মেঘ না চাইতে জল
প্রায় সাত ঘন্টা বাসে বসে থেকে নিজের শহরে এসে পৌছলাম। তবে এখনো বাস স্টপ আসে নি। আমি ফাইনাল পরীক্ষা শেষ করে বাসায় ফিরছি। আমি রাজ আর গোপালগঞ্জ ভার্সিটিতে সিভিল সাবজেক্ট নিয়ে পড়ি। গতকাল আমার ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা শেষ হলো। এবার শুরু রেজাল্টের অপেক্ষা তাই আর ওই খানে না থেকে চলেই আসলাম বাড়িতে। যদিও সকাল সাড়ে ৫টার বাসে উঠছি তবুও আসতে আসতে সেই দুপুরই হলো।
নরসিংদী বাসস্টপে বাস থামতেই কেমন যেন ভাল লাগছে। কারন ৪ টা বছর পার করলাম অন্য একটা জেলায়। আবার নিজের জেলায় ফিরছি। তবে ওই খানের জন্যও খারাপ লাগছে। যাই হোক, এটাই তো কপাল তাই না। আর লেট না করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। বাড়িতে হয়ত সবাই আমার আশায় বসে আছে। প্রথমে ভাবলাম বাড়িতে আসবো এটা কাউকে না বলে সারপ্রাইজ দেই কিন্তু কাল যখন বাড়িতে ফোন দিলাম তখন অপরিচিত একটা মেয়ে ধরছিল। আর কেন যে বলে দিলাম আমি আসছি এটা নিজেই জানি না। আমি তো এই মেয়ের কথা মা বা বোনের কাছে কখনো শুনি নি। কাল যখন ফোন দিলাম...
-- হ্যালো মা কেমন আছো?
-- মা? মা রান্না ঘরে আছে তাই কি বলবেন আমায় বলেন?
-- আপনি কে?
-- এটা জানাটা কি খুব জরুরী?
-- আপাতত তাই মনে হচ্ছে।
-- আমি কে সেটা বাড়ি এসে জানলেও চলবে। এখন বলেন ফোন কেন দিয়েছেন?
-- মাকে বলবেন কাল আমি বাড়ি আসছি আর আমার পরীক্ষা শেষ হয়েছে আজ।
-- ওকে।
.
সেই কাল যখন ওই মেয়েটা ফোন ধরছে তখন থেকে কেমন যেন খটকা লাগছে। কে হতে পারে এই মেয়ে? আমাদের বাড়িতে কি বেড়াতে আসছে নাকি ছোট বোনের বান্ধবী। না কিছুতেই মিলছে না।
.
বাড়িতে এসে কলিংবেল চাপতেই দরজা খুলল আমার ছোট বোন দিয়া। আমাকে দেখে কেমন যেন কৌতুহল বশত আমার দিকে তাকালো।
-- হুমম ভাইয়া ভিতরে আসো।
-- কিরে তোর মুখ এমন চুপসে আছে কেন?
-- শুধু আমার না বরং বাড়ির সবার মুখই এমন হয়ে আছে।
-- কেন? কার কি হলো?
-- এমন একটা ভাব নিচ্ছো যেন ভাজাঁ মাছটা উল্টে খেতে পারো না। এই দিকে বিয়ে করে ফেললে আর আমাদের কেউ বললেও না।
-- মানে?
-- এতো মানে ভাবতে হবে না। তোমার রুমে গিয়ে দেখো ভাবি আছে।
.
এইসব কি হচ্ছে বুঝতে পারতাছি না। আমি বিয়ে করলাম আর আমি জানি না কিন্তু সবাই জানে। একদিন আমার একটা ফ্রেন্ড বলছিল আমি যদি হঠাৎ শুনি আমার বউ আছে তাহলে আমার কেমন ফিলিংস হবে। তখন এর উত্তর দিতে পারি নি তবে আজ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। মনে হচ্ছে আমায় এমন করে ফাসাঁলো কোন মেয়ে। খুব কৌতুহল নিয়ে ঘরের দিকে যেতে লাগলাম আর আমার হার্টবিট যেন বেড়েই চলছে। দরজা খুলতেই দেখি ঘরটা খুব সুন্দর করে সাজানো তবে ঘরে কেউ নেই। তাই বেলকনিতে গেলাম। সেখানে একটা মেয়ে আমার চারা গাছ গুলোতে পানি দিচ্ছিলো। আমি কিছু বলতে যাবো তখনই মেয়েটা আমার দিকে না তাকিয়ে বলল...
.
-- বাহ্ আপনার মনে তো অনেক কৌতুহল। আমাকে দেখার জন্য এক বারে সকালের বাসেই চলে আসলেন। মানতে হবে আপনি আমার বর।
.
