Header Ads

মনে পড়ে তোমায়


আমি আর সামিয়া ভার্সিটি তে একই ডিপার্টমেন্ট এ পড়ি। ওর সাথে পরিচয় আমার ভার্সিটি লাইফের শুরু থেকেই।। সামিয়ার বাবা আর আমার বাবা খুব ভালো বন্ধু, এই সূত্রে ভার্সিটি তে ভর্তি হওয়ার পর থেকে আমি সামিয়া দের বাসাতেই থাকি।। খুব মিষ্টি মেয়ে সামিয়া, দেখলে যে কেউই ওর প্রেমে পড়ে যাবে।। মুখটাও খুব মায়াবী, ওকে দেখলেই মায়া লেগে যায়।।
আমি আর সামিয়া একসাথেই ভার্সিটি যেতাম আবার ফিরতাম।। সামিয়া ছিল মেধাবিনী, আর আমি ছিলাম ফাঁকিবাজির ওস্তাদ।। তাই ও আমাকে জোর করে পড়াতো বাসায়, আর আমি নানা বাহানায় ফাঁকি দিতাম,এজন্য ওর কাছে উত্তম মধ্যমও খেতাম খুব।। ভালোই লাগতো ওর শাষণ।।
আমি ডায়েরী লিখতে খুব পছন্দ করতাম, ওতে আমার সব ভালো লাগা খারাপ লাগা সব লিখে রাখতাম।। আমি যখন বাইরে থাকতাম, তখন সামিয়া চুঁপিচুপি আমার রুমে এসে ডায়েরী টা পড়তো।। এটা আমি বুঝতে পারতাম কিন্তু ওকে কিছু বলতাম না।। ও মাঝেমাঝে ডায়েরী টা লুকিয়ে রেখে আমার কাছে থেকে ট্রিট নিতো।। আমিও খুশি হয়ে দিতাম।।
কিছুদিন পর গ্রামের বাড়ি থেকে খবর এলো মা নাকি খুব অসুস্থ, তাই যেতে হবে আমাকে।। আঙ্কেল আন্টির কাছে থেকে অনুমতি নিয়ে বাসায় আসার কথা ভাবছি।। সকালে বের হওয়ার সময় দেখি সামিয়াও রেডি হয়ে আসছে।। জিজ্ঞেস করলাম.........
:- কোথায় যাচ্ছো?? (আমি)
;- বের হচ্ছি একটু।। তুমি কোথায় যাও?? (সামিয়া)
:- মা অসুস্থ, তাই গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি কয়েকদিনের জন্য।।
;- ও আচ্ছা, তাড়াতাড়ি ফিরে এসো কিন্তু।।
:- আচ্ছা।।
এই বলে আমি বের হলাম বাসা থেকে।। টিকেট কাউন্টারে গিয়ে দেখি সামিয়াও বসে আছে।। জানতে চাইলাম এখানে কি করো?? ও বললো আমার সাথে নাকি গ্রামের বাড়ি যাবে।। আমি তো পুরো অবাক।। কাল যখন আঙ্কেলের সাথে বাসায় আসা নিয়ে কথা বলছিলাম, তখন হয়তো ও পিছন থেকে শুনেছে।। তখন ওর আব্বু আম্মুকে রাজী করিয়েছে আমার সাথে যাওয়ার জন্য।।
দুইটা টিকেট নিয়ে বাসে উঠলাম।। সামিয়া বাসের জানালার পাশে বসতে চাইলো, ওর নাকি জানালার পাশে বসে গাছপাকা দেখতে খুব ভালো লাগে, তাই ওকে জানালার পাশেই বসতে দিলাম।। বাস যখন চলতে শুরু করলো, ও তখন খুশি ছিল অনেক।। বাতাসে ওর চুল গুলো আমার মুখের উপর এসে পড়ছিলো।। আমি হাত দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছিলাম।। কিছুক্ষণ পর ওর চোখেমুখে ঘুমের ভাব দেখলাম।। ভাবতে ভাবতেই আমার কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লো।। আমি ওর দিকে তাঁকিয়ে ওর বাচ্চামী গুলার কথা ভাবছিলাম।। যখন রেগে যায়, পাগলামি করে তখন ওকে অন্যরকম দেখায়, আর এখন কত্তো নিষ্পাপ লাগছে।। এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে পৌঁছে গেছি বুঝতেই পারিনি।।
