Header Ads

ভালোবাসা

সকাল বেলা ম্যাসেঞ্জারের টুন টুন শব্দে ঘুম
ভাংলো।
একরাশ বিরক্তি নিয়ে ফোন হাতে নিলাম।
ফেইসবুকে একটা আইডি থেকে ম্যাসেজ
এসেছে। মেয়েলি আইডি এবং
পরিচিত নয় বলে রিপ্লে দিলাম না।
.
আমি আলামিন। অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্র। ঘুম থেকে
উঠে ব্রাশ হাতে বাথরুমে প্রবেশ করলাম।
নাস্তা করে বাসা থেকে বের হয়ে
ভার্সিটি তে
গেলাম। ক্লাস এ গেলাম
বাট কাওকে পেলাম না।
আমি একটু হাবাগোবা টাইপের,মেয়েদের
সাথে কথা কম বলি।বলতে গেলে মেয়েদের
প্রতি আমার এলার্জি আছে তাই মেয়েদের
সাথে কথা কম বলি।
ক্লাস শেষে বাসাই এসে রুমে বিশ্রাম নিতেছিলাম।
কখন ঘুমিয়ে পরেছি নিজেই জানি না। মায়ের ডাকে
ঘুম ভাঙলো।
পরেরদিন ভার্সিটি তে গেলাম।
একা একটা বেঞ্চে বসেছিলাম। তখন একটা মেয়ে
এসে আমার পাশে বসল।আমার একটু অসস্তি লাগছিল
তাই আরেক বেঞ্চে বসলাম।
মেয়েটা আবার আমার পাসে বসল।মেয়েটি হচ্ছে
আমাদের ভার্সিটির পিন্সিপাল স্যারের এক মাত্র
আদরের কন্যা। তার নাম হচ্ছে তারিন। নাম টা মায়াবি
হলে
কি হবে বিশাল রাগি আর বদ মেজাজি। বাবা ভার্সিটির
প্রিন্সিপাল বলে যা ইচ্ছা তাই করে বেড়াই। মেয়েটা
লেখাপড়াও ভালো।
.
এভাবে কয়েকটা বেঞ্চ চেঞ্জ করার পর ও তারিন
আমার বেঞ্চে বসছিল। আমি রেগে গিয়ে
বললাম,,,,
_আপনার সমস্যা কি? (আমি)
_কই আমার সমস্যা নেই তো।(তারিন)
_তো আমার পাশে বসছেন কেন?
_বেঞ্চ টা তো আপনার একার নই।
_ তো আপনি আমার পাশে কেন বসছেন। আপনি
অন্য বেঞ্চে বসুন।
_না, আমার যেখানে ইচ্ছা আমি সেখানে বসবো।
আপনার কোন সমস্যা.
_হুম। সমস্যা আছে।
_কি সমস্যা?
হঠাৎ স্যার আসার কারনে আর কথা বলা হলো না।
আর মেয়েটি আমার পাশে বসে পড়লো।
ক্লাস এ স্যার ছিল বলে কিছু বলা হলো না।
ক্লাস এ বসে মেয়ে টি আমাকে জালিয়ে যাচ্ছে।
শেষমেশ জালাতন সহ্য করতে না পেরে ক্লাস
থেকে বের হয়ে আসলাম।
.
তারপর বাসাই চলে আসলাম।
ফেইসবুকে ডুকলাম।
সাথে সাথে সকালে যে id থেকে ম্যাসেজ
আসছিল সেই id থেকে আবারও ম্যাসেজ
আসচ্ছে। আইডির নাম হচ্ছে মায়াবী রাজকন্যা।
_hi (মায়াবি রাজকন্যা)
_hlw.( আমি)
_কেমন আছেন?
_জি, ভাল। আপনি?
_হুম ভাল।
_হুম
_কি করছেন এখন।
_বসে আছি। আপনি?
_সুয়ে আছি
_ওহ
_হুম।
.
এভাবে প্রায় আমাদের কথা হতো। তারপর আমরা ভাল
ফ্রেন্ড হয়ে গেলাম। আমাদের বন্ধুত্ব দিন
গেলে বেশি গাড় হতে লাগলো।
আমরা প্রায় ফোনে কথা বলতাম। তারপর একদিন তার
সাথে কথা বলছিলাম ফোনে,,,,
_আচ্ছা তোমার নাম টা
কিন্তু জানা হয়নি (আমি)
_জানা টা কি খুব দরকার ( মেয়েটি)
_হুম।
_আমার নাম তারিন।
_ তারিন।
_হুম।
.
.নাম টা শুনে আমাদের ক্লাস এর বদমেজাজি তারিনের
কথা মনে পরে গেল
.
মনে একটু সন্দেহ হতে লাগলো।
_কোন ক্লাস এ পড়ো?(আমি)
_অনার্স ৩য় বর্ষ।(তারিন)
সন্দেহ এবার আরও বেড়ে গেল। তারপর যখন
জানলাম ওর আর আমার ভার্সিটি আলাদা তখন একটু
সন্দেহ কমে গেল।
আর এইদিকে আমাদের ক্লাস এর বদমেজাজি
মেয়ে তারিন এর জালাই ভার্সিটি তে থিক মতো