কথাটা বলেই মেয়েটা আমার দিকে ফিরে তাকালো। আরে এতো সুচি, আমরা পাশাপাশি দুইটা স্কুলে পড়তাম। আমি বয়েজ স্কুলে আর ও গার্লস স্কুলে। আমি প্রতি দিন ওর পিচু পিছু বাড়ি আসতাম। তারপর দুইজনে একই সরকারী কলেজে ভর্তি হই। তারপর ভালই যাচ্ছিল দিন গুলো কিন্তু ওর সাথে আমি কখনো কথা বলি নি। আর এটা সত্যি যে আমি সুচি তখন ভালবাসতাম কিন্তু এখনো ভালবাসি তবে কলেজ পাশ করার পরে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে আমি গোপালগঞ্জ চলে আসি আর সুচির খবর নেওয়া হয় নি। তবে মাঝে মাঝে যখন বাড়ি আসতাম তখন ওদের বাড়ির দিকে যেতাম কিন্তু কখনো ওকে চোখে পড়তো না। প্রায় দুইবছর পার হয় যায় এমন করে তাই আমি ভাবলাম হয়ত ওর বিয়ে হয়ে গেছে তাই আর ওই দিকে যাই নি। কিন্তু বাড়িতে এসে এমন রেডিমেড বউ পেয়ে যাবো ভাবি নি। এখন তো মাথায় প্রশ্ন আর প্রশ্ন ঘুরছে। ও এখানে কি করে আসলো? আমার বাড়ি চিনলো কি করে? বাড়িতে এসে কি বলল?
.
-- কি হলো এতো কি ভাবছেন? মাথায় বুঝি প্রশ্নেরা উত্তর খুজছো।
ওর কথায় আমি বাস্তবে আসলাম। হারিয়েই গেছিলাম অতীতে।
-- হুমম। আপনি এখানে কেন আর আমি আপনায় বিয়ে করলাম কবে?
-- বিয়ে যে আমাদের হয় নি সেটা আমি জানি আর আপনি জানেন কিন্তু আমাদের দুই পরিবার তো জানে না।
-- ওই দেখেন আমি কিছু বুঝতে পারতেছি না। সব কিছু প্রথম থেকে একটু বলবেন?
-- ওকে, গত এক সপ্তাহ আগে বাড়িতে আমার বিয়ের কথা চলে। এমন কি ছেলের দেখা হয়ে যায় কিন্তু আমি তো আপনার মত একটা গাধাকে ভালবাসি তাই পালিয়ে আপনার বাড়িতে চলে আসি আর আপনার বাবা মা কে সব বলে দেই যে আপনি আর আমি বিয়ে করছি। তারপর ওনারা আপনাকে ফোন দিতে চায় কিন্তু আমি না করি। কারন আপনার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। পরে আপনার বাবা আমার বাবার সাথে কথা বলে। আজ আপনি বাড়িতে আসছেন তাই আজ রাতে আমার বাবা মা আপনাদের বাড়ি আসবে আর আমাদের বিয়ে নিয়ে কথা বলবে। এবার বাকি কাজটা আপনার হাতে....
-- আমার হাতে বাকি কাজ মানে?
-- মানে হলো ওনারা আসলে বলবেন আপনি আমায় বিয়ে করছেন। ঠিক আছে
-- কিন্তু এটা তো মিথ্যা।
-- এই মিথ্যাটাই বলতে হবে নয়ত বাবা আমায় নিয়ে যাবো আর অন্য কোথাও বিয়ে দিবে।
-- সব বুঝলাম। সব থেকে বড় কারন হলো আপনি বিয়ে করতে চান না তাই আমায় বাশঁটা দিলেন।
-- ওই কখন বললাম আমি বিয়ে করতে চাই না। আমি তো বললাম আপনার মত গাধাটাকে আমি ভালবাসছি আর আপনাকেই বিয়ে করতে চাই।
-- বাহ্ আপনি আমায় ভালবাসেন। কিন্তু আগে বলেন নি কেন?
-- কারন বিয়ের পরের ভালবাসাটাই ভালো তাই।
-- আচ্ছা যাই হোক, এবার বলেন আমার পরীক্ষা চলতাছে আপনাকে কে বলল?
-- আপনার বন্ধু তুহিন আমার আত্মীয় হয়। ওর সাথে আমি যোগাযোগ রাখতাম।
-- একেই হয়ত বলে ঘর শত্রু বিভীষন।( একটু আস্তে)
-- কিছু বললেন বুঝি?
-- না ভাবতেছি রাতে বাশঁটা কি করে সামলাবো। প্রথমত আমি বাবাকে ভয়ংকর মাত্রায় ভয় পাই। এখন তো আপনার বাবাও থাকবে। তো কি করা যায় বুঝতে পারছি না।
-- এতো ভাবনার কিছু নাই তো।
-- যদি বলতেন শুধু ভালবাসেন তাহলে ঠিক ছিল। সেটা সামলে নিতে পারতাম কিন্তু বলছেন বিয়ে করছি। আপনি কি জানেন আমি সবাইকে জ্ঞান দেই বিয়ে বাবা মায়ের পছন্দে করতে। এখন তো সামনে পিছনে সমানেই বাশ দিলেন।
-- আপনি বুঝি আমায় ভালবাসেন না। আর আমার জন্য এইটুকু করতে পারবেন না তাহলে কি স্কুল কলেজের সামনে বৃষ্টিতে ভিজে আমার জন্য অপেক্ষা করাটা ভুল ছিল।
-- আসলে তা না।
-- আমি বুঝতে পারছি আপনি আমায় ভালবাসতেন না। আচ্ছা আমি সবাইকে সব সত্যি বলে দিচ্ছি।
-- আরে রেগে যাচ্ছেন কেন?