পাশে তাঁকিয়ে দেখি সবাই নেমে গেছে শুধ আমি আর সামিয়া বাদে।। সামিয়া কে জাগিয়ে বাস থেকে নেমে দেখি বাবা আমাদের নিতে এসেছে।। আমার সাথে সামিয়া কে দেখে বাবা তো মহাখুশি।। ওখান থেকে হেঁটে যখন বাসায় পৌঁছালাম, মা আমাদের দেখে খুব খুশি হলো।। আমি মায়ের পায়ে সালাম করে ঘরে ঢুঁকলাম।।
দুপুরের খাওয়া শেষ করে আমি একটু ঘুমিয়ে পড়লাম, আর সামিয়া আমার বাবা মায়ের সাথে গল্প করছিলো।।
কিছুক্ষণ পর ঘুম ঘুম চোখে বুঝতে পারছিলাম চোখ ভিঁজে গেছে।। ঘুম ভেঙে গেলো, কারন টা হলো ওই সামিয়া।। বিকেল হতে না হতেই সে আমার চোখে পানি দিয়ে ঘুম ভাঙিয়ে দিলো।। ওর নাকি এখন গ্রাম ঘুরতে ইচ্ছে করছে।। ব্যাস, কি আর করার, যেতেই হবে। না গেলে আবার মাকে নালিশ দিবে আমার নামে।। তাই বের হলাম ওকে নিয়ে।।
গ্রামের রাস্তাঘাট, গাছপালা, প্রকৃতির সাথে খুব সহজেই মিশে যাচ্ছে ও।। নদীর পাড়ে পানিতে পা দুলিয়ে বাচ্চাদের মত খেলছে।। ওর বাচ্চামী গুলো ভালোই লাগছে।। এমন ভাবেই কয়েকটা দিন কেঁটে গেলো, মাও ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠলো।।
গ্রাম ছেড়ে শহরে আসার কয়েকদিন আগে হঠাৎ করেই সামিয়া অজ্ঞ্যান হয়ে পড়লো।। মা বাবা তো ভয়ে শেষ।। আমি দৌড়ে গেলাম ডাক্তার ডাঁকতে।। ডাক্তার ভালো করে দেখে কিছু ওষুধপত্র দিয়ে গেলো।। কিছুক্ষণ পর সামিয়ার জ্ঞ্যান ফিরে এলো।। জ্ঞ্যান ফিরেই আমাকে জড়িয়ে ধরে কিছু একটা বলতে চাইলো, কিন্তু বলতে না পেরে কানের কাছে শুধু বললো "" বাসায় যাবো""।।
আমিও আর দেরী না করে পরেরদিনই মা বাবার কাছে বিদায় নিয়ে ওকে নিয়ে শহরের পথে ফিরলাম।। বাসের মধ্যে ও আমায় অজ্ঞ্যান হওয়ার কথা টা আঙ্কেল আন্টিকে বলতে নিষেধ করলো।। আমিও ওর কথায় সায় দিলাম।।
বাসায় ফিরে কিছুদিনই পর ও সুস্থ হয়ে উঠলো এবং আমরা আবার একসাথে ভার্সিটি তে যাওয়া শুরু করলাম।।
কয়েকদিন পর আরেকটি দূর্ঘটনা ঘটলো।। ভার্সিটির ক্যাম্পাসেই হঠাৎ করে সামিয়া আবার অজ্ঞ্যান হয়ে পড়লো।। আমার কিছু ফ্রেন্ড দের নিয়ে তৎক্ষণাৎ ওকে হাসপাতালে নিয়ে গেলাম, তারপর সাথেসাথেই আঙ্কেল আন্টিকে খবর দিলাম।। তারা খবর শুনেই ছুটে এলো।।
ডাক্তার সব চেকাপের পর রিপোর্ট হাতে পেলো।। রিপোর্টে যা ছিল তা শোনার জন্য আমরা সত্যিই কেউ প্রস্তুত ছিলাম না।। ডাক্তার বললো ওর নাকি "ব্রেইন টিউমার" আছে।। যেকোন সময় বড়কিছু ঘটে যেতে পারে।। খবরটা শুনে আমরা সবাই খুব ভেঙে পড়ি।। আঙ্কেল আন্টিকে কোনরকম শান্তনা দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দিয়ে আমি সামিয়ার কাছে থেকে গেলাম।। সারারাত চোখের পাতা এক করিনি, ওর মাথার পাশে বসে ছিলাম, ওর জ্ঞ্যান ফিরবে এই আশায়।।
