নিজে ও,বুঝলে কি লাশের সাথে ও সে,,,,,,,,,,,,।

No comments

Powered by Blogger.