-- না রাগি নি। ( চুপ হয়ে গেল)
-- হুমম বুঝলাম।
-- আচ্ছা কখনো মেঘ না চাইতে জল প্রবাদটা পড়ছেন।
-- জানি না।
-- জানেন কিন্তু বলবেন না। আসলে কি আমার জীবনে ঠিক এটাই ঘটলো। কষ্ট না করেই ফল পেলাম। সেই গত ৮ বছর ধরে যাকে লুকিয়ে লুকিয়ে ভালবেসে আসলাম সে আজ আমার সামনে এমন করে আসবে ভাবতেও পারি নি।
-- হুহ আপনার মত আমি ভীতু না ওকে।
-- ওই শুনেন আমিও ভীতু না।
-- সেটা রাতে আমার বাবার সামনেই বুঝা যাবে।
.
হঠাৎ মা ডাক দিলো তাই আর কথা না বলে মায়ের সামনে গেলাম।মায়ের সামনে যেতে দেখি ওনিও চুপ। জানি এমনটাই হবে কারন আমার মায়েরও স্বপ্ন ছিল নিজের ছেলের বউ নিজে পছন্দ করবে। তবে সুচি দেখতে তো ভালই তাই মনে হয় মেনে নিয়েছে। আর তাছাড়া মানুষের সৌন্দর্য তো কারো চেহারায় থাকে না, থাকে তার মনে।
-- মা বলো।
-- ফ্রেশ হয়ে এসে খেয়ে নে। অনেকটা রাস্তা জার্সি করেছিস।
বলেই মা বলে যাচ্ছিল। বুঝাই যাচ্ছে যে মা রাগ করে আছে। তাই আমি ওনার সামনে গেলাম আর ওনার সামনে হাটু ঘেরে বসলাম।
-- মা জানি তুমি আমার এমন কাজে রেগে আছো কিন্তু...
-- বাবা রে কোন বাবা মা তার সন্তানের উপর রাগে না বরং একটু অভিমান করে। আর তুই যে বিয়ে করেছিস এটা আমায় জানাতে পারতি। জানিস তো তোর মা সব সময় তোর পাশে আছে। আর সুচি মেয়েটা খুব লক্ষি রে। তোর বাবার মনও মেয়েটা জয় করে নিয়েছে।
-- ও ভাল কথা। বাবা কোথায়?
-- অফিসে আছে আর রাতে তো তোর শশুর বাড়ি থেকে লোক আসবে জানিস তো।
-- হুমম ব্যাচেলার শশুর বাড়ি আর কি?
-- মানে।
-- না তেমন কিছু না। আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি খুব খুদা লাগছে।
.
কথা শেষ করে রুমে আসলাম। এসে দেখি মেডাম মহারাণী খাটের উপর পায়ের উপর পা তুলে কি যেন দেখছে।
-- কি দেখা হচ্ছে শুনি?
-- এই বাড়ির ছবির এলবাম। কাল রাতে দিয়া নিয়ে আসছিল দেখাতে, কিন্তু পরে এখানে রেখেই চলেই গেছে।
-- ও দেখেন।
-- আচ্ছা এই প্যান্ট না পড়া ছেলেটা কে?
-- আরে মান সম্মান কিছু রেখে তো কথা বলেন। এটা তো আপনার ব্যাচেলার স্বামীর ছবি।
-- হি হি হি।
-- ওই চুপ। আমি ফ্রেশ হতে গেলাম।
.
ফ্রেশ হয়ে এসে খেয়ে দেয়ে দিলাম একটা ঘুম। শরীর ক্লান্ত থাকায় কখন যে চোখ লেগে গেল খেয়ালই ছিল না। হঠাৎ বাইরের ঘর থেকে বাবার ডাকে ঘুমটা ভাঙ্গলো। ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি সাতটার উপর বাজে। মানে একটু পরে সুচিদের বাড়ি থেকেও লোকজন আসতে শুরু করবে। আর আমার বাবা এর আগেই আমায় পিরিত দেখাবেন।আমি কোন রকমে মুখে জল দিয়ে বাবার সামনে গিয়ে হাজির হলাম।
.
-- এই যে আমার গুনধর পুত্র তুই কাজটা কি করলি এটা?
-- ( আমি চুপ)
-- এটা কি তুই সিনেমা মনে করিস। বিয়ে করবি আর মেনে নিবো। আমাদের সমাজ মেনে চলতে হয়। ইচ্ছা করছে তোরে বাড়ি থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বার করে দেই কিন্তু শুধু এই মেয়েটার মুখ দেখে তোকে বাড়ি থেকে তাড়ালাম না।
-- আমিও তো এই মেয়ের মুখটা দেখেই বিয়ে করে ফেলছি। ( অনইচ্ছাকৃত ভাবে কথাটা বলে ফেললাম।)
-- ঠাস ( বুঝতে কি বাকি আছে এটা কিসের শব্দ)
-- সরি বাবা।
-- তুই তো আমায় বলতে পারতি। আজ পর্যন্ত তোর কোন কথাটা রাখি নি বল তো। তোর তো একটা ছোট বোন আছে। ও তোর থেকে কি শিখবে বল তো।
-- ( আমি চুপ হয়ে দিয়ার দিকে তাকালাম। কিন্তু আজব ও হাসছে)
-- এখানে আর দাড়িয়ে না থেকে রুমে যা। এখনি মেয়ের বাড়ির লোকজন আসবে বলে।
.
