Header Ads

পাগলী

দুপুর ঠিক ১২টা.... সিমান্ত বাস স্টান্ডে দাঁড়িয়ে আছে...একটা বাসের অপেক্ষায়..কিন্তু তার জন্য যে অন্যকিছু অপেক্ষা করছে..সে কি জানত...!!
.
হঠাত সিমান্তের পিছন থেকে তার চোখ ধরলো কেউ...
হাত সরিয়ে পিছনে ফিরেই...
সিমান্ত:: কে আপনি??
কবিতা:: তোমার #পাগলী
সিমান্ত:: মানে?? পাগল নাকি??
কবিতা:: না পাগলী..
সিমান্ত:: আমার কাছে কি চান..
কবিতা:: অনেক খুজে পেয়েছি তুমাকে...আর ছাড়ছি না...
সিমান্ত:: কি সব বলছেন এসব...
কবিতা:: তোমার নাম্বার দাও
সিমান্ত:: আপনাকে কেন দিব?
কবিতা:: না দিলে কিন্তু গাড়ির নিচে লাফ দিব.. এই বলে রাস্তার মাঝে চলে গেল...
সিমান্ত:: আরে দিচ্ছি দিচ্ছি...
(তারপর নাম্বার নিয়ে কবিতা একটা মুচকি হাসি মেরে চলে গেল)
সিমান্ত ভাবছে ""এত সুন্দর একটা মেয়ে!! আমার অতিতকে ভুলানোরর জন্যই কি তার আসা?? আমাকে ফাসাচ্ছে না তো? শুধু নাম্বারি তো নিয়েছে... খারাপ কিছু দেখলে বাদ দিয়ে দিব.....
(তারপর থেকে সিমান্তের সাথে কবিতার কথা হতো,, তারা দেখাও করতো)
শুরু হয়ে গেল তাদের রিলেশন...
একদিন রাত ২টা বাজে কবিতা সিমান্তকে ফোন দিসে...
কবিতা;:' কই তুমি??
সিমান্ত:: নদীর মাঝখানে... এতরাতে কই থাকব???
কবিতা:: আচ্ছা যাই হোক... তারাতারি ফুসকা নিয়ে আমার বাসার সামনে আসো..
সিমান্ত:: এতরাতে ফুসকা...?
কবিতা;: হম খাবো..
সিমান্ত:: ফেসবুকে গল্পে পড়েছিলাম গফ রাত ২টায় আইসক্রিম খেতে চায়.. আর তুমি ফুসকা??
কবিতা:: আইসক্রিম তো যখন তখন আনা যায়... তুমি এখন ফুসকা আনবা..আর প্রমান করবা তুমি দুনিয়ার সবচাইতে বেস্ট বফ...
সিমান্ত::: ""এ কার পাল্লায় পরলাম রে""
.
তারপর সিমান্ত তার বন্ধুকে ঘুম থেকে উঠিয়ে নিয়ে গেল ফুসকাওয়ালার বাসায়... ফুসকাওয়ালার ঘুম ভাংগিয়ে... ১০০ টাকার ফুসকা ৫০০ টাকা দিয়ে কিনে নিয়ে কবিতাকে দেয়....
কবিতা ফুসকাগুলা পাশে রেখে ""সিমান্তকে জড়িয়ে ধরে আর বলে ""আমাকে কখনো ছেড়ে যেও না""""
সিমান্ত:: আচ্ছা...এখন আমাকে ছাড়... কেউ এসে পড়বে...
কবিতা:: শয়তান একটা...
তারপর দুজন মিলেই ফুসকা খেল.....
এভাবেই চলছিল তাদের রিলেশন.....
একদিন একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন আসে সিমান্তর কাছে...
সিমান্ত:: হ্যালো কে?
কবিতার মা:: আমি কবিতার মা..
সিমান্ত:: (ভয়ে) আন্টি আসসালামু আলাইকুম
মা:: অয়ালাইকুম... কে তুমি??
সিমান্ত:: জি আমি সিমান্ত।।
মা:: কোন সিমান্ত??
সিমান্ত:: আপনি আমাকে চিনবেন না..
মা:: তুমি আমার সাথে দেখা কর...
(তারপর সিমান্ত আর কবিতার মা একটি রেস্টুরেন্টে দেখা করলো)
সিমান্ত ভয়ে কাপছে...
এদিকে কবিতার ফোন বন্ধ...
মা:: আমার মেয়েকে কতদিন যাবত চিন??
সিমান্ত:: আমাদের ২ মাসের রিলেশন..
মা':: আচ্ছা... তার ব্যাপারে কতটুকু যান তুমি??
সিমান্ত:: ""ও আমাকে ভালবাসে""এতটুকু জানি.. আর কিছু জানতে চাই না..
মা:: তুমি জান সে ""Mentally sick"" এখন সে তুমাকে চিনে.. কিছুক্ষন পর সে তুমাকে চিনবে না...
সিমান্ত:: (কথাটা শুনে সিমান্তের মাথায় আকাশ ভেংগে পড়ল...)
মা:: তুমার অব্যশই অর ব্যাপারে ভাল করে জেনে নেয়া দরকার ছিল...
সিমান্ত:: কিন্তু আন্টি ও আমাকে ভালবাসে...
মা:: তাহলে ভাল..আমি তুমার বাসার মানুষ দের সাথে কথা বলবো.. কিন্তু পরে আমাকে কিছু বইলো না...
(তারপর একদিন কবিতাকে তারা ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেল)