যেতে পারছি না।
কিছু দিন পর আমার ফেইসবুক বন্ধু তারিন আমাকে
প্রপোজ করে। আর আমি ও অকে ভালবাসতাম তাই
প্রপোজাল গ্রহণ করি। আমাদের প্রেম খুব ভাল
ভাবে চলতে থাকে।
তারপর একদিন আমরা দেখা করার সিদ্ধান্ত নেই।
একদিন একটা পার্কে দেখা করার জন্য যাই।
কিছুসময় পর আমাদের ভার্সিটির বদমেজাজি তারিন
এসে আমার পাশে বসলো।
তারপর বললো,
_এখানে কি করছো।(তারিন)
_কিছু না । (আমি)
_কারও সাথে দেখা করতে এসেছো।
_অবাক হয়ে বললাম আপনি কিভাবে জানলেন।
_মেয়েরা মুখ দেখে সব বুঝতে পারে
_ওহ।
_তা মেয়েটি কে?
_আপনাকে কেন বলব।
_এমনি।
_দেখুন আপনি এখান থেকে যান। না হলে আমার ও
এসে পড়লে প্রব্লেম হবে।
_তা তোমার প্রেমিকা কাকে কোন দিন
দেখছো।
_না, আজ কে প্রথম দেখা করব।
_ওহ, আমাকে মাফ করে দাও।
_আপানাকে মাফ করব মানে আমি তো কিছুই বুঝতে
পারছি না।
_আসলে আমি যা বলব তা তুমি কিভাবে নিবা আর আমি
তো তোমার সাথে মিথ্যা কথা বলেছি।
_বুঝলাম না।
_আসলে আমিই তোমার সেই তারিন। মায়াবী
রাজকন্যা।
_মানে।
_আমি সেই তারিন। আমি তোমার সাথে মিথ্যা
বলেছিলাম কারন তোমাকে খুব ভালবাসি আর
তোমাকে না হারানোর ভয়ে।
_কেন এমন করলে।
_ভালবাসি বলে।
_আমি ভালবাসি না তোমাকে।
এটা বলে চলে আসলাম। তারিন একা বসে কাদছিল
মনে হলো।কাদুক তাতে আমার কি আমার সাথে ঠক
বাজি করা। এমন না করলে কি হতো।
তার পর বাসাই এসে ফোন অফ আর ফেইসবুক
আইডি ডিএক্টিব করে দিলাম। খুব কষ্ট হচ্ছিল।
.
ইচ্ছা করে ভার্সিটি যাই নি।আজকে
ভার্সিটি তে যাওয়ার সাথে সাথে প্রিন্সিপাল স্যার
ডেকে পাঠালেন।
_স্যার আসবো।(আমি)
_হুম।আসো (স্যার)
_কিছু বলবেন।
_হুম, তোমাকে কথা গুলা বলা ঠিক হবে কিনা জানি না।
কিন্তু কিছু করার নাই। তাই বাধ্য হয়ে বলছি।কিছু মনে
করো না তুমি।
_জি স্যার, বলুন।
_মা মরা মেয়ে আমার, জিবনে যা চেয়েছে তাই
পেয়েছে। খুব আদরের মেয়ে।
কিন্তু,,
_কিন্তু কি স্যার।(কিছু টা চিন্তাগ্রস্ত হয়ে)
_তোমাকে নাকি ও ভালবাসে। তুমি নাকি ওকে
ফিরিয়ে দিয়েছো তাই আজ ২ দিন ধরে কিছুই খাইনি।
_কি
_ হ্যা, বাবা। খুব জেদি মেয়ে যা বলবে তাই করবে।
তুমি কিছু করো বাবা। না হলে আমার মেয়ে মরে
যাবে।(কান্নাজড়িত কণ্ঠে)
_ঠিক আছে আমি দেখছি।.
মেয়েটা আমাকে এতো ভালবাসে তা জানতাম না।
শেষমেশ ওর ভালবাসার কাছে হার মানলাম।
তারপর ওর ফোনে কল দিয়ে ওকে দেখা করার
কথা বললাম। প্রথমে রাজি হলো না কিন্তু পরে রাজি
হলো।
পার্কের একটা বেঞ্চে পাশাপাশি বসে আছি।
দু জনেই চুপ।
_কি বলবে বলো।(অভিমান মিশ্রিত কণ্ঠে)
_আমার উপর রাগ করেছো।
_না।
_অভিমান করেছো তাহলে।
_না
_ভালবাসো আমাকে।
_না।
_ সত্যি
_হুম।
_ওকে তোমার জন্য যে গোলাপ আনছিলাম তা
নিয়ে চলে গেলাম।
যেই উঠতে যাবো তখনি বললো ভালবাসি।
.
আমি সিনেমা স্টাইলে প্রপোজ করে বললাম
ভালবাসি আমার এই পাগলি টা কে খুব ভালবাসি।
তারপর শুরু হলো দুটি মনের পথচলা।
.
.
বিঃদ্রঃ বাস্তবের সাথে কোন মিল নাই শুধুই লেখকের কল্পনার রাজকুমারীকে নিয়ে ভাবনা।

No comments

Powered by Blogger.