আমি আর না দাড়িয়ে রুমে চলে আসলাম। রুমে যেতে দেখি সুচি কি হাসি যেন এখানে বান্দর নাচ দেখানো হচ্ছে।
-- ওই হাসবে না একদম। চড়টা আপনার জন্যই খেলাম।
-- এই না হলে আমার হিরো। এবার আমার বাবা আসলে আরেকটা চড় খেয়ে অফ সাইডে গোল দিয়ে ওনার মেয়েকে জয় করে নিবে।
-- ওই এটা কি ফুটবল ম্যাচ পাইলেন।
-- হুমম।
.
আর কোন কথা না বলে বসে বসে ভাবছি সুচির বাবা আসলে কি বলো। আমার ভাবনার সময়ে পানি দিয়ে ওনারা এসে হাজির। তখন বাবার সাথে দেখলাম কুলাকুলি করলো বাড়িতে এসেই। বুঝলাম না কিছুই। তবে কি ওনারা সব মেনে নিয়েছেন। যাই হোক, ওনারা কথা বলছে আর আমি রুমে থেকে আড়ি পাতার চেষ্টা করছি। হঠাৎ দিয়া এসে বলল ভাইয়া তোরে ডাকছে। আমি কথা শুনা মাত্রই গালে হাত দিয়ে সুচির দিকে তাকালাম আর এই মেয়ে যে কি হাসি হাসছে? আমি কাঁচুমাচু হয়ে সবার সামনে গেলাম।
.
-- তাহলে তুমিই রাজ। ( মনে হয় সুচির বাবা)
-- জ্বী।
-- পালিয়ে বিয়ে করার দরকার কি ছিল?
--( আমি চুপ)
-- প্রথমে ভাবলাম তোমার নামে কেস করবো পুলিশে কিন্তু তোমার বাবা খুব ভাল মানুষ বিধায় আর এইসব করি নি। তাছাড়া তোমারও তো একটা ভবিষ্যৎ আছে। যখন প্রথম বিয়ের কথা শুনি আমি অনেক রেগে গেছি কিন্তু একমাত্র তোমার বাবার কথায় তোমায় মাফ করলাম।
-- ধন্যবাদ আসলে সবাইকে একটা সত্যি বলার দরকার আছে। আমি চাই না আমাদের জীবনটা মিথ্যা দিয়ে শুরু হোক। আসলে আমাদের বিয়ে হয় নি কিন্তু আমরা একে অপরকে ভালবাসি। কিন্তু সুচি যদি বলতো শুধু আমরা একে অপরকে ভালবাসি তাহলে আপনি সুচিকে অন্য কোথাও বিয়ে দিবেন তাই ও মিথ্যা বলল যে আমাদের বিয়ে হয়েছে।
নরসিংদী বাসস্টপে বাস থামতেই কেমন যেন ভাল লাগছে। কারন ৪ টা বছর পার করলাম অন্য একটা জেলায়। আবার নিজের জেলায় ফিরছি। তবে ওই খানের জন্যও খারাপ লাগছে। যাই হোক, এটাই তো কপাল তাই না। আর লেট না করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। বাড়িতে হয়ত সবাই আমার আশায় বসে আছে। প্রথমে ভাবলাম বাড়িতে আসবো এটা কাউকে না বলে সারপ্রাইজ দেই কিন্তু কাল যখন বাড়িতে ফোন দিলাম তখন অপরিচিত একটা মেয়ে ধরছিল। আর কেন যে বলে দিলাম আমি আসছি এটা নিজেই জানি না। আমি তো এই মেয়ের কথা মা বা বোনের কাছে কখনো শুনি নি। কাল যখন ফোন দিলাম...
-- হ্যালো মা কেমন আছো?
-- মা? মা রান্না ঘরে আছে তাই কি বলবেন আমায় বলেন?
-- আপনি কে?
-- এটা জানাটা কি খুব জরুরী?
-- আপাতত তাই মনে হচ্ছে।
-- আমি কে সেটা বাড়ি এসে জানলেও চলবে। এখন বলেন ফোন কেন দিয়েছেন?
-- মাকে বলবেন কাল আমি বাড়ি আসছি আর আমার পরীক্ষা শেষ হয়েছে আজ।
-- ওকে।
.
সেই কাল যখন ওই মেয়েটা ফোন ধরছে তখন থেকে কেমন যেন খটকা লাগছে। কে হতে পারে এই মেয়ে? আমাদের বাড়িতে কি বেড়াতে আসছে নাকি ছোট বোনের বান্ধবী। না কিছুতেই মিলছে না।
.