ভোরে ফজরের নামাজ পড়ে সামিয়ার পাশে এসে বসলাম।। কিছুক্ষণ পর ওর জ্ঞ্যান ফিরে এলো।। চোখ খুলে আমায় দেখে ও কেঁদে ফেলছিলো।। আমার চোখেও কয়েকফোঁটা পানি বের হয়েছিল।। আঙ্কেল আন্টিকে ফোনে খবর দিলাম, তারা সঙে সঙে চলে এলো।। তারা এসে আমাকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে বাসায় যেতে বললেন।।
বাসায় এসে বারান্দায় দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ কাঁদলাম।। এই বারান্দাতেই আমার আর সামিয়ার অনেক সুখ-দুঃখ এর স্মৃতি জড়িয়ে আছে।। মন খারাপ থাকলে ও এখানে এসে বসে থাকতো।। আবার এখানেই আমরা অনেক দুষ্টুমি করতাম।। ও না থাকলে হয়তো আর এই বারান্দা টা আর প্রাণবন্ত থাকবেনা, ছাদের উপর বসে একসাথে গল্প করা হবেনা, এসব ভাবতে ভাবতেই চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়লো।। বারান্দা তেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম হয়তো।।
পরেরদিন সন্ধ্যাবেলা ছাদের উপর দাঁড়িয়ে ছিলাম, হঠাৎ করেই সামিয়ার ফোন..............
;- কোথায় আছো?? (সামিয়া)
:- এইতো, ছাদের উপর।। (আমি)
;- আমার থেকে দূরে থাকছো কেনো??
:- কই, নাতো।। (আমতাআমতা করে)
;- আমি জানি।।
:- তোমাকে ওই অবস্থায় আমি দেখতে পারবোনা, তাই যায়না।।
;- খুব দেখতে ইচ্ছে করছে তোমাকে, আসবে একটু??
:- আমি এক্ষুণি আসছি।।
লাইনটা কেঁটে হাসপাতালের দিকে হাঁটা ধরলাম।। ওখানে পৌঁছে ওর কেবিনে ঢুঁকলাম।। আঙ্কেল আন্টি আমাকে দেখে বাইরে বেরিয়ে এলেন, সামিয়া নাকি তাদের আগেই বলেছিলো আমার সাথে নাকি তার কথা আছে।। কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর সামিয়া মুখ খুললো...........
;- তোমার সাথে কথা ছিল একটা।।
:- হুম, বলো।।
;- একটা রিকুয়েস্ট রাখবে??
:- হুম।।
;- যে কয়টা দিন আমি আছি, তুমি আমার পাশেপাশে থেকো।। (কাঁদোকাঁদো হয়ে)
:- চুপ, একদম চুপ।। কিচ্ছু হবেনা তোমার।। তুমি সুস্থ হয়ে উঠবে।।
এই বলে আমিও কাঁদতে কাঁদতে কেবিন থেকে বের হয়ে এলাম।।
সামিয়ার অবস্থা দিন দিন খারাপ হতে লাগলো।। ডাক্তার আমাদের বললেন, এবার নাকি আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখা ছাড়া আর আশা নেই।। যদি ওকে বাসায় নিয়ে যায় তাহলে হয়তো ও একটু ভালো থাকবে।।
আঙ্কেল আন্টি ওখানেই কেঁদে ফেললো, আমি কোনরকমে তাদের শান্তনা দেয়ার চেষ্টা করলাম, বুঝাইলাম।। আমি নিজেই ছিলাম অশান্ত, তবুও তাদের শান্তনা দিয়ে সামিয়া কে নিয়ে বাসায় আসলাম।।
(১৫ দিন পর)............