ডাক্তার তাকে অনেক দেখে বলল ""উনার সমস্যা জন্মগত ভাবেই..কিন্তু এখন তার দুনিয়া এক্টাই সিমান্ত..পৃথিবীর যেকোন সিমান্তের জন্য সে এখন মরতে পারে"""
তারপর সিমান্ত কবিতার মাকে জিজ্ঞাস করলো... কে এই সিমান্ত??
কবিতার মা:: কবিতার সাথে রিলেশন ছিল..আমিও মেনে নিয়েছিলাম...কিন্তু ও ওর প্রয়োজন মিটিয়ে পাগলের দোহাই দিয়ে কবিতাকে ছেড়ে চলে যায়...
(তারপর সিমান্ত কবিতাদের বাসায় যায়)
কবিতাকে কবিতার মা তার রুমে নিয়ে যায়... আর সিমান্ত যায় কবিতার রুমে...
রুমটা খুব অগোছালো... রুমের দেয়ালে শুধুই সিমান্ত লিখা....আর পুরো ঘরে এক্টাই বই.. বইয়ের নাম ""সিমান্তের কবিতা""
...
তারপর একদিন পর কবিতা সিমান্তকে ফোন করে বলছে
কবিতা:: আপনি আমাকে কেন ঠকালেন??
সিমান্ত:: কি বলছো কবিতা??
কবিতা:: আপনি আমার সিমান্ত না হয়েও..আমার সাথে সিমান্তের নাটক করলেন..
সিমান্ত:: নাহ বাবু আমিই তুমার সিমান্ত...
কবিতা:: আমার সিমান্তের ছবি আমি পেয়েছি...
সিমান্ত:: অহ তাই না... আচ্ছা ও তো চলে গেছে।। আমি তো তোমাকে ভালবাসি...
কবিতা:: আমি ভালবাসি না
সিমান্ত:: সত্যি??
কবিতা:: হমম.. আর ফোন করবেন না...
সিমান্ত:: (কেদে) আমি তুমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না... মরে যাব
কবিতা:: মরে যান..তাতে আমার কি?? ফোন কেটে দিল...
২দিন তাদের যোগাযোগ হয় না.... সিমান্ত কেদে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে....
তারপর কবিতার মা সিমান্তকে ফোন করে তাদের বাসায় নিয়ে আসে...
তারপর জোর করে সিমান্ত আর কবিতাকে বাহিরে পাঠায়... কবিতা যেতে চায় না...বাধ্য হয়ে যায়....
রাস্তা দিয়ে তারা হাটছে কিন্তু কেউ কারো সাথে কথা বলছে না... সিমান্ত অপলক তাকিয়ে আছে কবিতার দিকে...কিন্তু কবিতার তার রাগি চেহারা একবার ঘুরাচ্ছে না....
হঠাত কবিতা রাস্তার অইপাশে কি যেন দেখল... আর দৌড়ে ছুটে গেল.....
সিমান্ত তার পিছনে পিছনে ছুটতে লাগল....
কবিতা দৌড়ে গিয়ে একটা ছেলে জড়িয়ে ধরে বলল ""এতদিন কোথায় ছিলে?? তুমার #পাগলী তুমাকে অনেক খুজেছে""
ছেলে:: কে আপনি??
কবিতা:: তুমার পাগলী.. কবিতা..
(সিমান্ত পাশে দাঁড়িয়ে এসব দেখছে আর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে)
ছেলে:: আমি আপনাকে চিনি না
কবিতা:: তুমি আমার সিমান্ত
ছেলে:: আমি ইশতিয়াক...
কবিতা:: (তার আর সিমান্তের ছবি বের করে দেখালো) এই দেখ... তুমি আর আমি
ছেলে:: আচ্ছা আচ্ছা... আপনি সেই কবিতা... আসলে অইটা আমার জমজ ভাই সিমান্ত... অর মুখে আপনার অনেক কথা শুনেছি... অর ক্যান্সার হয়েছিল..তাই ও আপনার থেকে চলে এসেছিল...
কবিতা:: এখন কোথায় আমার সিমান্ত
ছেলে:: (কেদে) অই আকাশে...!!
কবিতা::: রাস্তার মাঝেই কেদে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো.. (সিমান্ত ওকে নিয়ে বাসায় এলো)
(তারপর সিমান্ত অর মাকে সব খুলে বলল...)
তারপর একদিন....
কবিতা সিমান্তকে ফোন করেছে....
কবিতা;; আমাকে কেউ ভালবাসলো না...
সিমান্ত:: এই সিমান্ত সারাজীবন কবিতার কাছেই থাকতে চায়..
কবিতা:: সব জেনেও
সিমান্ত:: খুব ভালবাসিতো তাই...
কবিতা:: আমিও আজ থেকে তুমাকেই ভালবাসবো....
সিমান্ত:: একটা কন্ডিশন!!
কবিতা:: কি??
সিমান্ত:: যখন তখন রাস্তার মাঝে কাউকে জড়িয়ে ধরা...কারো চোখ ধরা... এসব আর করা যাবে না....
কবিতা:: হম করবো... কিন্তু শুধু তুমাকে...
সিমান্ত:: আবার ভুলে যাবে না তো??
কবিতা:: ভুলে গেলে মনে আসা অবদি অপেক্ষা কইরো... চলে যেও না

No comments

Powered by Blogger.