বাড়িতে এসে কলিংবেল চাপতেই দরজা খুলল আমার ছোট বোন দিয়া। আমাকে দেখে কেমন যেন কৌতুহল বশত আমার দিকে তাকালো।
-- হুমম ভাইয়া ভিতরে আসো।
-- কিরে তোর মুখ এমন চুপসে আছে কেন?
-- শুধু আমার না বরং বাড়ির সবার মুখই এমন হয়ে আছে।
-- কেন? কার কি হলো?
-- এমন একটা ভাব নিচ্ছো যেন ভাজাঁ মাছটা উল্টে খেতে পারো না। এই দিকে বিয়ে করে ফেললে আর আমাদের কেউ বললেও না।
-- মানে?
-- এতো মানে ভাবতে হবে না। তোমার রুমে গিয়ে দেখো ভাবি আছে।
.
এইসব কি হচ্ছে বুঝতে পারতাছি না। আমি বিয়ে করলাম আর আমি জানি না কিন্তু সবাই জানে। একদিন আমার একটা ফ্রেন্ড বলছিল আমি যদি হঠাৎ শুনি আমার বউ আছে তাহলে আমার কেমন ফিলিংস হবে। তখন এর উত্তর দিতে পারি নি তবে আজ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। মনে হচ্ছে আমায় এমন করে ফাসাঁলো কোন মেয়ে। খুব কৌতুহল নিয়ে ঘরের দিকে যেতে লাগলাম আর আমার হার্টবিট যেন বেড়েই চলছে। দরজা খুলতেই দেখি ঘরটা খুব সুন্দর করে সাজানো তবে ঘরে কেউ নেই। তাই বেলকনিতে গেলাম। সেখানে একটা মেয়ে আমার চারা গাছ গুলোতে পানি দিচ্ছিলো। আমি কিছু বলতে যাবো তখনই মেয়েটা আমার দিকে না তাকিয়ে বলল...
.
-- বাহ্ আপনার মনে তো অনেক কৌতুহল। আমাকে দেখার জন্য এক বারে সকালের বাসেই চলে আসলেন। মানতে হবে আপনি আমার বর।
.
কথাটা বলেই মেয়েটা আমার দিকে ফিরে তাকালো। আরে এতো সুচি, আমরা পাশাপাশি দুইটা স্কুলে পড়তাম। আমি বয়েজ স্কুলে আর ও গার্লস স্কুলে। আমি প্রতি দিন ওর পিচু পিছু বাড়ি আসতাম। তারপর দুইজনে একই সরকারী কলেজে ভর্তি হই। তারপর ভালই যাচ্ছিল দিন গুলো কিন্তু ওর সাথে আমি কখনো কথা বলি নি। আর এটা সত্যি যে আমি সুচি তখন ভালবাসতাম কিন্তু এখনো ভালবাসি তবে কলেজ পাশ করার পরে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে আমি গোপালগঞ্জ চলে আসি আর সুচির খবর নেওয়া হয় নি। তবে মাঝে মাঝে যখন বাড়ি আসতাম তখন ওদের বাড়ির দিকে যেতাম কিন্তু কখনো ওকে চোখে পড়তো না। প্রায় দুইবছর পার হয় যায় এমন করে তাই আমি ভাবলাম হয়ত ওর বিয়ে হয়ে গেছে তাই আর ওই দিকে যাই নি। কিন্তু বাড়িতে এসে এমন রেডিমেড বউ পেয়ে যাবো ভাবি নি। এখন তো মাথায় প্রশ্ন আর প্রশ্ন ঘুরছে। ও এখানে কি করে আসলো? আমার বাড়ি চিনলো কি করে? বাড়িতে এসে কি বলল?
.
-- কি হলো এতো কি ভাবছেন? মাথায় বুঝি প্রশ্নেরা উত্তর খুজছো।
ওর কথায় আমি বাস্তবে আসলাম। হারিয়েই গেছিলাম অতীতে।
-- হুমম। আপনি এখানে কেন আর আমি আপনায় বিয়ে করলাম কবে?
-- বিয়ে যে আমাদের হয় নি সেটা আমি জানি আর আপনি জানেন কিন্তু আমাদের দুই পরিবার তো জানে না।
-- ওই দেখেন আমি কিছু বুঝতে পারতেছি না। সব কিছু প্রথম থেকে একটু বলবেন?
-- ওকে, গত এক সপ্তাহ আগে বাড়িতে আমার বিয়ের কথা চলে। এমন কি ছেলের দেখা হয়ে যায় কিন্তু আমি তো আপনার মত একটা গাধাকে ভালবাসি তাই পালিয়ে আপনার বাড়িতে চলে আসি আর আপনার বাবা মা কে সব বলে দেই যে আপনি আর আমি বিয়ে করছি। তারপর ওনারা আপনাকে ফোন দিতে চায় কিন্তু আমি না করি। কারন আপনার ফাইনাল পরীক্ষা চলছে। পরে আপনার বাবা আমার বাবার সাথে কথা বলে। আজ আপনি বাড়িতে আসছেন তাই আজ রাতে আমার বাবা মা আপনাদের বাড়ি আসবে আর আমাদের বিয়ে নিয়ে কথা বলবে। এবার বাকি কাজটা আপনার হাতে....