আমি সামিয়ার পাশে বসেছিলাম, হঠাৎ করে ও আমায় ডাকলো।।
;- আমার যদি কিছু হয়ে যায়, তুমি মুক্তি পেয়ে যাবে, তাই না?? আর জ্বালাবোনা তোমায়, কষ্টও দেবোনা।। (সামিয়া)
ওর এমন কথা শুনে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারিনি।। চোখ থেকে পানি ঝরছিল, তবে ওর কাছে থেকে আড়াল করে ওকে বললাম,,
:- এমন কেন মনে হচ্ছে তোমার??
;- জানিনা, হঠাৎ করে মনে হলো।।
:- যায় হোক, এমন কথা আর মুখে আনবেনা।।
;- হা হা।। মুখে না আনলে কি হবে?? সত্যি তো এটাই হবে।। (একটু হেসে)
আমি আর কিছু বললাম না।। ওর মুখে এমন কথা শুনে প্রথমবার বুকের বামপাশে ব্যাথা অনুভব করলাম।। মনে মনে ভাবলাম, ওর বাকী দিনগুলোতে ছায়ার মত ওর পাশে থাকবো, সারাদিন শুধু ওকেই সময় দেবো।।
ওইদিন থেকেই আমার শুরু হলো ওর পিছনে সময় দেয়া।। খাবার খাওয়ানো, সময়মত ওষুধ দেয়া, এমনকি ওকে ঘুম পাড়ানোর দায়িত্বটাও আমি নিয়েছিলাম।। কেন জানিনা ওর প্রতি খুব মায়া কাজ করতো তখন, প্রতি মুহূর্তে ওর পাশেই থাকতাম।।
ঘুমানোর আগে ও প্রতিদিন আমার কাছে গল্প শুনতে চাইতো।। আমিও ওকে রুপকথার গল্প শুনিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিতাম।। মাঝেমাঝে ওর রুমে এসে দেখে যেতাম ঘুমাচ্ছে কিনা।।
এভাবে ওর সাথে ভালোই কাঁটছিলো।।
হঠাৎ করেই একদিন রাতে ও আমার কাছে মৃত্যুর গল্প শুনতে চাইলো।। আমি শুনে খুব অবাক হয়েছিলাম এবং আমার ভিতরের ভয়গুলা বেশিই কাজ করতে শুরু করলো।।
আমি ওকে বললাম........
:- এই গল্প না শুনলে হয়না??
;- শোনাও না?? খুব ইচ্ছে করছে।।
আমি গল্প শুনিয়ে আমার রুমে আসতে চাইলাম।। ও আমার হাত চেঁপে ধরে বললো.......
;- একটু তোমার বুকে জড়িয়ে রাখবে আমায়?? খুব ভয় করছে আমার।।
আমি কাঁদতে কাঁদতে ওকে বুকে জড়িয়ে রাখলাম অনেকক্ষণ।। ওর কপালে চুমু এঁকে দিলাম।।
ও বললো আজ আমি খুব খুশি।। তুমি এখন ঘুমাতে যাও।।
আমি ওর রুম থেকে বেরিয়ে সোজা ছাদে চলে এলাম।। অনেকক্ষন কান্না করলাম।। রাতের কান্নার সাক্ষী বুঝি চাঁদ আর তাঁরাগুলিই হয়।।
চোখ মুছে নিচে গিয়ে সামিয়া কে একবার দেখে শুয়ে পড়লাম।।
পরেরদিন সকালে একটু দেরীতেই ঘুম ভাঙলো আমার, অনেক রাত পর্যন্ত জেগে ছিলাম তাই হয়তো।।
চিৎকার চেঁচামেচি শুনে আমার ঘুম ভাঙলো।। ভয় পেয়ে গেছিলাম খুব।। বুঝতে আর বাকী রইলো না যে সামিয়ারই কিছু হয়েছে।। দৌড়ে গেলাম সামিয়ার রুমে, গিয়ে দেখি আঙ্কেল কাঁদছে আর আন্টি শোকের আঘাত সইতে না পেরে পাথরমূর্তির মত হয়ে গেছে।। নড়াচড়াও করছেনা, শুধু দাঁড়িয়ে আছে।। সামিয়া আমাদের সবাই কে ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেছে।। এমন দৃশ্য দেখে আমি আর ঠিক থাকতে পারলাম না, চোখ থেকে অঝরে পানি ঝরছিলো।।