-- আমার হাতে বাকি কাজ মানে?
-- মানে হলো ওনারা আসলে বলবেন আপনি আমায় বিয়ে করছেন। ঠিক আছে
-- কিন্তু এটা তো মিথ্যা।
-- এই মিথ্যাটাই বলতে হবে নয়ত বাবা আমায় নিয়ে যাবো আর অন্য কোথাও বিয়ে দিবে।
-- সব বুঝলাম। সব থেকে বড় কারন হলো আপনি বিয়ে করতে চান না তাই আমায় বাশঁটা দিলেন।
-- ওই কখন বললাম আমি বিয়ে করতে চাই না। আমি তো বললাম আপনার মত গাধাটাকে আমি ভালবাসছি আর আপনাকেই বিয়ে করতে চাই।
-- বাহ্ আপনি আমায় ভালবাসেন। কিন্তু আগে বলেন নি কেন?
-- কারন বিয়ের পরের ভালবাসাটাই ভালো তাই।
-- আচ্ছা যাই হোক, এবার বলেন আমার পরীক্ষা চলতাছে আপনাকে কে বলল?
-- আপনার বন্ধু তুহিন আমার আত্মীয় হয়। ওর সাথে আমি যোগাযোগ রাখতাম।
-- একেই হয়ত বলে ঘর শত্রু বিভীষন।( একটু আস্তে)
-- কিছু বললেন বুঝি?
-- না ভাবতেছি রাতে বাশঁটা কি করে সামলাবো। প্রথমত আমি বাবাকে ভয়ংকর মাত্রায় ভয় পাই। এখন তো আপনার বাবাও থাকবে। তো কি করা যায় বুঝতে পারছি না।
-- এতো ভাবনার কিছু নাই তো।
-- যদি বলতেন শুধু ভালবাসেন তাহলে ঠিক ছিল। সেটা সামলে নিতে পারতাম কিন্তু বলছেন বিয়ে করছি। আপনি কি জানেন আমি সবাইকে জ্ঞান দেই বিয়ে বাবা মায়ের পছন্দে করতে। এখন তো সামনে পিছনে সমানেই বাশ দিলেন।
-- আপনি বুঝি আমায় ভালবাসেন না। আর আমার জন্য এইটুকু করতে পারবেন না তাহলে কি স্কুল কলেজের সামনে বৃষ্টিতে ভিজে আমার জন্য অপেক্ষা করাটা ভুল ছিল।
-- আসলে তা না।
-- আমি বুঝতে পারছি আপনি আমায় ভালবাসতেন না। আচ্ছা আমি সবাইকে সব সত্যি বলে দিচ্ছি।
-- আরে রেগে যাচ্ছেন কেন?
-- না রাগি নি। ( চুপ হয়ে গেল)
-- হুমম বুঝলাম।
-- আচ্ছা কখনো মেঘ না চাইতে জল প্রবাদটা পড়ছেন।
-- জানি না।
-- জানেন কিন্তু বলবেন না। আসলে কি আমার জীবনে ঠিক এটাই ঘটলো। কষ্ট না করেই ফল পেলাম। সেই গত ৮ বছর ধরে যাকে লুকিয়ে লুকিয়ে ভালবেসে আসলাম সে আজ আমার সামনে এমন করে আসবে ভাবতেও পারি নি।
-- হুহ আপনার মত আমি ভীতু না ওকে।
-- ওই শুনেন আমিও ভীতু না।
-- সেটা রাতে আমার বাবার সামনেই বুঝা যাবে।
.
হঠাৎ মা ডাক দিলো তাই আর কথা না বলে মায়ের সামনে গেলাম।মায়ের সামনে যেতে দেখি ওনিও চুপ। জানি এমনটাই হবে কারন আমার মায়েরও স্বপ্ন ছিল নিজের ছেলের বউ নিজে পছন্দ করবে। তবে সুচি দেখতে তো ভালই তাই মনে হয় মেনে নিয়েছে। আর তাছাড়া মানুষের সৌন্দর্য তো কারো চেহারায় থাকে না, থাকে তার মনে।
-- মা বলো।
-- ফ্রেশ হয়ে এসে খেয়ে নে। অনেকটা রাস্তা জার্সি করেছিস।
বলেই মা বলে যাচ্ছিল। বুঝাই যাচ্ছে যে মা রাগ করে আছে। তাই আমি ওনার সামনে গেলাম আর ওনার সামনে হাটু ঘেরে বসলাম।
-- মা জানি তুমি আমার এমন কাজে রেগে আছো কিন্তু...
-- বাবা রে কোন বাবা মা তার সন্তানের উপর রাগে না বরং একটু অভিমান করে। আর তুই যে বিয়ে করেছিস এটা আমায় জানাতে পারতি। জানিস তো তোর মা সব সময় তোর পাশে আছে। আর সুচি মেয়েটা খুব লক্ষি রে। তোর বাবার মনও মেয়েটা জয় করে নিয়েছে।
-- ও ভাল কথা। বাবা কোথায়?