কে জানতো কালকের গল্প শোনাটাই ওর জীবনের শেষ গল্প শোনা হবে।। কালকের দেখাটাই শেষ দেখা হবে।।
সামিয়ার পাশে বসে কাঁদছিলাম আর ওর কথাগুলো মনে করছিলাম।।
ডাক্তার ডেকে আন্টির চিকিৎসা করা হলো। আন্টি সুস্থ হওয়ার পর ওকে জানাযার জন্য নিয়ে যাওয়া হলো।।
ওকে কবরে রেখে যখন ফিরছিলাম, তখন মনে হলো পিছন থেকে কে যেন ডাকছে আমায়।। পিছনে ফিরে কাউকে পেলাম না।। কবরের দিকে তাঁকিয়ে একবার দীর্ঘশ্বাস ফেলে বাসায় ফিরলাম।।
বাসায় আসার পর আন্টিকে আমাকে একটা চিঠি দিলো।। ওটা নাকি সামিয়া আমার জন্য লিখে গিয়েছিলো।।
চিঠিটা পড়ে আমার চোখের পানি গড়িয়ে পড়লো।। চিঠিতে লেখা ছিল......
"" হয়তো চিঠি পড়ে খুব রাগ হবে আমার উপর, তবুও এটা আমায় করতেই হতো।। খুব ভালোবাসতাম আমি তোমাকে,, হয়তো তুমিও আমাকে ভালোবাসতে এটা বুঝেছিলাম।। তোমার কাছে প্রকাশ করিনি, কারন আমি চাইনি আমার প্রতি তোমার মায়া টা আরো অনেক বেড়ে যাক, এতে তোমারই কষ্ট হতো।। খুব ভালো থেকো তুমি, নিজের খেয়াল রেখো""
চোখের পানিতে চিঠিটা ভিঁজে গেছিলো।। খুব কাঁদতে ইচ্ছে করছিলো তখন।।
ওর স্মৃতিগুলো খুব মনে পড়ছিলো।। ওর সাথে আর কখনো বারান্দায় দাঁড়িয়ে একসাথে কথা বলা হবেনা, জোর করে পড়তেও বসাবেনা আমাকে, গ্রামের বাড়িতে পুকুরে পা দুঁলিয়ে আর কখনো খেলবেনা ও, আমি ঘুমিয়ে গেলে পাশের বই তুলে টেবিলেও রাখবেনা।। হারিয়ে গেছে ও, আর কখনো ফিরবেনা।।
আমি প্রতিদিন ওর কবরের পাশে গিয়ে কাঁদতাম।।
এমন মৃত্যু গুলো সত্যিই খুব ভয়ঙ্কর হয়।। দুইদিন আগে যে মেয়েটা হাসতো খেলতো, সেই মেয়েটার জন্যই আজ সবাই কাঁদবে।। এমন হঠাৎ মৃত্যুগুলো সত্যিই খুব কষ্টদায়ক।। সহজে মেনে নেয়া যায়না এগুলো।।
আচ্ছা মানুষ মরে গেলে কি তার প্রিয় মানুষের বলতে চাওয়া কথা গুলো শুনতে পাই?? প্রিয় মানুষের আর্তনাদ গুলো বুঝতে পারে??
যদি শুনতে পেতো, তাহলে আমিও সামিয়াকে বলতে চাই........
""আমিও খুব ভালোবাসি তোমায়।। "'
কিন্তু হায়!, মানুষ মরে গেলে তার খুব কাছের মানুষের কথাও শুনতে পারেনা, কোন অনুভূতিও বুঝতে পারেনা।।
শুধু তার আশেপাশের মানুষগুলিকে কাঁদিয়েই চলে যায়।।
ভালো থাকুক সামিয়ার মত অসংখ্য না ফেরার দেশের যাত্রীরা।।
.
.
লেখা : Ahmed Jubaier

No comments

Powered by Blogger.