-- অফিসে আছে আর রাতে তো তোর শশুর বাড়ি থেকে লোক আসবে জানিস তো।
-- হুমম ব্যাচেলার শশুর বাড়ি আর কি?
-- মানে।
-- না তেমন কিছু না। আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি খুব খুদা লাগছে।
.
কথা শেষ করে রুমে আসলাম। এসে দেখি মেডাম মহারাণী খাটের উপর পায়ের উপর পা তুলে কি যেন দেখছে।
-- কি দেখা হচ্ছে শুনি?
-- এই বাড়ির ছবির এলবাম। কাল রাতে দিয়া নিয়ে আসছিল দেখাতে, কিন্তু পরে এখানে রেখেই চলেই গেছে।
-- ও দেখেন।
-- আচ্ছা এই প্যান্ট না পড়া ছেলেটা কে?
-- আরে মান সম্মান কিছু রেখে তো কথা বলেন। এটা তো আপনার ব্যাচেলার স্বামীর ছবি।
-- হি হি হি।
-- ওই চুপ। আমি ফ্রেশ হতে গেলাম।
.
ফ্রেশ হয়ে এসে খেয়ে দেয়ে দিলাম একটা ঘুম। শরীর ক্লান্ত থাকায় কখন যে চোখ লেগে গেল খেয়ালই ছিল না। হঠাৎ বাইরের ঘর থেকে বাবার ডাকে ঘুমটা ভাঙ্গলো। ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি সাতটার উপর বাজে। মানে একটু পরে সুচিদের বাড়ি থেকেও লোকজন আসতে শুরু করবে। আর আমার বাবা এর আগেই আমায় পিরিত দেখাবেন।আমি কোন রকমে মুখে জল দিয়ে বাবার সামনে গিয়ে হাজির হলাম।
.
-- এই যে আমার গুনধর পুত্র তুই কাজটা কি করলি এটা?
-- ( আমি চুপ)
-- এটা কি তুই সিনেমা মনে করিস। বিয়ে করবি আর মেনে নিবো। আমাদের সমাজ মেনে চলতে হয়। ইচ্ছা করছে তোরে বাড়ি থেকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বার করে দেই কিন্তু শুধু এই মেয়েটার মুখ দেখে তোকে বাড়ি থেকে তাড়ালাম না।
-- আমিও তো এই মেয়ের মুখটা দেখেই বিয়ে করে ফেলছি। ( অনইচ্ছাকৃত ভাবে কথাটা বলে ফেললাম।)
-- ঠাস ( বুঝতে কি বাকি আছে এটা কিসের শব্দ)
-- সরি বাবা।
-- তুই তো আমায় বলতে পারতি। আজ পর্যন্ত তোর কোন কথাটা রাখি নি বল তো। তোর তো একটা ছোট বোন আছে। ও তোর থেকে কি শিখবে বল তো।
-- ( আমি চুপ হয়ে দিয়ার দিকে তাকালাম। কিন্তু আজব ও হাসছে)
-- এখানে আর দাড়িয়ে না থেকে রুমে যা। এখনি মেয়ের বাড়ির লোকজন আসবে বলে।
.
আমি আর না দাড়িয়ে রুমে চলে আসলাম। রুমে যেতে দেখি সুচি কি হাসি যেন এখানে বান্দর নাচ দেখানো হচ্ছে।
-- ওই হাসবে না একদম। চড়টা আপনার জন্যই খেলাম।
-- এই না হলে আমার হিরো। এবার আমার বাবা আসলে আরেকটা চড় খেয়ে অফ সাইডে গোল দিয়ে ওনার মেয়েকে জয় করে নিবে।
-- ওই এটা কি ফুটবল ম্যাচ পাইলেন।
-- হুমম।
.
আর কোন কথা না বলে বসে বসে ভাবছি সুচির বাবা আসলে কি বলো। আমার ভাবনার সময়ে পানি দিয়ে ওনারা এসে হাজির। তখন বাবার সাথে দেখলাম কুলাকুলি করলো বাড়িতে এসেই। বুঝলাম না কিছুই। তবে কি ওনারা সব মেনে নিয়েছেন। যাই হোক, ওনারা কথা বলছে আর আমি রুমে থেকে আড়ি পাতার চেষ্টা করছি। হঠাৎ দিয়া এসে বলল ভাইয়া তোরে ডাকছে। আমি কথা শুনা মাত্রই গালে হাত দিয়ে সুচির দিকে তাকালাম আর এই মেয়ে যে কি হাসি হাসছে? আমি কাঁচুমাচু হয়ে সবার সামনে গেলাম।
.
-- তাহলে তুমিই রাজ। ( মনে হয় সুচির বাবা)
-- জ্বী।
-- পালিয়ে বিয়ে করার দরকার কি ছিল?
--( আমি চুপ)
-- প্রথমে ভাবলাম তোমার নামে কেস করবো পুলিশে কিন্তু তোমার বাবা খুব ভাল মানুষ বিধায় আর এইসব করি নি। তাছাড়া তোমারও তো একটা ভবিষ্যৎ আছে। যখন প্রথম বিয়ের কথা শুনি আমি অনেক রেগে গেছি কিন্তু একমাত্র তোমার বাবার কথায় তোমায় মাফ করলাম।
-- ধন্যবাদ আসলে সবাইকে একটা সত্যি বলার দরকার আছে। আমি চাই না আমাদের জীবনটা মিথ্যা দিয়ে শুরু হোক। আসলে আমাদের বিয়ে হয় নি কিন্তু আমরা একে অপরকে ভালবাসি। কিন্তু সুচি যদি বলতো শুধু আমরা একে অপরকে ভালবাসি তাহলে আপনি সুচিকে অন্য কোথাও বিয়ে দিবেন তাই ও মিথ্যা বলল যে আমাদের বিয়ে হয়েছে।
সবাই আমাদের কথা শুনে যেন আকাশ থেকে পড়লো। তখন সুচিও আসল আর ও বললো....
-- হ্যা এটাই সত্যি। বিয়ে আটকাতেই আমি মিথ্যা বলেছি। আর মিথ্যা দিয়ে নয় বরং আপনাদের দোয়া দিয়ে আমাদের জীবন শুরু করতে চাই।
.
পরে বাবা বললো আমাদের দুইজনকে রুমে যাওয়ার কথা। আমরা রুমে যেতেই সুচি আমার হাতটা শক্ত করে ধরলো। আমি ওর দিকে তাকাতে দেখি ও কাদছে।
-- কি হলো কাদছোঁ কেন?
-- যদি বাবা আমায় নিয়ে যায় আর অন্য কোথাও বিয়ে দেয়।
-- ভয় কিসের? হয়ত মিথ্যা বলে পারতাম জীবনটা শুরু করতে কিন্তু হয়ত সুখের হত না জীবনটা। বড়দের আশির্বাদ খুব প্রয়োজন এই জীবনে।
-- আচ্ছা আর কষ্ট পাবো না। যা হবে তাই মেনে নিবো।
-- এই তো গুডড।
-- হুহ
তখনই হঠাৎ বাবা আমাদের ডাক দিলো। আমি সুচির হাতটা ধরেই সবার সামনে গেলাম।
-- তোমরা কি চাও? ( বাবা আমাদের বলল)
-- আপনারা যা সিদ্ধান্ত নিবেন তাই মেনে নিবো। কারন বড়রা যা করবে তা আমাদের ভালোর জন্যই করবে।
-- হ্যা এটাই সত্যি। বিয়ে আটকাতেই আমি মিথ্যা বলেছি। আর মিথ্যা দিয়ে নয় বরং আপনাদের দোয়া দিয়ে আমাদের জীবন শুরু করতে চাই।
.
পরে বাবা বললো আমাদের দুইজনকে রুমে যাওয়ার কথা। আমরা রুমে যেতেই সুচি আমার হাতটা শক্ত করে ধরলো। আমি ওর দিকে তাকাতে দেখি ও কাদছে।
-- কি হলো কাদছোঁ কেন?
-- যদি বাবা আমায় নিয়ে যায় আর অন্য কোথাও বিয়ে দেয়।
-- ভয় কিসের? হয়ত মিথ্যা বলে পারতাম জীবনটা শুরু করতে কিন্তু হয়ত সুখের হত না জীবনটা। বড়দের আশির্বাদ খুব প্রয়োজন এই জীবনে।
-- আচ্ছা আর কষ্ট পাবো না। যা হবে তাই মেনে নিবো।
-- এই তো গুডড।
-- হুহ
তখনই হঠাৎ বাবা আমাদের ডাক দিলো। আমি সুচির হাতটা ধরেই সবার সামনে গেলাম।
-- তোমরা কি চাও? ( বাবা আমাদের বলল)
-- আপনারা যা সিদ্ধান্ত নিবেন তাই মেনে নিবো। কারন বড়রা যা করবে তা আমাদের ভালোর জন্যই করবে।
তখন সুচির বাবা আমার সামনে আসলো আর আমার কাধেঁ হাত রাখলো।
-- তোমার কথায় আমি খুশি বাবা। তুমি মানুষটাও ভাল। আর আমি আর তোমার বাবা মিলে এটা ঠিক করলাম যে আগামী শুক্রবার আয়োজনেরর সহিত তোমাদের বিয়ে হবে।
.
আমি শুধু সুচির হাতটা আরেকটু শক্ত করে ধরলাম। আমি চাই নি মিথ্যা দিয়ে কিছু শুরু হোক। হাজার মিথ্যার থেকে একটা সত্যির দাম অনেক।
-- তোমার কথায় আমি খুশি বাবা। তুমি মানুষটাও ভাল। আর আমি আর তোমার বাবা মিলে এটা ঠিক করলাম যে আগামী শুক্রবার আয়োজনেরর সহিত তোমাদের বিয়ে হবে।
.
আমি শুধু সুচির হাতটা আরেকটু শক্ত করে ধরলাম। আমি চাই নি মিথ্যা দিয়ে কিছু শুরু হোক। হাজার মিথ্যার থেকে একটা সত্যির দাম অনেক।
No comments